শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :::
ডেইলি চিরন্তন অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য সিলেটসহ দেশ বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা ইমেইলে যোগাযোগ করুন
শিরোনাম ::
শিশু মুনতাহাকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়,গ্রেপ্তার ৪ রেকর্ড গড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন জো রোগান আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ২ শিক্ষকসহ ৯ জন বহিষ্কার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার কোন শিক্ষায় বড় করছেন মেয়েকে, জানালেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের ৬ষ্ট প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদজাপন ‘মাজার ভাঙচুর করে সুন্নি জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না’ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তা পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের মেসির মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মায়ামি কোচ বন্যায় আরো মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় প্রাথমিকের ‘শপথ বাক্য’ থেকে বাদ গেল বঙ্গবন্ধুর অংশ অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন দপ্তর পেলেন নোবেল বিজয়ী থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য উপদেষ্টা যারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ আশঙ্কা ছিল এ ধরনের একটা আঘাত আসবে : প্রধানমন্ত্রী
কাউকে গ্রেফতার করতে হলে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে : প্রধান বিচারপতি

কাউকে গ্রেফতার করতে হলে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে : প্রধান বিচারপতি

10প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার ভয়াবহ ঘটনা। কাউকে গ্রেফতার করতে হলে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও ১৬৭ ধারায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানিতে গতকাল তিনি এ কথা বলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাইকোর্ট কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৩ বছর পার হয়ে গেল, আপনারা (সরকার) একটিও প্রতিপালন করেননি। আইনশৃঙ্খলা   বাহিনী কাউকে গ্রেফতার করেই গণমাধ্যমের সামনে হাজির করে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধি একটি কলোনিয়াল ল’ (ঔপনিবেশিক আইন)। ১৯৭০ সালে মালয়েশিয়া এই আইন সংশোধন করেছে। পরবর্তীতে তাকে অনুসরণ করে ভারতও তাদের ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে। কিন্তু আমরা এখনো পারছি না। অ্যাটর্নি জেনারেলের এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, যথাযথ চিন্তাভাবনা না করেই আইন প্রণয়ন করার কারণে বিচার বিভাগের ওপর মামলার চাপ বাড়ছে। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আমাকে বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর বডিগার্ডের দায়িত্বপালনকারী এক মুক্তিযোদ্ধার ছেলেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

৫৪ ধারা নিয়ে আপিলের রায় ২৪ মে : বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারার বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ওপরে ২৪ মে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও রিটের পক্ষে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম শুনানি করেন। শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে এ বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা যথাযথ নয়। কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশ হেফাজতে যদি কারও মৃত্যু হয়, তাহলে দায়ী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের দেশে আইন আছে। শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, আইনের অপপ্রয়োগের বিষয়ে আদালত নির্দেশনা দিলে ঠিক আছে। কিন্তু আদালতকে সমন্বয় করতে হবে যাতে বাদী ও বিবাদী কেউই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ৫৪ ধারায় আসামিদের সুরক্ষার বিষয়ে নানারকম বক্তব্য আছে। কিন্তু সমাজে নানারকম মানুষ আছে, আসামিদের যেমন অধিকার আছে তেমন ভুক্তভোগীদেরও অধিকার আছে। আমাদের দেশে গুপ্তহত্যা, জঙ্গিবাদে মুক্তচিন্তার মানুষের বিরুদ্ধে যে অবস্থান তাতে যদি আইনের সঠিক প্রয়োগ না হয়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে।

১৯৯৮ সালের ২৩ জুলাই ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এসি) আকরাম হোসেন। ওই বছরের ২৪ জুলাই মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে রুবেল মারা যান। এ ঘটনায় রুবেলের বাবা রমনা থানায় এসি আকরামসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় ২০০২ সালে বিচারিক আদালত এসি আকরামসহ ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এরপর তৎকালীন সরকার রুবেল হত্যা তদন্তের জন্য বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের সমন্বয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করে। এ সুপারিশ বাস্তবায়িত না হওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) হাইকোর্টে রিট করে। ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল এ ব্যাপারে কয়েক দফা নির্দেশনাসহ রায় দেয় হাইকোর্ট। রায়ে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধান ছয় মাসের মধ্যে সংশোধন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ওই ধারাগুলো সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সরকারকে বলা হয়। এর বিরুদ্ধে আপিলে যায় রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল আবেদনে বলা হয়, এ দুটি ধারা সংশ্লিষ্ট যে আইনে রয়েছে, তা যথেষ্ট ও সঠিক। এজন্য আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের প্রয়োজন নেই। ২০০৪ সালে আপিল বিভাগ সরকারের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। তবে হাইকোর্টের ওই নির্দেশনাগুলো তখন স্থগিত করেনি আপিল বিভাগ। ২০১০ সালের ১১ আগস্ট মামলাটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে। তখন আদালত হাইকোর্টের নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা সরকারের কাছে জানতে চায়। কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও ওই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা আদালতকে জানাতে পারেনি সরকার।

হাইকোর্টের নির্দেশনাগুলো : ক. আটকাদেশ (ডিটেনশন) দেওয়ার জন্য পুলিশ কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে পারবে না। খ. কাউকে গ্রেফতার করার সময় পুলিশ কর্মকর্তা তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবেন। গ. গ্রেফতারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের কারণ জানাতে হবে। ঘ. বাসা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য স্থান থেকে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহক মারফত বিষয়টি জানাতে হবে। ঙ. গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে তার পছন্দমতো আইনজীবী ও নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে পরামর্শ করতে দিতে হবে। চ. গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশক্রমে কারাগারের অভ্যন্তরে কাচ নির্মিত বিশেষ কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। ওই কক্ষের বাইরে তার আইনজীবী ও নিকটাত্মীয় থাকতে পারবে। ছ. জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ওই ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে। ট. পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল বোর্ড গঠন করবেন। বোর্ড যদি বলে ওই ব্যক্তির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, তাহলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং তাকে দণ্ডবিধির ৩৩০ ধারায় অভিযুক্ত করা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

November 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  



© All rights reserved © dailychironton.com
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo