রোববার দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে তিনদিনের কাতার সফর শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ৩-৫ ফেব্রুয়ারি কাতার সফরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী, প্রশাসনিক ও শ্রম কল্যাণমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। সাক্ষাতে তারা বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে যেসব কর্মী আসবে তারা যেন নামাজ পড়েন। এ বিষয়ে আমিও সেদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছি। বলেছি, বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ। এদেশে ৯৫ ভাগ মুসলমান। সুতরাং সবাই নামাজ পড়বে।
মন্ত্রী বলেন, কাতার প্রতিবছর দুই লাখেরও বেশি কর্মী বাংলাদেশ থেকে নিতে চায়। এ বিষয়ে আগামী মার্চে দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হবে। বৈঠকে শ্রমিক পাঠানোর অভিবাসন ব্যয়ও ঠিক করা হবে।
নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, কাতার বিক্রয়কর্মী, নার্স, ডাক্তার, প্রকৌশলী ও অফিস কর্মচারীসহ সকল খাতে শ্রমিক চেয়েছেন।
কাতার সফরকালে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন নাসের বিন খলিফা আল থানি এবং প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রম ও সমাজ কল্যাণমন্ত্রী ড. ঈসা সাদ আলজাফালি আল নুয়াইমির সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, কাতার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য অন্যতম এবং সবচেয়ে সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার।
বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২০১৫ সালে মোট ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮১ জন কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। এরমধ্যে শুধু কাতারেই ২০১৫ সালে কর্মী গেছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৬৫ জন কর্মী। কর্মী প্রেরণের হার ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে ৪২ শতাংশ বেড়েছে।
এছাড়াও কাতারে নারী অভিবাসনের হার ২০১৫ সালে শতকরা ৩৩ ভাগ বেড়েছে। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ৬৪৫২ জন আর ২০১৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৬৪২জন।
তিনি বলেন, ২০২২ সালের কাতারে অনুষ্ঠিতব্য ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ জলছে। এজন্য নির্মাণ কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন সেবাখাতে কর্মীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশ্বকাপ ফুটবলের পরও কাতারে উন্নয়ন পরিকল্পনা ভিশন-২০৩০ এর বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সকল সেক্টরে লোকবল প্রদানে প্রস্তাব করেছে, যা কাতার সরকার সানন্দে গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশি কর্মীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে কাতার সরকারের ও বেসরকারি খাতের সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক গাজী মো. জুলহাস বলেন, কাতারকে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে বেশ কিছু প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- বছরে কর্মী নেওয়ার বিষয়ে টার্গেট নির্ধারণ করা, নার্স-ডাক্তার-শিক্ষক নেয়ার বিষয়ে নির্দিষ্ট প্রস্তাব, কাতারে কর্মী যাওয়ার আগে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং প্রশিক্ষণের ব্যয় বহন করা, বাংলাদেশি কর্মী নেয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া, বেতন বাড়ানো। বর্তমানে একজন নারী শ্রমিক সর্বনিম্ন ৭০০ রিয়াল পাচ্ছেন। সেটাকে ১২০০ রিয়ালে করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার, জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক সামসুন নাহার, মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আবদুর রব, যুগ্ম সচিব কাজী আবুল কালাম প্রমুখ।
Leave a Reply