নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে আজ রাতেই দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের কারাগার থেকে নূর হোসেনকে বের করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ দমদম কারাগার কর্তৃপক্ষ নুর হোসেনকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করতে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। খবর এনডিটিভির।
খবরে বলা হয়, দমদম কারাগার থেকে নুর হোসেনকে নিয়ে বিএসএফ’র কড়া প্রহরায় ভারতের পুলিশের একটি দল পেট্রোপোল সীমান্তের দিকে রওনা দিয়েছে। রাত ৯টার সময় নুর হোসেনকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ এলাকার হরিদাশপুর সীমান্তের অদূরে অবস্থান করছিল। বাংলাদেশ সময় রাত দশটায় বাংলাদেশের পুলিশও বিজিবির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উলফার নেতা অনুপ চেটিয়াকে হস্তান্তরের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপে নূর হোসেনকে ফিরিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
এদিকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের একটি টীম গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে বেনাপোল রওনা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার জানান, নুর হোসেনকে আনার জন্য পুলিশের একটি টীম ইতোমধ্যে বেনাপোল রওনা হয়ে গেছে।
প্রায় ১৮ বছর বাংলাদেশের কারাগারে আটক থাকার পর অনুপ চেটিয়া ও তার দুই সহযোগীকে মঙ্গলবার রাতে ভারতের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। কাশিমপুর কারাগার থেকে ভারতীয় দূতাবাস কর্মকর্তা জে পি সিং’এর হাতে তুলে দেয়া হয় অনুপ চেটিয়াকে।
২০১৩ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তির পর নূর হোসেনই প্রথম ব্যক্তি, যাকে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে।
ভারত সরকার অনুপ চেটিয়ার বিনিময়ে নূর হোসেনকে ফেরত দিতে রাজি হয়। এর আগে গত ১৬ অক্টোবর ভারতের আদালত নূর হোসেনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্ব্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজন অপহৃত হন। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠা ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
অপহরণের পরপরই নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নাম্বার ওয়ার্ডের সে সময়কার কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
ওই সময় অপহরণ ও সাত খুনের ঘটনার প্রধান আসামি নূর হোসেন এলাকা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর গত বছরের ১৪ জুন কলকাতার বাগুইহাটির একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স।
Leave a Reply