সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :::
ডেইলি চিরন্তন অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য সিলেটসহ দেশ বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা ইমেইলে যোগাযোগ করুন
শিরোনাম ::
শিশু মুনতাহাকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়,গ্রেপ্তার ৪ রেকর্ড গড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন জো রোগান আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ২ শিক্ষকসহ ৯ জন বহিষ্কার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার কোন শিক্ষায় বড় করছেন মেয়েকে, জানালেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের ৬ষ্ট প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদজাপন ‘মাজার ভাঙচুর করে সুন্নি জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না’ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তা পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের মেসির মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মায়ামি কোচ বন্যায় আরো মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় প্রাথমিকের ‘শপথ বাক্য’ থেকে বাদ গেল বঙ্গবন্ধুর অংশ অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন দপ্তর পেলেন নোবেল বিজয়ী থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য উপদেষ্টা যারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ আশঙ্কা ছিল এ ধরনের একটা আঘাত আসবে : প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে ভারতের পত্রিকা যা লিখলো

বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে ভারতের পত্রিকা যা লিখলো

84116_anandabazarবাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে এতদিন ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্যই করেছে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো। যে কোনো দেশের জয়কে তারা ‘দুর্ঘটনা’ বলে চালিয়ে দিত অবলীলায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভাল কোনোকিছুকে তারা কখনোই স্বাভাবিকভাবে নেয় নি। কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘আনন্দবাজার’ও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু সুর এখন পাল্টেছে। বাংরাধেম ক্রিকেটের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এখন তারা। পাকিস্তান ও ভারতকে ওয়ানডে সিরিজ হারানোর পর বাংলাশের সর্বশেষ শিকার দক্ষিণ আফ্রিকা। আর নিজেদের মাটিতে বাংলাদেশর টানা চার ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর ‘আনন্দবাজার’ আজ একাধক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। প্রত্যেকেটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্তুতি। তার কিছু নিচে তুলে ধরা হলোÑ

