ডেইলি চিরন্তনঃ রাজ্য পুলিশের অনুমতি ছাড়া কলকাতায় অবস্থান করায় সিলেট আওয়ামী লীগের চার নেতাকে আটক করেছে ভারতের পুলিশ।
জানা গেছে, সিলেট জেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তিসহ চারজন পালিয়ে গিয়ে অবস্থান করছিলেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরে। লাইমক্রা থানায় তারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পুলিশের অনুমতিক্রমে ছিলেন একটি হোটেলে। কিন্তু হঠাৎ উধাও হয়ে যান চারজন। খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসেন মেঘালয়ের প্রশাসন। তাদের সন্দেহ জাগে, অনুমতি ছাড়া তারা কী বাংলাদেশেই ফিরে এসেছে! দেখা গেলো রাজ্য পুলিশের অনুমতি ছাড়া অন্য রাজ্যে চলে গেছে তারা। দেশটির আইন অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে তাদের আটক করা হয়।
যদিও দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ধর্ষণের অভিযোগে আটক করা হয়েছে বলে সংবাদ প্রচার করছে। কিন্তু সূত্র বলছে ভিন্ন কথা। সূত্রের দাবি, ধর্ষণ নয়, রাজ্য পুলিশের অনুমতি ছাড়া অন্য রাজ্যে যাওয়ার অপরাধের কারণেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, রোববার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা থেকে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তিসহ চার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে মেঘালয় রাজ্যের শিলং পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- সিলেট মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি রিপন ও সদস্য জুয়েল।
গত রোববার দুপুরের দিকে কলকাতার নিউ টাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে সেখানকার পুলিশের সহায়তায় তাদেরকে আটক করে শিলং পুলিশ। এরপর রোববার রাতেই তাদেরকে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে আনা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, কলকাতার এই ফ্ল্যাট থেকে নাসির, মুক্তি, রিপন ও জুয়েল ছাড়াও সুনামগঞ্জের এক ইউপি চেয়ারম্যানকেও গ্রেপ্তার করেছিল শিলং পুলিশ। পরে সেখানে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গির কবির নানক ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল তাদেরকে ছাড়াতে তদবির শুরু করেন। এরপর মামলার এজহারে নাম না থাকায় সেই ইউপি চেয়ারম্যানকে ছেড়ে দেয়া হয়। অন্যদের মুক্ত করতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন নানক ও নাদেল।
কলকাতায় বসবাসরত সিলেট আওয়ামী লীগের একাধিক দলীয় নেতা এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মোস্তাক আহমেদ পলাশ হোয়াটসঅ্যাপে বলেন, নাসির উদ্দিন খান একজন ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি।
সিলেটের নাম প্রকাশ্য অনিচ্ছুক এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী (যার সঙ্গে মেঘালয় এবং আসাম রাজ্য ব্যবসায়ীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে) শিলং পুলিশ ও সেখানকার ব্যবসায়ীদের মাধ্যম দিয়ে জানান, নাসির উদ্দিনসহ চারজন হাসিনা সরকারের পতনের পর মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে ছিলেন। কিন্তু তাদের কাছে বৈধ কোনো ভিসা ছিল না। তিনি বলেন, তারা ভিসা ছাড়াই শিলংয়ে গিয়েছিলেন। পরে পতিত সরকারের ঘনিষ্ঠজন এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার কারণে বাংলাদেশে তাদের নিরাপত্তা নেই- এই তথ্য জানিয়ে বসবাসের জন্য শিলংয়ের লাইমক্রা থানায় আবেদন করেন। নিয়মানুযায়ী সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে সেখানে একটি হোটেলে অবস্থান করার অনুমতি দেন। বিগত প্রায় সাড়ে তিনমাস ধরে তারা ওই হোটেলেই ছিলেন। কিন্তু শিলংয়ে বর্তমানে প্রচ- শীতের কারণে তারা চলে যান পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরে। অবস্থান করছিলেন নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটে। পরবর্তীতে যে কোনোভাবেই হোক এই তথ্য পেয়ে যায় শিলং পুলিশ।
বিস্তারিত জানতে সংবাদ প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন ডাউকি থানার অফিসার ইনচার্জ এরসঙ্গে। কিন্তু তাকে না পেয়ে কথা হয় সেকেন্ড অফিসার জে কে এম এরসঙ্গে। তিনি বলেন, তারা আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো দলের কিনা আমি জানি না। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমতি ছাড়া বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।
Leave a Reply