এই তো সেদিন ঢাকার মিডিয়ায় নতুন এক নাদিয়ার আবির্ভাব হয়। লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে তাকে সবাই চেনেন। এখানে সেরার মুকুট জয় করেন নাদিয়া। প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েই বসে থাকেননি তিনি। একজন প্রতিষ্ঠিত মডেল ও অভিনেত্রী হওয়ার প্রত্যয়ে অবিরাম কাজ করে চলেছেন। এরই মধ্যে বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করে ব্যাপক সাড়াও জাগিয়েছেন এ অভিনেত্রী। সমপ্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতার লাবণ্য চরিত্রে অভিনয় করে দর্শককে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নাদিয়া। এর পাশাপাশি একাধিক খণ্ড নাটকের কাজ নিয়ে এখন দারুণ ব্যস্ততা যাচ্ছে তার। আসছে ঈদ উপলক্ষে সমপ্রতি জনপ্রিয় অভিনেতা ও নির্মাতা সালাহউদ্দিন লাভলুর পরিচালনায় একটি নাটকের শুটিং শেষ করেছেন নাদিয়া। ‘আজকের বিশেষ অতিথি’ নামের নাটকটিতে অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অসাধারণ একটি গল্প নিয়ে নির্মাণ হয়েছে এটি। অনেক হাস্যরসের পাশাপাশি নাটকীয় সব ঘটনা এতে দেখতে পাবেন দর্শক। এ নাটকে অভিনয় করার সুবাদে লাভলু ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা হলো। তিনি মানুষ হিসেবে যেমন ভাল, তেমনি নির্মাতা হিসেবেও অসাধারণ। কাজের ক্ষেত্রেও অনেক সহযোগিতাপরায়ণ। এ নাটকের পাশাপাশি গতকাল মীর সাব্বিরের পরিচালনায় একটি নাটকের শুটিং শেষ করেছেন নাদিয়া। পাশাপাশি বর্তমানে প্রচার চলতি ‘অপূর্বা’ ধারাবাহিকেও নিয়মিত অভিনয় করছেন তিনি। নাটকের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনেও সমানতালে ব্যস্ত এ মডেল-অভিনেত্রী। সমপ্রতি ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী, প্রাণ মি. নুডুলস ও জুসি’ বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন নাদিয়া। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিজ্ঞাপনগুলোর কাজ বেশ ভাল হয়েছে। দর্শকের কাছ থেকেও বেশ সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি এমন ভাল কিছু কাজ পেলে নিয়মিত করে যাবো। আর দর্শকের কাছাকাছি থাকবো। মিডিয়ায় পরিচিতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নাম নিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছে নাদিয়াকে। নামের প্রথম অংশ তো জনপ্রিয় অভিনেত্রী নাদিয়ার নামের সঙ্গে মিল। আর শেষের অংশটা আরেক লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার বিদ্যা সিনহা মিমের সঙ্গে। এ নিয়ে কি করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না। পরে সিদ্ধান্ত নিলেন পুরো নাম নাদিয়া আফরিন মিম হলেও মিডিয়ায় নাদিয়া আফরিন হিসেবেই থাকবেন। অবশ্য তারকা খ্যাতির সঙ্গে সঙ্গে মিম নামটা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে তার। ব্যবসায়ী বাবা ও গৃহিণী মায়ের তিন কন্যার মধ্যে নাদিয়া মেজো। শৈশব থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছা ছিল। তাই লাক্সের এ প্রতিযোগিতাটি নিয়মিত দেখতেন। এখান থেকেই স্বপ্নের বীজ বুনতে শুরু করেছেন। অবশেষে স্বপ্ন সত্যি হলো তার। জয়ের মুকুট তারই মাথায়। পরিকল্পনা আর পরিশ্রম দুই মিলে যখন সুযোগটি হাতের মুঠোয় তখন কেমন ছিল তার অনুভূতি? সেই অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে নাদিয়া বলেন, লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টারের মুকুট পরতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত ও উচ্ছ্বসিত। অনেক ভাল লাগছে। এ ভাল লাগাটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। নাদিয়া দেশসেরা মডেল আর অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু বাবার স্বপ্ন ছিল মেয়ে লেখাপড়া করে ভাল একটি জায়গায় যাবে। তা হলে কি বাবার স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে। এ প্রসঙ্গে নাদিয়া আফরিন বলেন, আমি কিন্তু পড়াশোনার কথা ভুলে যাইনি। তবে গণমাধ্যমে একটি ভুল তথ্য এসেছে। আমি নাকি এইচএসসি পরীক্ষা দিইনি। গত বছর আমি এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছি আর গোল্ডেন এ-প্লাস পেয়েছি। অভিনয়ের পাশাপাশি পড়াশোনাও শেষ করতে চাই। সেই লক্ষ্যেই চলতি বছরই আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে বিবিএ-তে ভর্তি হয়েছি। কথা প্রসঙ্গে জানা যায়, মূলত নিজের ইচ্ছার সঙ্গে মায়ের ইচ্ছার যোগসূত্র ছিল। তাই পরিবারের সমর্থন পেয়েছেন তিনি। মায়ের ইচ্ছা ছিল, তিনি যা পারেননি তা যেন তার মেয়ে করতে পারেন। মেয়ে যেন মিডিয়ায় তারকা খ্যাতি অর্জন করতে পারে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মা-বাবার অনুপ্রেরণায় আমি এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। মায়ের ইচ্ছাই বেশি ছিল। পাশাপাশি ছিল আব্বুর সাপোর্ট। প্রতিযোগিতার সব সদস্যই আমাকে সাহায্য করেছেন। তাদের সাহায্য না পেলে আমি এতদূর আসতে পারতাম না
Leave a Reply