হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘনসহ অবমাননার ঘটনায় সিলেটের সাবেক ভারপ্রাপ্ত জেলা রেজিস্ট্রার প্রভাকর সাহা ও অফিস সহকারী আবদুর রবকে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে কারণ দর্শাতে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তলব করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার এই আদেশ কপি অভিযুক্ত আসামি দুজনের হাতে এসে পৌঁছেছে। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফ ইমন ও জাফর আহমদের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ বছর যাবৎ সিলেট সাব রেজিস্ট্রি অফিসে আইনজীবী সহকারী সমিতির সদস্যরা দলিল রেজিস্ট্রি করে আসছেন। ১৯৯০ সালে এসে দলিল লেখক সমিতি অনুমোদন পায়। ওই সময়ে দলিল লেখকরা দাবি করেন, দলিল লেখকের বাইরে কেউ দলিল রেজিস্ট্রি করতে পারবে না। তখন এই দাবির বিরুদ্ধে সিলেটের আদালতে দুটি মামলা (নম্বর-১৭৪/৯০ ও নম্বর-১৩৬০/৯১) দায়ের করে আইনজীবী সহকারী সমিতি। এই দুটি মামলার রায়ে আইনজীবী সহকারী সমিতি ও দলিল লেখক সমিতি আংশিক রায় পায়। এতে ২০০০ সালে সিলেট আইনজীবী সহকারী সমিতি হাইকোর্টে একটি আপীল মামলা (নম্বর-১০৪৪) দায়ের করেন। পরে ২০০৫ সালে আইনজীবী সহকারী সমিতি হাইকোর্টে দলিল লেখার বৈধতা চেয়ে অপর একটি মামলা (নম্বর-৪৮৪২) দায়ের করেন। এই দুটি মামলার রায়ে দলিল রেজিস্ট্রির ব্যাপারে বৈধ অনুমতি পায় সিলেট আইনজীবী সহকারী সমিতি। হাইকোর্টের এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট আইনজীবী সহকারী সমিতি দলিল রেজিস্ট্রি করার কাজ করে আসছিল। কিন্তু চলতি বছরের ১৭ ফেব্রয়ারি সিলেট জেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রি করতে দেননি সাবেক সাব রেজিস্ট্রার প্রভাকর সাহা ও অফিস সহকারী আবদুর রব। এসময় আইনজীবী সহকারীরা হাইকোর্টের আদেশ দেখালে তিনি হাইকোর্টকে অবমাননা করে আদেশ লঙ্ঘন করেন। এ ঘটনায় হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা (নম্বর-৩১৭) করে আইনজীবী সহকারী সমিতি। এই মামলায় হাইকোর্ট প্রভাকর সাহা ও আবদুর রবকে হাইকোর্টে হাজির হয়ে কারণ দর্শাতে বলেছেন।
জানতে চাইলে জেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সহকারী আবদুর রব বলেন, হাইকোর্টের আদেশ পেয়েছি। আমি হাজির হয়ে কারণ ব্যাখ্যা করবো। প্রভাকর স্যার বর্তমানে পটুয়াখালি আছেন। ওনার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই।
এ বিষয়ে সিলেট আইনজীবী সহকারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন আফাজ বলেন, হাইকোর্টের আদেশ পেয়েই আইনজীবী সহকারীরা দলিল রেজিস্ট্রি করে আসছেন। কিন্তু প্রভাকর সাহা কাজে শুধু বাধাই দেননি, তিনি হাইকোর্টেকে অবমাননাও করেছেন।
Leave a Reply