শ্রুতি হাসন বলিউডে পা রাখার পর ৬ বছর সময় পেরিয়ে গেছে। এরমধ্যে তাকে মাত্র ৪টি হিন্দি সিনেমায় নায়িকারূপে দেখা গেছে। দীর্ঘ ৬ বছর সময়ে মাত্র ৪টি ছবিতে শ্রুতির অভিনয়—তার পিছিয়ে থাকার প্রমাণ দেয়। যদিও দক্ষিণী-তামিল-তেলেগু সিনেমায় তার ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। বলিউডে ব্যস্ত নায়িকা হওয়ার মতো সব যোগ্যতা রয়েছে তার। তবে ইদানীং বলিউডে নিজের ব্যস্ততা বাড়াতে সচেষ্ট হয়েছেন তিনি। এরমধ্যেই চার-পাঁচটি নতুন সিনেমায় কাজ করছেন শ্রুতি। তারমধ্যে একটি ছবি মুক্তি পাচ্ছে এ সপ্তাহে। যেখানে অক্ষয় কুমারের নায়িকারূপে তাকে দ১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘শোলে’ ছবির দুর্ধর্ষ ডাকাত গব্বর সিংকে দর্শক সহজে ভুলতে পারবে না। গব্বর চরিত্রটি হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে অনন্তকাল। গব্বর নামের চরিত্রটি আবার দর্শকদের সামনে ফিরে আসছে। আগের ডাকাত গব্বর সিং সেজেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা আমজাদ খান। এবার গব্বর হয়ে আসছেন বলিউডের খিলাড়ি হিরো অক্ষয় কুমার। ‘গব্বর ইজ ব্যাক’ ছবিতে তাকে একজন দুর্ধর্ষ মানুষ হিসেবে দেখা গেলেও এখানে তিনি মন্দ মানুষ নন, নায়ক। তামিল ছবি ‘রামানা’র হিন্দি রিমেক ‘গব্বর ইজ ব্যাক’-এ অক্ষয়ের নায়িকা হয়েছেন শ্রুতি হাসন। এখানে তার অভিনীত চরিত্রটির নামও শ্রুতি। হিন্দি সিনেমার বিখ্যাত ভিলেনের নামের কারণে ‘গব্বর ইজ ব্যাক’ ছবিটি নিয়ে দর্শকদের মধ্যে বাড়িত কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। এ ছবিতে নায়ক অক্ষয় কুমারের বিপরীতে শ্রুতির অভিনয়ের সুযোগ বলিউডে তার ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সন্দেহ নেই। নায়কপ্রধান এ ছবিতে শ্রুতির হয়তো তেমন করার কিছুই নেই, তারপরেও জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠিত তারকা অভিনেতার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয়ের সুযোগ যথাসম্ভব কাজে লাগিয়েছেন। এর আগে শ্রুতিকে বলিউডের চারটি ছবিতে ইমরান খান, ইমরান হাশমি, গিরিশ কুমার, অর্জুন রামপালের সঙ্গে দেখা গেলেও কোনোভাবেই সাড়া জাগাতে পারেননি। দক্ষিণী সিনেমার বিখ্যাত অভিনেতা কমল হাসনের কন্যা হওয়ার সুবাদে তাকে নিয়ে সবার যে ধরনের উচ্চাশা ছিল তা পূরণ করতে পারেননি শ্রুতি। প্রথম একজন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে পথচলা শুরু করলেও ধীরে ধীরে অভিনয়ে নিজেকে জড়িয়েছেন তিনি। কণ্ঠশিল্পী হিসেবে নিজেকে যথেষ্ট সম্ভাবনাময় প্রমাণ করলেও এখন দক্ষিণী সিনেমায় শ্রুতির অভিনয় ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। বলিউডে