প্রতিভার কোহিনূরের ছটায় বিশ্বে এখন বাঘের ডাক
নিজস্ব সংবাদদাতা: বছর পাঁচেক আগেও কথাটা বললে, নিঃসন্দেহে লোকে আপনাকে বদ্ধ উন্মাদ না হলে ক্রিকেট নির্বোধ উপাধিতে ভূষিত করত। ক্রিকেট মানচিত্রে বাংলাদেশ মানে তখনও ছিল রেকর্ডের দেশ এবং শেষোক্ত শব্দ জোড়া মোটেও সম্মানার্থে ক্রিকেটে মহাশক্তিদের টেবিলে ব্যবহৃত হত না। সমীকরণটা সহজ। পদ্মাপারে যাও, অফ ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানদের একটু বাইশ গজে ফুর্তি-টুর্তির সুযোগ করে দাও। রেকর্ডের পর রেকর্ড করো, আর সিরিজটা যথা সামান্য শক্তি খরচ করে জিতে ফিরে এসো। ২০০৭-র বিশ্বকাপে ভারত বধকে তখনও ধরা হত অঘটন। এ দিক ও দিক হঠাৎ হঠাৎ বিশ্ব ক্রিকেটের ‘বড়দাদাদের’ পেড়ে ফেলার কীর্তিকে দেখা হত করুণার চোখে। যেন বরাবরের লাস্ট বেঞ্চের হঠাৎই ইউনিট টেস্টের একটা পেপারে ভাল করে ফেলা। টেস্ট খেলিয়ে দেশ হিসাবে বাংলাদেশের পরিচিতিটা নামেই ছিল শুধু। আসল টেস্ট খেলিয়ে দেশের মর্যাদার সিড়িতে কখনও উঠতে দেওয়া হয়নি।
বুধবার রাতেও চট্টগ্রামে আফ্রিকার ক্রিকেট ঐশ্বর্যের সর্বস্ব লুন্ঠনের পর বাংলাদেশ জনতার নিশ্চিত সমালোচকদের সেই পুরনো মুখগুলো দেখতে ইচ্ছে করছে। নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা-এই নিয়ে ক্রিকেট দুনিয়ার পাঁচ উচ্চ বিত্ত দেশকে ধুয়ে মুছে দেওয়ার পর ইচ্ছে হওয়াটা অন্যায্য নয়। কোনও নায়কের আবির্ভাবের সিনেমা হিট হয়ে যদি পরের গুলো ফ্লপ দিতে থাকে তাকে ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার বলা যেতে পারে। কিন্তু পরের পর সিনেমা হিট করতে থাকতে সে নিজেই ওয়ান্ডার হিসাবে বিবেচিত হয়। মহা প্রতিদ্বন্দ্বীদের এক আধ বার হারিয়ে দিলে তাকে জায়ান্ট কিলার বলা চলে। কিন্তু সেটা বারবার ঘটতে থাকতে তাকেই সাক্ষাৎ জায়ান্ট হিসেবে মেনে নিতে হয়। বুধবার রাতের পর বোধ হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও এই তুলনা গুলোই প্রযোজ্য।
বিশুদ্ধবাদী সমালোচকেরা যা খুশি রায় দিতে পারেন। বিশ্ব ক্রিকেটে নক্ষত্রেরা এর পরেও ভাবতে পারে টিমটার সাময়িক সুসময় চলছে। কিন্তু বাস্তব হল এর পর থেকে বাংলাদেশকে বাইশ গজে হালকা ভাবে নেওয়া মানে তুমি গেলে। নির্ঘাত মৃত্যু। তাচ্ছিল্য করবে যতটা ফেরতও পাবে ততটা।
উদাহরণ তো সদ্য সমাপ্ত এই সিরিজটাই। এবি ডেভিলিয়ার্স একটি ওয়ানডে ম্যাচ নির্বাসিত ছিলেন। তাঁকে সিরিজ থেকেই ছুটি দিয়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ডেল স্টেন কেন খেললেন না, ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা উত্তরটা দিতে পারবে। পরিণতি? সিরিজে দাঁড় করিয়ে হার। দু’বার দুশোর কমে নামিয়ে দেওয়া। পরিণতি, প্রোটিয়া ক্রিকেট মহলে প্রশ্ন উঠে যাওয়া, ভারত যেখানে পূর্ণ শক্তির টিম পাঠিয়ে নত মস্তকে ফিরে এল সেখানে তোমরা কোন সাহসে এই দুই মহারথী ছাড়া নেমে পড়লে হে!
মাস্টারদার শহরের মায়াবী রাতের পর থেকে ফেসবুক-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বাংলাদেশ সমর্থকদের একটা মন্তব্য ক্রমাগত করতে দেখা যাচ্ছে। যে, এ বার অস্ট্রেলিয়াকে চাই। ওরাই আমাদের আসল প্রতিদ্বন্দ্বী। আতিশয্য মনে হোক বা যুক্তিযুক্ত, বাংলাদেশ ক্রিকেটের আজকের উত্তরণের পিছনে এই উদাত্ত সমর্থন কিন্তু বরাবরের প্রেরণা। টিম হারুক, জিতুক যাঁরা সব সময় টিমের পাশে থাকেন। মাঠে টিম নামলে অবধারিত ভাবে যাঁরা হয়ে যান টিমের দ্বাদশ ব্যক্তি। সমর্থনের উত্তাপ আর গর্জনে নামার আগেই প্রতিপক্ষ মনস্তাত্ত্বিক ভাবে ২-০ হেরে শুরু করে। কিন্তু সে সমর্থনে তো আর পরের পর ক্রিকেটীয় যুদ্ধ জেতা সম্ভব নয়। সেখানে স্কিল লাগে, প্রতিভা লাগে। লাগে লৌহ কঠিন মানসিকতা। যা সবার অলক্ষে ধীরে ধীরে একত্র করেছে বাংলাদেশ। এবং সেই প্রতিভার কোহিনুরের ছটা এখন বিশ্বজুড়ে। বিশ্বজুড়ে তাই এখন বাঘের ডাক।

