সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :::
ডেইলি চিরন্তন অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য সিলেটসহ দেশ বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা ইমেইলে যোগাযোগ করুন
শিরোনাম ::
শিশু মুনতাহাকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়,গ্রেপ্তার ৪ রেকর্ড গড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন জো রোগান আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ২ শিক্ষকসহ ৯ জন বহিষ্কার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার কোন শিক্ষায় বড় করছেন মেয়েকে, জানালেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের ৬ষ্ট প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদজাপন ‘মাজার ভাঙচুর করে সুন্নি জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না’ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তা পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের মেসির মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মায়ামি কোচ বন্যায় আরো মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় প্রাথমিকের ‘শপথ বাক্য’ থেকে বাদ গেল বঙ্গবন্ধুর অংশ অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন দপ্তর পেলেন নোবেল বিজয়ী থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য উপদেষ্টা যারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ আশঙ্কা ছিল এ ধরনের একটা আঘাত আসবে : প্রধানমন্ত্রী
বিধ্বংসী জয়ে দুশ্চিন্তা শেষ

বিধ্বংসী জয়ে দুশ্চিন্তা শেষ

01_244622ঘরের কোণে নীরবে মার হজম করার ‘সুযোগ’ ছিল। অমিত শক্তিধর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারটাই অনেকে ভবিতব্য মেনেছেন বলেই না মিরপুরের গ্যালারির অনেকগুলো চেয়ার ফাঁকা রইল কালও। কিন্তু আহত বাঘের মতো পাল্টা আক্রমণে ঝাঁপ দিয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। ফল, ১৩৪ বল বাকি থাকতেই সিরিজে সমতা এনেছে বাংলাদেশ, যে দলটাকে কিনা দুই টোয়েন্টি টোয়েন্টির সিরিজ আর প্রথম ওয়ানডেতে মনে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার সহজ শিকার!

হালফিল সাফল্যের ভেলায় চড়ে বসা বাংলাদেশ দলকে ঘিরে অভাবিত একটা বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। একটার পর একটা টার্গেট বেঁধে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশ দলের সামনে। আজ ম্যাচ জিত তো কাল সিরিজ। সিরিজ জেতার পর দাবি ওঠে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলা কিংবা আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিশ্চিত করার নিশ্চয়তা। এই যেমন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রাক্কালে সবার সম্মিলিত দাবি, ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিশ্চিত করতে হবে। এ সিরিজের সবগুলো ওয়ানডে হারলেও সে সুযোগ ছিল, তবে একটা জয়ে যাবতীয় সংশয় মুছে যাওয়ার পথটাই বেছে নিয়েছেন মাশরাফিরা। না, বাংলাদেশের আবার আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিয়ে আর কোনো সংশয়ই রইল না।
অবশ্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তো কেবলই একটি টুর্নামেন্ট। বরং কাল মিরপুরে বাংলাদেশ দলের নৈপুণ্য বেশি প্রশংসার দাবিদার কোণঠাসা অবস্থা থেকে প্রবল পরাক্রম জয়ের কারণে। সে প্রতি আক্রমণে বেরিয়ে পড়েছে প্রবল প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার পুরনো রোগটাও, বরাবরের চোকার্স! চাপে পড়লেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েন হাশিম আমলার মতো ধীরস্থির অধিনায়কও। আকাশে ওঠা ক্যাচ নেওয়ার জন্য ছুটে যান তিন ফিল্ডার; কিন্তু ধরতে পারেন না কেউই। ভাবা যায়, এ দলটাই কিনা ফিল্ডিং মানে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী!

