মাদক ও যৌতুক বিরোধী সাংস্কৃতিক সংগঠন চিরন্তনের বার্ষিক সদস্য পুনর্মিলনী, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও প্রীতিভোজ অনুষ্ঠান বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর একটি অভিজাত রেষ্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়। চিরন্তনের প্রতিষ্ঠা সভাপতি ইকবাল হোসেন আফাজের সভাপতিত্বে ও চিরন্তনের সংগীত একাডেমীর সদস্য ফাতেমা আহমদ তুলির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চিরন্তনের উপদেষ্টা গণদাবী পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বদরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, কমরেড সিকন্দর আলী, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্ট অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মো: দেলোয়ার হোসেন খান, চিরন্তনের আজীবন সদস্য সাংবাদিক ফয়সল আহমদ বাবলু, সাংবাদিক এম. এ. হান্নান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক বাদশাহ গাজী।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেন, আমি নিজেই একজন চেইনস্মোকার ছিলাম। আমার ক্যান্সার আক্রান্ত ভাইয়ের মৃত্যুর পর থেকে সিগারেট খাওয়া বাদ দিয়ে দেই। এখন পর্যন্ত আর সিগারেট হাতে ধরেনি। নেশা যা বলা হয়, তা নিজের ইচ্ছার উপরই নির্ভর করে। আর ইচ্ছা করলেই সিগারেটের মতো আরো মরণব্যাধি নেশা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, নেশা বলতে যা বলা হয় তাই আমাদের জন্য ক্ষতিকর। মাদক আমাদের দেশে এক ভয়াবহ নেশার বস্তুতে পরিণত হয়েছে। আমাদের দেশে মদ, জুয়া আইনগতভাবে নিষিদ্ধ। নেশাগ্রস্ত মানুষ খুন, আত্মহত্যার মতো জঘন্য খারাপ কাজ ঘটায়। মানুষের হাতে এসব নেশা বস্তু আমাদের সমাজেরই উচ্চ শ্রেণী প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে পৌঁছায়। তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবং প্রত্যেকের নিজ নিজ উদ্যোগ থেকে আন্দোলন করে এসব নেশাগ্রস্ত বস্তু যুব সমাজের হাতে পৌঁছানো বন্ধ করতে হবে এবং সকলের সচেতন থেকে সব ধরনের মাদকদ্রব্য পরিহার করতে হবে। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে সোচ্চার ভূমিকা রাখতে পারে দেশের সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া। তিনি আরো বলেন, সাংবাদিক লেখনি বা কলম যুদ্ধের মাধ্যমে সব ধরনের নেশাদ্রব্যের অপকারিতা সম্পর্কে যুব সমাজের কাছে তুলে ধরতে হবে। নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে, সেই সাথে যৌতুক লোভীদেরও নিজ নিজ উদ্যোগ থেকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
তিনি বলেন, এক সময় এদেশের মহিলারা মা-বাবার জন্য বোঝা ছিল, বর্তমানে মানননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে মহিলাদের সর্বক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে প্রত্যেক নারীকে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার সহজ ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই এখন আর যৌতুকের মতো অভিশাপে মা-বাবাদের কোন রকম চিন্তা করতে হচ্ছে না। তিনি বলেন, লক্ষ লক্ষ টাকার কাবিন বিয়ে দেয়ার পরও অনেক বিয়ে ভেঙ্গে যায়। সেখানে যৌতুক দেয়া না দেয়া সমান কথা। তাই এই ব্যাধি থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেতে হলে আমাদের প্রত্যেককে নিজস্ব অবস্থান থেকে সচেতন থাকতে হবে। তিনি আমরা সকল প্রকার অন্যায় অপকর্ম, মাদক ও যৌতুকের মতো এসব ভয়ানক সামাজিক ব্যধির বিরুদ্ধে আমরা ভালোবাসা, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির পক্ষে। আর চিরন্তনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তাই।
উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন-চিরন্তনের বর্তমান সভাপতি দিলদার মো: শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক পংকজ চন্দ, চিরন্তনের সদস্য এডভোকেট সাবানা ইসলাম, এনায়েত হোসেন সাব্বির, বিকাশ দাস, মো: মর্তুজা শরীফ, কবির আহমদ, সামছুদ্দিন, এম. এস. এ. মাসুম খান, ফাতেমা সুলতানা অন্না, তাহমিনা আক্তার মিনা, নান্টু শুল্ক বৈদ্য, রাসেল আহমদ, আব্দুলাহ খোকন, মিজানুর রহমান, লুৎফা আহমদ লিলি, সাজু আহমদ, কয়েছ আহমদ, ইউসুফ আহমদ, মো: মুরসালিন, নূর উদ্দিন রাসেল, শিপন খান, জামাল উদ্দিন, হাসমত আলী, ছায়েদা আক্তার, ফাহমিদা আক্তার, ববি আক্তার, কয়েছ আহমদ, পারুল আক্তার, মো: আলী হোসেন, রুবেল আহমদ, মুশফিকুর রহীম, সাদিয়া মকবুল, সালেহ আহমদ, হাসমত আলী, আব্দুল হাদী তোহিন, ফটো সাংবাদিক শরীফ গাজী, আকমল হোসেন সুমন, সারোয়ার হোসেন সাব্বির, সঞ্জয় কান্তি দাস, রিপন খান, জামাল উদ্দিন প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন চিরন্তনের শিল্পীবৃন্দরা। পরে র্যাফেল ড্র ও প্রীতিভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্তি হয়।
Leave a Reply