মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিয়ের নূন্যতম বয়স আঠারোই থাকবে। তিনি বলেন, বাল্য বিবাহ নারী উন্নয়নের অন্তরায়। সরকার তাই বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে অঙ্গীকারবদ্ধ।
তিনি আজ রাজধানীর গুলশানে স্পেক্টা কনভেনশন সেন্টারে বিবাহিত শিশুদের শিশু অধিকার রক্ষা বিষয়ক একটি প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার বিষয়ক সচিব এলা দে ভুগড এর সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রধান সুলতানা কামাল, স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুুুরুল ইসলাম, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার মারটিন ভান হুগস্ট্রাটেন, রেড অরেঞ্জের মিডিয়া এ্যান্ড কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অর্ণব চক্রবর্তী প্রমুখ।
মেহের আফরোজ বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। কিন্তু বাল্য বিবাহ এ ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়। তিনি বলেন, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে একটি ভাল আইন বিদ্যামান থাকলেও বাংলাদেশে ৬৪ শতাংশ মেয়ের ১৮ বৎসর হওয়ার আগে বিয়ে হয়ে যায়। যা জাতীয় জীবনের একটি বড় সমস্যা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারীর যথাযথ উন্নয়ন না হলে জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, তাই জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নিচে বিবাহের সংখ্যা শূন্যে এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে ১৮ বৎসরের নিচে বিয়ের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার বাল্যবিবাহের কারণসমূহ চিহ্নিত করেছে এবং ব্যাপক কর্মপরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে।
প্রতিমন্ত্রী চুমকি বলেন, দারিদ্রতা বাল্য বিবাহের অন্যতম কারণ। তাছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা, অশিক্ষা এবং গতানুগতিক মানসিকতা বাল্য বিবাহের জন্য দায়ী।
তিনি বলেন, সরকার এই প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে কাজ করছে। সফলও হচ্ছে। ইতোমধ্যে দারিদ্রতা ৩১ ভাগ নামিয়ে আনা হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে ছেলে ও মেয়ের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় সমান। এরই ফলস্বরূপ বাল্য বিবাহের প্রবণতা কমছে। শতভাগ সফল হওয়ার জন্য প্রতিমন্ত্রী এনজিও এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকল চেষ্টার পরেও বর্তমানে বাংলাদেশে শিশুর বিয়ে হচ্ছে- এটাও বাস্তব। তাই যে শিশুদের ইতোমধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে তাদের স্বাস্থ্য পুষ্টি ও প্রজনন স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে নেদারল্যান্ডের অর্থায়নে ইমেজ (ইনিশিয়েটিভস ফর ম্যারিড অ্যাডোলোসেন্ট গার্লস এম্পাওয়ারমেন্ট) প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
ইমেজ নেদারল্যান্ডসের অর্থায়নে, যৌথভাবে টেরে ডেস হোমস নেদারল্যান্ডস ও রেড অরেঞ্জের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী-এ তিন জেলায় মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করবে টেরে ডেস হোমস লোসান, এসকেএস ফাউন্ডেশন এবং পল্লীশ্রী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় স্বাস্থ্য সচিব বলেন, শিশু স্বাস্থ্য ও মাতৃ স্বস্থ্যের উন্নয়নে সরকার প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। সরকার প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা বিশেষ করে নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি গ্রামে কমিউনিটি হাসপাতাল স্থাপন করেছে।
Leave a Reply