তবে ম্যাচ তো আর কেউ হারে না, কোনো এক দল জেতে। কাল যেমন জিতেছে বাংলাদেশ। টস হারা বাদ দিলে ম্যাচের পুরো চিত্রনাট্যই যেন কাল রাতভর স্বপ্নে দেখেছেন মাশরাফি! যখন যাঁকে আক্রমণে এনেছেন, সে বোলারই অধিনায়ককে উপহার দিয়েছেন, উইকেট। তরুণ মুস্তাফিজুর রহমান জানিয়ে দিয়েছেন বিস্তর ভিডিও ফুটেজ গবেষণার পরও প্রোটিয়াদের কাছে প্রশ্নচিহ্নই হয়ে আছে তাঁর কাটার, স্লোয়ারগুলো। নাসির হোসেনের অফস্পিনে আকাশসম আস্থা মাশরাফির। দুই দফায় আক্রমণে এসে মাত্র ২৬ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে সে আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন নাসির। আঙুলের চোট নিয়ে মাহমুদ উল্লাহর ছিটকে পড়া নিয়ে গত কিছুদিন নিরন্তর আক্ষেপ করে গেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কেন? ২০১৫ বিশ্বকাপ ব্যাটসম্যান মাহমুদ উল্লাহকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে বটে, তবে মাশরাফির কাছে তাঁর অফস্পিনটাও মহামূল্য। ‘কিলার’খ্যাত ডেভিড মিলার বিস্ফোরক হয়ে ওঠার আগেই তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তো মাহমুদ উল্লাহই। লেগস্পিনার জুবায়ের হোসেনের পরিবর্তে কাল একাদশে ঢোকা রুবেল হোসেন দেখিয়েছেন ফাস্ট বোলিংয়ের সেই বিরল দৃশ্যটি, যখন হাশিম আমলার স্টাম্প ছিটকে গিয়ে পড়েছে উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমের সামনে। পুরো দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসজুড়ে বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং পরিবর্তন ও ফিল্ড প্লেসিংয়ের পুরস্কার অধিনায়ক পাবেন না, তা কি হয়? দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের সমাপ্তি মাশরাফির সেই পুরস্কারপ্রাপ্তিতে। ১৬২ রান বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের সর্বনিম্ন ওয়ানডে স্কোর। বোলারদের এমন দাপটের দিনে কিনা দেশসেরা সাকিব আল হাসান উইকেটহীন! হ্যাঁ, তাই। তবে ১০ ওভারে ৩০ রান এ যুগের ওয়ানডে বোলারদের আরাধ্য স্পেলই। আর বাকিরা যখন টপাটপ উইকেট নিচ্ছেন তখন না হয় একটা উইকেটহীন দিনই কাটালেন সাকিব, দলের সাফল্যই যেখানে শেষ কথা।

জয়ের লক্ষ্য ১৬৩, খুব বেশি নয়। আবার বেশিও। দাঁতভাঙা জবাব দিতে গিয়ে প্রথম ওয়ানডের হ্যাটট্রিকম্যান কাগিসো রাবাদাকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে চালাতে গিয়ে তামিম ইকবালের বোল্ড হওয়া এবং পরের ওভারে লিটন কুমার দাশের বোল্ড হওয়া সে আশঙ্কার মেঘ কিছুটা হলেও ছড়িয়েছিল। সে আশঙ্কার মেঘ মাথায় করেই ক্রিজে সৌম্য সরকারের সঙ্গে যোগ দেন মাহমুদ উল্লাহ। পরেরটুকু সেই মেঘ সরে ঝলমলে সূর্যের সবটুকু আলো ছড়িয়ে দেওয়ার গল্প।

