টেস্ট দলে নেই প্রায় দুই বছর। তিন বছরেরও বেশি হয়ে গেছে ওয়ানডেও খেলা হয়নি। কোনো দিন আর ফিরতে পারেন কি না, ছিল এমন সংশয়ই। এবার সেটিও দূর করে দিলেন সাবেক ভারতীয় পেসার। ‘সাবেক’ লিখতে হচ্ছে, কারণ গতকাল আন্তর্জাতিক ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে বিদায়ই বলে দিয়েছেন জহির। তবে তাঁর ইচ্ছা আছে আরও একটা মৌসুম আইপিএলে খেলে যাওয়ার।
একটা জায়গায় জহিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নামও। ২০০০ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টেই জহিরেরও অভিষেক। ওয়ানডে অভিষেক ২০০০ সালের অক্টোবরে কেনিয়াতে আইসিসি নকআউট টুর্নামেন্টে। একটা সময় একাই সামলেছেন ভারতীয় পেস আক্রমণের দায়িত্বভার। তবে সেটা করতে গিয়েই বারবার চোটে পড়েছেন। নিজের ফেসবুক পেজ আর টুইটারে কাল অবসরের ঘোষণা দিতে গিয়েও সেই চোটের প্রসঙ্গ তুলেছেন, ‘সামনের মৌসুমের জন্য অনুশীলন করতে গিয়ে আমি বুঝতে পারলাম, এই কাঁধ আর দিনে ১৮ ওভারের মতো বোলিংয়ের ভার বইতে পারবে না। তখনই বুঝতে পারলাম, এটাই সময়।’
সর্বশেষ আইপিএলের পর গত ছয় মাসে আসলে কোনো ধরনের ক্রিকেটেই ছিলেন না জহির। সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েলিংটনে। ওয়ানডেতে তাঁকে সর্বশেষ ভারতীয় দলে দেখা গেছে ২০১২ সালের আগস্টে পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। অবসরের ঘোষণা দিতে গিয়ে বেশ আবেগাপ্লুত ৩৭ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার, ‘গত দুই দশকে ক্রিকেটই ছিল আমার প্রাণ। সত্যিকার অর্থে এই একটি কাজই আমি ভালো করে জানতাম। আমি আজ যা কিছু হয়েছি, সেটা ক্রিকেটের জন্যই। ক্রিকেট আমাকে সবই দিয়েছে।’
টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৩০৯ ম্যাচে নিয়েছেন ৬১০ উইকেট। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে তাঁর চেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক উইকেট আছে শুধু অনিল কুম্বলে (৯৫৬), হরভজন সিং (৭০৬) ও কপিল দেবের (৬৮৭)। বাঁহাতি বোলারদের মধ্যেও তাঁর চেয়ে বেশি উইকেট আছে শুধু ওয়াসিম আকরাম (৯১৬), চামিন্ডা ভাস (৭৬১) ও ড্যানিয়েল ভেট্টোরির (৭০৫)। ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপ জয়েও বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। ২১ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটের মালিকও হয়েছিলেন।
এমন একজনের বিদায়ের ঘোষণায় স্বভাবতই আপ্লুত ভারতের ব্যাটিং কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার, ‘আমার দেখা দুর্দান্ত পেসারদের একজন, যে বেশির ভাগ সময় ব্যাটসম্যানদের মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে হারিয়ে দিতে পারত।’ বিসিসিআই সচিব অনুরাগ ঠাকুরও এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘উপমহাদেশে ফাস্ট বোলার হওয়াটা এমনিতেই চ্যালেঞ্জিং। তবে জহির সম্মানের সঙ্গেই ভারতীয় বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছে।’ রয়টার্স, ক্রিকইনফো।
জহির খানের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার (২০০০-২০১৪)
ম্যাচ | বল | উইকেট | সেরা | গড় | ৫/১০ | |
টেস্ট | ৯২ | ১৮৭৮৫ | ৩১১ | ৭/৮৭ | ৩২.৯৪ | ১১/১ |
ওয়ানডে | ২০০ | ১০০৯৭ | ২৮২ | ৫/৪২ | ২৯.৪৩ | ১ |
টি-টোয়েন্টি | ১৭ | ৩৫২ | ১৭ | ৪/১৯ | ২৬.৩৫ | ০ |
Leave a Reply