ডেইলি চিরন্তনঃ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে শোভাযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মাজার-দরগাহে লুটপাট ও ভাঙচুরের মতো গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। এ সময় মাজার ও বিভিন্ন ধর্মের উপাসনালয় রক্ষায় নিরাপত্তা জোরদারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়।
আজ সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রমনা এলাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে তা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়ার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ শোভাযাত্রায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নবীপ্রেমিক জনতার বিভিন্ন ইসলামিক হামদ, নাত ও শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে রাজপথ। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের হাতে কলেমা তৈয়াবা, জাতীয় পতাকা, আঞ্জুমানের পতাকা এবং নানা ধরনের বাণী ও শ্লোগান লিখিত ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা যায়।
র্যালি পূর্ব সমাবেশে মাইজভান্ডার দরবার শরীফের ইমাম ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল-হাসানী বলেন, পৃথিবী থেকে অন্ধকার অনাচার ব্যভিচারসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর করতে আলোর মশাল নিয়ে শুভাগমন করেন বিশ্ব মানবতার ত্রাণকর্তা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দ.)। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে নারী জাতির কোনো মর্যাদা ও অধিকারই ছিল না।
মহানবী (সা.) নারী জাতিকে মর্যাদা ও শ্রদ্ধার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনিই পৃথিবীতে সাম্য, মৈত্রী, সুবিচার ও সমতাভিত্তিক মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তোলেন। তাই মহানবীর (সা.) এই দুনিয়ায় শুভাগমন পুরো মানবজাতির জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ নেয়ামত ও অনুগ্রহ।
তিনি আরো বলেন, আমরা সুন্নি সুফিবাদী জনতা নবীপ্রেমিক উদার মুসলিম।
আমরা উগ্রতা ও হটকারীতায় বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি, ইসলাম কায়েম হয়েছে উদারতায়। সুফি সংস্কৃতি ও মাজারগুলো হলো ইসলামের গৌরব ও মর্যাদার প্রতীক। তাই যারা অলি-আউলিয়ার মাজার, খানকাহ, দরগাহ শরীফে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করছেন, আপনারা এই গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকুন। সুন্নি সুফিবাদী জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না।
মাজার ও বিভিন্ন ধর্মের উপাসনালয় রক্ষার নিরাপত্তা জোরদারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, মাজার ভেঙে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, দুয়ার ও মন্দিরে হামলা করে ধর্মকে অবমাননা করা হচ্ছে। এতে বিশ্ববাসীর কাছে আমরা নিজেরাই নিজেদের ছোট করছি। আমি সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, যার যার মতকে প্রাধান্য দিন। কারো ভিন্ন মতের ওপর জুলুম বা জোর জবরদস্তি থেকে বিরত থাকুন।
সমাবেশে মুফতি মাওলানা মাকসুদুর রহমানের সঞ্চালনায় অতিথি ও আলোচক ছিলেন শাহ্জাদা সৈয়দ মাহবুব-এ-মইনুদ্দীন, শাহ্জাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন, গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান খান মিয়াজি, অধ্যাপক ড. শহীদ মনজু, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) মহাসচিব অ্যাড আব্দুল আজিজ সরকারসহ ওলামা-মাশায়েখ, আঞ্জুমান ও মইনিয়া যুব ফোরামের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
Leave a Reply