ক্রীড়া প্রতিবেদক : একটু দেরিতে হলেও তাঁর সার্ভিস পেতে চায় সাসেক্স। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয় দলের স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ মারিও ভিল্লাভারায়েন গতকাল যা বললেন, তাতে মুস্তাফিজুর রহমানের জন্য এই কাউন্টি দলটির অপেক্ষা আরো বেড়েই গেল। পুরোপুরি ফিট হতে যে এ পেসারের আরো অন্তত এক মাস লাগবে।
অর্থাৎ বাংলাদেশের বাঁহাতি এ বোলিং বিস্ময় মাঠে নামার মতো অবস্থায় পৌঁছাবেন জুলাইয়ের মাঝামাঝি। তাই হলে এই মৌসুমের প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লিগে মোহামেডানের হয়ে তাঁর মাঠে নামার কোনো সম্ভাবনাই আর রইল না। অবশ্য তত দিনে প্রিমিয়ার লিগ শেষ হয়ে গেলেও হচ্ছে না ইংল্যান্ডের ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট এবং রয়্যাল লন্ডন ওয়ানডে কাপ। এই দুটি আসরে খেলার জন্যই গত মার্চে মুস্তাফিজকে চুক্তিবদ্ধ করেছিল সাসেক্স। ২০ আগস্ট শেষ হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি আসরটিতে ইতিমধ্যে চার ম্যাচ খেলে পাওয়া দুই জয়ে সাউথ গ্রুপ পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে তারা। তবে ওয়ানডে কাপে অবস্থা মোটেও সুবিধার নয়। চার ম্যাচের তিনটিতেই হেরে বসে আছে। ওয়ানডে টুর্নামেন্টে সাসেক্সের পরের ম্যাচ ২৪ জুলাই গ্লস্টারশায়ারের বিপক্ষে।
পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় প্রত্যাশিত সাড়া অব্যাহত থাকলে মুস্তাফিজের পুরোপুরি ফিট হয়ে ওঠার সময়টাও এর কাছাকাছিই। আইপিএল থেকে ফেরার পর গত ৯ জুন থেকে শুরু হয়েছে সাতক্ষীরার এ তরুণের পুনর্বাসন। এর ঠিক এক সপ্তাহ পর সংবাদমাধ্যমকে মুস্তাফিজের অগ্রগতির বিষয়টি জানালেন ভিল্লাভারায়েন। জাতীয় দলের ট্রেনার বললেন, ‘পূর্ণাঙ্গভাবে সেরে ওঠার আদর্শ সময় হলো এক মাস। তবে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় ওর শরীর কেমন সাড়া দেয়, সেটি আমরা আগামী সপ্তাহেও দেখব। এবং এর ভিত্তিতেই এগোব।’ শ্রীলঙ্কান ট্রেনার অবশ্য এ কথাও বলতে ভোলেননি যে, ‘আজকে পর্যন্ত অবশ্য সামান্য উন্নতিই হয়েছে। ওর ওপর দিয়ে লম্বা এক মৌসুম খেলার ধকলই গেছে। এ জন্যই ওকে নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। গতকালই (বুধবার) ওর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি যে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সামনে আরো দেখব। এখন পর্যন্ত ও ভালোই সাড়া দিচ্ছে।’
গত বছরের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকে ২০ বছর বয়সী মুস্তাফিজের ওপর দিয়ে অবশ্য টানা ক্রিকেটের ধকল কম যায়নি। যে জন্য কাঁধের ইনজুরিতে গত ফেব্রুয়ারিতে মিস করেছেন প্রথমবারের মতো হওয়া পাকিস্তান সুপার লিগও (পিএসএল)। এশিয়া কাপ কিংবা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও পুরোটা খেলা হয়নি। বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরেই আবার ছুটতে হয়েছে আইপিএল খেলতে। সেখানে চ্যাম্পিয়ন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে ১৭ ম্যাচের ১৬টিতেই খেলেছেন মুস্তাফিজ, ৬.৯ ইকোনমি রেটে নিয়েছেন ১৭ উইকেটও। যা টুর্নামেন্টে অন্তত ১০টি ম্যাচ খেলা বোলারদের মধ্যে সেরা ইকোনমি রেটও। সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার নিয়ে দেশে ফেরার পর তিনি নিজেও ক্লান্তি আর অবসাদে ইংল্যান্ডে যেতে অনীহা প্রকাশ করছিলেন ঘনিষ্ঠদের কাছে। যদিও সামনের বছর ইংল্যান্ডেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বলে জাতীয় দলের কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে মনে করেন সুস্থ থাকলে মুস্তাফিজের অবশ্যই সাসেক্সের হয়ে খেলতে যাওয়া উচিত। অবসাদ ভুলে নিজেকে পুরোপুরি ফিট করে তোলার জন্য আরো একটি মাস তো পাচ্ছেনই।
Leave a Reply