টানা জয় নিয়ে
জিম্বাবুয়ে, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও ভারতের পর দক্ষিণ আফ্রকাকে ওয়ানডে সিরিজ হারানো মোটেও কাকতালীয় নয় বলেই মনে করে ‘আনন্দবাজার’। এ ব্যাপারে তারা লিখেছে, ক্রিকেটবিশ্বের ‘ছোট ভাই’ তকমা লাগানো আজীবনের অস্তিত্ব সদর্পে, পাকাপাকি ভাবে ঝেড়ে ফেলার দিন তো আর একটামাত্র আবেগে আটকে থাকে না! জিম্বাবোয়েকে হারানোটা ফ্লুক হয়ে থাকতে পারে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়কে সমালোচকেরা ব্যাখ্যা করতে পারেন এটা বলে যে, ইউনিস খানরা কবে আর ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলতে পেরেছেন? বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের ২-১ উড়িয়েও কারও কারও কাছে শুনতে হয়েছিল, টানা ক্রিকেট খেলে টিম ইন্ডিয়া ক্লান্ত। সেই টিমকে হারানো— এ রকম তো হয়েই থাকে!
দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ উড়িয়ে দেওয়ার ব্যাখ্যা খুঁজতে গেলে সমালোচক-কুল একটু সমস্যায় পড়তে পারেন। ডেল স্টেইন বা এবি ডে’ভিলিয়ার্স টিমে ছিলেন না, কিন্তু এই টিমকে মোটেও দ্বিতীয় সারির বলা যাবে না। ব্যাটিংয়ে হাসিম আমলা, ফাফ দু’প্লেসি, জেপি দুমিনি, ডেভিড ‘দ্য কিলার’ মিলার, বোলিংয়ে মর্নি মর্কেল-ইমরান তাহিরের অভিজ্ঞ গতি-স্পিন জুটির সঙ্গে কাগিসো রাবাদার সাড়া-জাগানো টাটকা পেস।
এই টিমের বিরুদ্ধে সিরিজ ১-১ রেখে চট্টগ্রামে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে নেমেছিলেন মাশরফি মর্তুজারা। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী টিমের বিরুদ্ধে কোনও দিন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জেতেনি বাংলাদেশ। নিজেদের দেশে পরপর চারটে সিরিজ জয় দেখেননি বঙ্গ সমর্থকেরা। বুধবারের পর যাঁরা নিজেদের অসীম ভাগ্যবান মনে করলে ভুল করবেন না। ক্রিকেট-গর্বের দেশজ রাজপ্রাসাদের এক-একটা ইঁট স্থাপন প্রত্যক্ষ করায় ক্রিকেটপ্রেমীর কাছে এর চেয়ে বেশি সুখের কী হতে পারে?

সূত্র: আনন্দবাজার

বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে ভারতের পত্রিকা যা লিখলো
স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে এতদিন ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্যই করেছে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো। যে কোনো দেশের জয়কে তারা ‘দুর্ঘটনা’ বলে চালিয়ে দিত অবলীলায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভাল কোনোকিছুকে তারা কখনোই স্বাভাবিকভাবে নেয় নি। কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘আনন্দবাজার’ও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু সুর এখন পাল্টেছে। বাংরাধেম ক্রিকেটের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এখন তারা। পাকিস্তান ও ভারতকে ওয়ানডে সিরিজ হারানোর পর বাংলাশের সর্বশেষ শিকার দক্ষিণ আফ্রিকা। আর নিজেদের মাটিতে বাংলাদেশর টানা চার ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর ‘আনন্দবাজার’ আজ একাধক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। প্রত্যেকেটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্তুতি। তার কিছু নিচে তুলে ধরা হলোÑ