এই গল্পের আগে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগের প্রেক্ষাপটটা জেনে নেওয়া জরুরি। বিসিবির সভাপতি তাঁর পারিষদসহ মিটিং করেছেন নিজেরা এবং দলের সঙ্গে। কারণ-অকারণে নানা পরামর্শ দিয়েছেন। আর সে কারণেই ভোজবাজির মতো বাংলাদেশ দলের শরীরী ভাষা আর ক্রিকেট বদলে গেছে বলে যাঁরা মনে করছেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁরা বাস করছেন বোকার স্বর্গে! কারণ দলের ভেতরে একটা টিম রুলস আছে, নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের জন্য সুনির্দিষ্ট ‘রোল’ ঠিক করা আছে। যেমন টার্গেট যা-ই হোক, দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্যর কাজই স্ট্রোকপ্লেতে প্রতিপক্ষকে ভড়কে দেওয়া। লিটনের বেলাতেও ব্যতিক্রম নয়। তাই ঝুঁকি নেন তাঁরা, কখনো সফল কখনো ব্যর্থ হন। কাল যেমন হয়েছেন তামিম ও লিটন। সৌম্যর বিপক্ষে অভিযোগ, ৩০-৪০ করেই আউট হয়ে যাচ্ছেন। সমালোচকরা তো আর জানেন না যে দল থেকেই তাঁকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের পরামর্শ দেওয়া আছে। সৌম্য নামবেন আর যতক্ষণ উইকেটে থাকবেন দলের ভেতরে অক্সিজেন জুগিয়ে যাবেন স্ট্রোকপ্লেতে, পাশাপাশি দমবন্ধ পরিবেশ তৈরি হবে প্রতিপক্ষের জন্য। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে সমালোচকদের মুখ আপাতত কিছুদিন বন্ধ রাখার উপযুক্ত ব্যবস্থা তিনি নিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার লেগস্পিনার ইমরান তাহিরকে ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করেছেন তো এ বাঁহাতিই।

তবে আরো গুরুত্বপূর্ণ ‘রোল’ মাহমুদ উল্লাহর। তিনি হলেন বাংলাদেশ দলের ‘গিয়ার’। ফার্স্ট গিয়ার থেকে থার্ড গিয়ার; দলের প্রয়োজনে সে ‘মোডে’ ব্যাটিং করতে হয় তাঁকে। কাল যখন ক্রিজে আসেন তিনি তখন ফার্স্ট গিয়ারে খেলাটাই ছিল সময়ের দাবি। কারণ ২৪ রানে ২ উইকেট হারানো দলের স্কোরবোর্ড সচল রাখার কাজটা তখন করে যাচ্ছিলেন সৌম্য। তাই অপর প্রান্তে উইকেট আগলে সিঙ্গেলসের ওপর খেলাটাই ছিল মাহমুদ উল্লাহর কাছে দলের চাওয়া। এবং তিনি সে দাবিই মিটিয়েছেন ষোল আনা। আবার উইকেটে ‘চোখ’ সয়ে যাওয়ার পর স্ট্রোকের দ্যুতিও ছড়িয়েছেন মাহমুদ উল্লাহ। তাই ৫০ পূর্ণ করেছেন তিনি ৬৩ বলে। অবশ্য পরের বলেই ফিরে গেছেন তিনি, যদিও ততক্ষণে জয় থেকে হাত বাড়ানো দূরত্বে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। সৌম্যর ছক্কায় ৭ বল পরই সে দূরত্ব পেরিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ওটাই ইনিংসে বাঁহাতি এ তরুণের একমাত্র ছক্কা, তবে সঙ্গে বাউন্ডারি আছে ১৩টি। ৪৭ বলে ফিফটি করা সৌম্য ম্যাচ শেষে অপরাজিত ৮৮ রানে।

সৌম্য সরকারের কি একটু দুঃখ হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসটা আরেকটু দীর্ঘ হলো না বলে, তাহলে সেঞ্চুরিও হতে পারত যে!

এটা মামুলি সুখ ভাবনা। বাস্তবতা সামনে আরেকটি সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা, যে সিরিজের প্রতিপক্ষ কিনা দক্ষিণ আফ্রিকা! এটা আর কোনো স্বপ্ন নয়, হারের বদলা বড় জয় নিয়ে আজ বাংলাদেশ দল যাচ্ছে চট্টগ্রামে। সঙ্গী তাঁদের টানা চতুর্থ সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা। জিম্বাবুয়ে, পাকিস্তান আর ভারতের পর দক্ষিণ আফ্রিকা- এমন অর্জনের সামনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা তো মামুলি ব্যাপার, নাকি?

সংবাদটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

November 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  



© All rights reserved © dailychironton.com
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo