ডেইলি চিরন্তনঃ মেধাতালিকায় পঞ্চম স্থান অধিকার করেও ভূমিহীন হওয়ার কারণে চাকরি পাচ্ছেন না আসপিয়া ইসলাম কাজল।
বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার থেকে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে।
পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে বরিশাল জেলায় শরীরিক, লিখিত ও মৌখিকসহ সাত ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন হিজলা উপজেলার বাসিন্দা আসপিয়া ইসলাম কাজল।
কিন্তু বরিশাল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়ায় চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নিয়োগ থেকে ছিটকে পড়েন তিনি।
হতাশায় বুধবার বরিশাল পুলিশ লাইন্সের গেটে দীর্ঘক্ষণ বসেছিলেন আসপিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল সেই ছবি।
বিষয়টি নিয়ে যখন সোচ্চার নেটিজেনরা, তখন আসপিয়ার স্থায়ী ঠিকানা গড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার।
মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে চলমান আশ্রয়ণ প্রকল্প ২-এর আওতায় আসপিয়ার পরিবারকে ঘর ও জমি দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
যমুনা টিভিকে টেলিফোন যোগাযোগে বরিশালের জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ভূমিহীন এবং গৃহহীনদের ঘর উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই প্রকল্পে আসপিয়া নিজের একটি ঘর প্রাপ্য। আগামী প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ হবে শিগগিরই। ওই ধাপে আমরা একটি ঘর তাকে (আসপিয়া) উপহার দেব।’
এমনটি হলে নিয়ম মেনে পুলিশে চাকরি পেতে আর বাধা থাকবে না আসপিয়ার।
এ বিষয়ে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বকুল চন্দ্র কবিরাজ বলেন, আসপিয়ার বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যার আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভূমিহীন এই পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। আমি সকালে আসপিয়াকে কার্যালয়ে ডেকে বিস্তারিত জেনেছি।
তিনি আরও বলেন, বিকালে আসপিয়াকে নিয়ে খাসজমি দেখতে যাব। জমি পছন্দ হলেই দ্রুত হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
আসপিয়ার চাকরি হোক চান পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামানও। কিন্তু নিয়মে পা বন্দি তার।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে ‘মানবতা ও বিধিবিধান’ শিরোনামে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে ডিআইজি আক্তারুজ্জামান লেখেন, ‘আসপিয়ার পক্ষে জোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে যারা সরকারি চাকরির বিধান জানেন, তারা আসপিয়ার পক্ষ নিতে পারছেন না। মূলত আসপিয়া বরিশালের স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণ করতে পারছেন না। সে সরল ভুলে ভোলার পরিবর্তে বরিশালে চাকরি প্রার্থী হয়েছে। আসপিয়াকে সান্ত্বনা দিই। বিধি মোতাবেক পুলিশ কাজ করবে। আমি বিধি মানি, কিন্তু মেয়েটির প্রতি আমার কষ্টবোধ থেকেই যায়। যারা তাকে নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল করছে, তাদের দোয়ায়, কাজে যদি মেয়েটি চাকরি পায়, তাতে আমি অনেক খুশি হব। আর এর জন্য আমাকে যে মানসিক চাপ নিতে হচ্ছে তা সাহসে পরিণত হবে। দোয়া করি, মেয়েটির ভাগ্যে সোনার হরিণটি (চাকরি) যেন ধরা দেয়।
Leave a Reply