প্রতিভার কোহিনূরের ছটায় বিশ্বে এখন বাঘের ডাক
নিজস্ব সংবাদদাতা: বছর পাঁচেক আগেও কথাটা বললে, নিঃসন্দেহে লোকে আপনাকে বদ্ধ উন্মাদ না হলে ক্রিকেট নির্বোধ উপাধিতে ভূষিত করত। ক্রিকেট মানচিত্রে বাংলাদেশ মানে তখনও ছিল রেকর্ডের দেশ এবং শেষোক্ত শব্দ জোড়া মোটেও সম্মানার্থে ক্রিকেটে মহাশক্তিদের টেবিলে ব্যবহৃত হত না। সমীকরণটা সহজ। পদ্মাপারে যাও, অফ ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানদের একটু বাইশ গজে ফুর্তি-টুর্তির সুযোগ করে দাও। রেকর্ডের পর রেকর্ড করো, আর সিরিজটা যথা সামান্য শক্তি খরচ করে জিতে ফিরে এসো। ২০০৭-র বিশ্বকাপে ভারত বধকে তখনও ধরা হত অঘটন। এ দিক ও দিক হঠাৎ হঠাৎ বিশ্ব ক্রিকেটের ‘বড়দাদাদের’ পেড়ে ফেলার কীর্তিকে দেখা হত করুণার চোখে। যেন বরাবরের লাস্ট বেঞ্চের হঠাৎই ইউনিট টেস্টের একটা পেপারে ভাল করে ফেলা। টেস্ট খেলিয়ে দেশ হিসাবে বাংলাদেশের পরিচিতিটা নামেই ছিল শুধু। আসল টেস্ট খেলিয়ে দেশের মর্যাদার সিড়িতে কখনও উঠতে দেওয়া হয়নি।
বুধবার রাতেও চট্টগ্রামে আফ্রিকার ক্রিকেট ঐশ্বর্যের সর্বস্ব লুন্ঠনের পর বাংলাদেশ জনতার নিশ্চিত সমালোচকদের সেই পুরনো মুখগুলো দেখতে ইচ্ছে করছে। নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা-এই নিয়ে ক্রিকেট দুনিয়ার পাঁচ উচ্চ বিত্ত দেশকে ধুয়ে মুছে দেওয়ার পর ইচ্ছে হওয়াটা অন্যায্য নয়। কোনও নায়কের আবির্ভাবের সিনেমা হিট হয়ে যদি পরের গুলো ফ্লপ দিতে থাকে তাকে ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার বলা যেতে পারে। কিন্তু পরের পর সিনেমা হিট করতে থাকতে সে নিজেই ওয়ান্ডার হিসাবে বিবেচিত হয়। মহা প্রতিদ্বন্দ্বীদের এক আধ বার হারিয়ে দিলে তাকে জায়ান্ট কিলার বলা চলে। কিন্তু সেটা বারবার ঘটতে থাকতে তাকেই সাক্ষাৎ জায়ান্ট হিসেবে মেনে নিতে হয়। বুধবার রাতের পর বোধ হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও এই তুলনা গুলোই প্রযোজ্য।
বিশুদ্ধবাদী সমালোচকেরা যা খুশি রায় দিতে পারেন। বিশ্ব ক্রিকেটে নক্ষত্রেরা এর পরেও ভাবতে পারে টিমটার সাময়িক সুসময় চলছে। কিন্তু বাস্তব হল এর পর থেকে বাংলাদেশকে বাইশ গজে হালকা ভাবে নেওয়া মানে তুমি গেলে। নির্ঘাত মৃত্যু। তাচ্ছিল্য করবে যতটা ফেরতও পাবে ততটা।
উদাহরণ তো সদ্য সমাপ্ত এই সিরিজটাই। এবি ডেভিলিয়ার্স একটি ওয়ানডে ম্যাচ নির্বাসিত ছিলেন। তাঁকে সিরিজ থেকেই ছুটি দিয়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ডেল স্টেন কেন খেললেন না, ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা উত্তরটা দিতে পারবে। পরিণতি? সিরিজে দাঁড় করিয়ে হার। দু’বার দুশোর কমে নামিয়ে দেওয়া। পরিণতি, প্রোটিয়া ক্রিকেট মহলে প্রশ্ন উঠে যাওয়া, ভারত যেখানে পূর্ণ শক্তির টিম পাঠিয়ে নত মস্তকে ফিরে এল সেখানে তোমরা কোন সাহসে এই দুই মহারথী ছাড়া নেমে পড়লে হে!
মাস্টারদার শহরের মায়াবী রাতের পর থেকে ফেসবুক-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বাংলাদেশ সমর্থকদের একটা মন্তব্য ক্রমাগত করতে দেখা যাচ্ছে। যে, এ বার অস্ট্রেলিয়াকে চাই। ওরাই আমাদের আসল প্রতিদ্বন্দ্বী। আতিশয্য মনে হোক বা যুক্তিযুক্ত, বাংলাদেশ ক্রিকেটের আজকের উত্তরণের পিছনে এই উদাত্ত সমর্থন কিন্তু বরাবরের প্রেরণা। টিম হারুক, জিতুক যাঁরা সব সময় টিমের পাশে থাকেন। মাঠে টিম নামলে অবধারিত ভাবে যাঁরা হয়ে যান টিমের দ্বাদশ ব্যক্তি। সমর্থনের উত্তাপ আর গর্জনে নামার আগেই প্রতিপক্ষ মনস্তাত্ত্বিক ভাবে ২-০ হেরে শুরু করে। কিন্তু সে সমর্থনে তো আর পরের পর ক্রিকেটীয় যুদ্ধ জেতা সম্ভব নয়। সেখানে স্কিল লাগে, প্রতিভা লাগে। লাগে লৌহ কঠিন মানসিকতা। যা সবার অলক্ষে ধীরে ধীরে একত্র করেছে বাংলাদেশ। এবং সেই প্রতিভার কোহিনুরের ছটা এখন বিশ্বজুড়ে। বিশ্বজুড়ে তাই এখন বাঘের ডাক।

