রফিকুল ইসলাম কামাল, শনিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৫ :: সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়ে জটিলতা দূর হচ্ছে না সহসাই। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেলে যাওয়ার পর সিসিকের নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী স্থানীয় মন্ত্রণালয় কর্তৃক সাময়িক বরখাস্ত হন। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের পদ নিয়ে রশি টানাটানি চলছে প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও প্যানেল মেয়র-২ এডভোকেট সালেহ আহমদ চৌধুরীর মধ্যে। বিষয়টি এখনো আদালতে বিবেচনাধীন। এমতাবস্থায় প্যানেল মেয়র-৩ এডভোকেট রোকসানা বেগম বলছেন, সিসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব এখন তারই পালন করার কথা। সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯ এর ২০ ধারা অনুযায়ী তাকে এই দায়িত্ব না দিয়ে সংশ্লিষ্টরা ‘বঞ্চিত’ করছেন বলে অভিযোগ রোকসানার।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর কিবরিয়া হত্যা মামলায় হবিগঞ্জের আদালতে আত্মসমর্পণের পর আরিফুল হক চৌধুরীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এরপর চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি আরিফকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ওইদিনই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব সরোজ কুমার নাথ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সিসিকের প্যানেল মেয়র-১ তথা রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এ আদেশের বিরোধীতা করে প্যানেল মেয়র-২ সালেহ আহমদ চৌধুরী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। গত ২০ জানুয়ারি বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও মোস্তফা জামান ইসলাম স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশের উপর স্থিতাবস্থা (স্ট্যাটাসকো) জারি করেন। এরপর থেকে সিসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের বিষয়টি ঝুলে আছে। বর্তমানে সিসিক রয়েছে মেয়রবিহীন।
এরকম অবস্থায় প্যানেল মেয়র-৩ এডভোকেট রোকসানা বেগম বলছেন, আইন অনুযায়ী বর্তমানে সিসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালনের অধিকার তার। সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯ এর ২০ ধারা অনুযায়ী পদত্যাগ, অপসারণ বা মৃত্যুজনিত কারণে মেয়রের পদ শূন্য হলে জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে প্যানেলের সদস্যরা মেয়রের সকল দায়িত্ব পালন করবেন।
এডভোকেট রোকসানা বলছেন, যেহেতু নির্বাচিত মেয়রের পদ শূন্য এবং প্যানেল মেয়র-১ ও প্যানেল মেয়র-২ এর ভারপ্রাপ্ত মেয়র হওয়া নিয়ে আদালতের স্থিতিবস্থা রয়েছে, সেহেতু ‘ক্রমানুসারে’ তিনিই (রোকসানা) এক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার অধিকারী। কিন্তু মন্ত্রণালয় তাকে এ দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়নি। এমনকি তিনি গত ২২ জানুয়ারি দায়িত্ব প্রদান প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলেও কোনো জবাব পাননি।
রোকসানা বেগম বলেন, ‘আইন ও বিধানকে উপেক্ষা করে ন্যায্য অধিকার থেকে আমাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি নারী হওয়ায় নাকি রাজনৈতিকভাবে ভিন্ন আদর্শ লালন করায় (রোকসানা কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সদস্য ও সিলেট জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা) আমাকে নীতিবহির্ভূতভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে, তা আমি জানি না।
Leave a Reply