তার অভিনীত কোনো একটি ছবিও ব্যবসায়িক সফলতার চমক দেখাতে না পারলেও তার বেশ অনেকগুলো তামিল-তেলেগু ছবি রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা করেছে। যে কারণে এখন দক্ষিণে শ্রুতির চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী বলা যায়। চলতি বছরেই তার বেশ কয়েকটি দক্ষিণী সিনেমা মুক্তি পাবে। প্রতিটিতে তামিল-তেলেগু সিনেমার সুপারস্টারদের নায়িকা চরিত্রে দেখা যাবে তাকে।
বলিউডে এর আগে যে ছবিগুলোতে অভিনয় করেছেন শ্রুতি সেগুলো বাজেট, প্রচারণা, ব্যানার, নির্মিতি প্রভৃতির কারণে তেমনভাবে সাড়া জাগাতে পারেনি। এ সপ্তাহের ছবি ‘গব্বর ইজ ব্যাক’ একটি সুপারহিট তামিল ছবির রিমেক। অ্যাকশন থ্রিলার ধাঁচের এ ছবির প্রযোজক সঞ্জয় লীলা বানসালির মতো একজন প্রখ্যাত চিত্রনির্মাতা। এ ছবিতে দুর্ধর্ষ অ্যাকশন হিরোরূপে অক্ষয়কে দেখা যাবে। এসব কারণে ‘গব্বর ইজ ব্যাক’ ছবির সুপারহিট হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যদি ছবিটি প্রত্যাশিত সাফল্য পেয়ে যায় বলিউডে শ্রুতির অবস্থান অনেকটাই উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে। এ ছবিটি নিয়ে শ্রুতি নিজেও অনেক আশায় বুক বেঁধেছেন। ‘এ ছবিতে আমার ভূমিকা এতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, তারপরেও অক্ষয় কুমারের নায়িকা হতে পেরেছি। এটা আমার জন্য অনেক কিছু। এ ছবির বিরাট সাফল্য আমার ক্যারিয়ারে অনেক কিছু যোগ করতে পারে, আমি তার অপেক্ষা করছি,’ বলেন শ্রুতি। এ বছরেই মুক্তি পাবে তার অভিনীত আরেকটি উল্লেখযোগ্য ছবি ‘ওয়েলকাম ব্যাক’। কমেডি ধাঁচের ছবিটিতে জন আব্রাহাম, অনিল কাপুর, নানা পাটেকর, নাসিরউদ্দীন শাহদের মতো জাঁদরেল তারকা অভিনেতাদের সঙ্গে তাকে দেখা যাবে। ‘ইয়ারা’ ছবিতে শ্রুতি অভিনয় করছেন ইরফান খানের বিপরীতে। ‘রকি হ্যান্ডসাম’ ছবিতে তার নায়ক জন আব্রাহাম। সবমিলিয়ে এ বছরটি শ্রুতির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ‘বলিউডে আমি পা রেখেছিলাম অনেকটা খেয়ালের বশে, তেমন সিরিয়াস ছিলাম না, এখন আমি দক্ষিণের পাশাপাশি বলিউডেও ক্যারিয়ার গড়তে অনেকটাই সিরিয়াস, এখন যে ছবিগুলো করছি প্রতিটিই নানা কারণে উল্লেখযোগ্য। দেখা যাক, আমার ভাগ্যে কী লেখা আছে,’ শ্রুতি বলেন। বলিউডে ৬ বছরের ক্যারিয়ারে দু’দফায় দুটি করে ছবি করার পর দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে ‘রামাইয়া ভাস্তাভাইয়া’ এবং ‘ডি ডে’ ছবি দুটিতে অভিনয়ের পর তাকে দেখা যায়নি নতুন কোনো হিন্দি সিনেমায়। মাঝখানে এক বছর আড়ালে থাকার পর আবার ফিরছেন তিনি বলিউডের সিনেমায়। দেখা যাক, তার এবারের প্রত্যাবর্তন কতটা সাফল্যময় হয়।
Leave a Reply