টানা জয় নিয়ে
জিম্বাবুয়ে, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও ভারতের পর দক্ষিণ আফ্রকাকে ওয়ানডে সিরিজ হারানো মোটেও কাকতালীয় নয় বলেই মনে করে ‘আনন্দবাজার’। এ ব্যাপারে তারা লিখেছে, ক্রিকেটবিশ্বের ‘ছোট ভাই’ তকমা লাগানো আজীবনের অস্তিত্ব সদর্পে, পাকাপাকি ভাবে ঝেড়ে ফেলার দিন তো আর একটামাত্র আবেগে আটকে থাকে না! জিম্বাবোয়েকে হারানোটা ফ্লুক হয়ে থাকতে পারে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়কে সমালোচকেরা ব্যাখ্যা করতে পারেন এটা বলে যে, ইউনিস খানরা কবে আর ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলতে পেরেছেন? বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের ২-১ উড়িয়েও কারও কারও কাছে শুনতে হয়েছিল, টানা ক্রিকেট খেলে টিম ইন্ডিয়া ক্লান্ত। সেই টিমকে হারানো— এ রকম তো হয়েই থাকে!
দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ উড়িয়ে দেওয়ার ব্যাখ্যা খুঁজতে গেলে সমালোচক-কুল একটু সমস্যায় পড়তে পারেন। ডেল স্টেইন বা এবি ডে’ভিলিয়ার্স টিমে ছিলেন না, কিন্তু এই টিমকে মোটেও দ্বিতীয় সারির বলা যাবে না। ব্যাটিংয়ে হাসিম আমলা, ফাফ দু’প্লেসি, জেপি দুমিনি, ডেভিড ‘দ্য কিলার’ মিলার, বোলিংয়ে মর্নি মর্কেল-ইমরান তাহিরের অভিজ্ঞ গতি-স্পিন জুটির সঙ্গে কাগিসো রাবাদার সাড়া-জাগানো টাটকা পেস।
এই টিমের বিরুদ্ধে সিরিজ ১-১ রেখে চট্টগ্রামে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে নেমেছিলেন মাশরফি মর্তুজারা। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী টিমের বিরুদ্ধে কোনও দিন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জেতেনি বাংলাদেশ। নিজেদের দেশে পরপর চারটে সিরিজ জয় দেখেননি বঙ্গ সমর্থকেরা। বুধবারের পর যাঁরা নিজেদের অসীম ভাগ্যবান মনে করলে ভুল করবেন না। ক্রিকেট-গর্বের দেশজ রাজপ্রাসাদের এক-একটা ইঁট স্থাপন প্রত্যক্ষ করায় ক্রিকেটপ্রেমীর কাছে এর চেয়ে বেশি সুখের কী হতে পারে?

সংবাদটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

November 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  



© All rights reserved © dailychironton.com
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo