শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :::
ডেইলি চিরন্তন অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য সিলেটসহ দেশ বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা ইমেইলে যোগাযোগ করুন
শিরোনাম ::
শিশু মুনতাহাকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়,গ্রেপ্তার ৪ রেকর্ড গড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন জো রোগান আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ২ শিক্ষকসহ ৯ জন বহিষ্কার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার কোন শিক্ষায় বড় করছেন মেয়েকে, জানালেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের ৬ষ্ট প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদজাপন ‘মাজার ভাঙচুর করে সুন্নি জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না’ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তা পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের মেসির মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মায়ামি কোচ বন্যায় আরো মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় প্রাথমিকের ‘শপথ বাক্য’ থেকে বাদ গেল বঙ্গবন্ধুর অংশ অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন দপ্তর পেলেন নোবেল বিজয়ী থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য উপদেষ্টা যারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ আশঙ্কা ছিল এ ধরনের একটা আঘাত আসবে : প্রধানমন্ত্রী
অবশেষে দাফন হলো ফাতেমার লাশ

অবশেষে দাফন হলো ফাতেমার লাশ

19737_f5ছয় মাস আগে মৃত্যু হয় ফাতিমার (২৮)। অস্বাভাবিক মৃত্যু। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয় ‘আত্মহত্যা’। কিন্তু, তার পরিবারের অভিযোগ, হত্যা করা হয়েছে ফাতিমাকে। ফাতিমার ভাই আদালতে মামলা করেছেন এই ঘটনায়। আদালত নির্দেশ দেন কবর থেকে তুলতে হবে লাশ। পুনরায় করতে হবে ময়নাতদন্ত। মৃত্যুর সাড়ে চার মাস পর কবর থেকে ওঠানো হয় ফাতিমার লাশ। লাশ আর ফিরছিল না কবরে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পড়ে ছিল লাশটি । এক মাসেরও বেশি সময় ধরে হচ্ছিল না ময়নাতদন্ত। এর মধ্যে মঞ্চস্থ হয়েছে নানা নাটক। পুনঃময়নাতদন্তের জন্য বোর্ড গঠিত হয়েছে দুই দফায়। কিন্তু হয়নি। কর্তৃপক্ষ বলেছে, আইনি জটিলতার কারণে বিলম্ব হচ্ছে। আর বাদীপক্ষের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবেই বিলম্ব করা হয়েছে। সূত্র জানায়, রাজশাহীর তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়নের আজিজপুর গ্রামের গৃহবধূ ফাতিমা। তিনি ছিলেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ বজের মেম্বারের তৃতীয় স্ত্রী। বৃদ্ধের সঙ্গে ফাতেমার বিয়ে হয় ২০০৫ সালে। তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর। ওই বৃদ্ধের রয়েছে ব্যাপক সম্পদ, জমিজমা ও ক্ষমতা। তিনি এলাকার ইউপি মেম্বারও ছিলেন। ফলে দাপট তার অন্যরকম। তার আগের দুই স্ত্রীর রয়েছে একাধিক পুত্রসন্তান। ফাতেমার ছিল এক কন্যা সন্তান। কিন্তু, পানিতে ডুবে ওই মেয়ের মৃত্যু হয় তিন বছর আগে। ফলে সতীনের সংসারে ফাতিমা ছিলেন একা। স্বামী ও সতীনের সন্তানেরা দীর্ঘদিন ধরেই নির্যাতন করছিল তাকে। শারীরিক ও মানসিক নানাভাবেই চলছিল নির্যাতন। দরিদ্র ফাতিমার কিছুই করার ছিল না এর বিরুদ্ধে। এরই জের ধরে ৩১শে জানুয়ারি ফাতিমাকে ঘরের মধ্যে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাকে ঘরের মধ্যে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হয়। পরদিন ভোরে তানোর থানার ওসি-তদন্ত আব্দুস সবুর ও এসআই গোলাম মোস্তফার উপস্থিতিতে উদ্ধার হয় ফাতেমার লাশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। রামেক’র ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. এনামুল হকের দেয়া ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয় ফাতেমা আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু, ২১শে মার্চ ফাতেমার ভাই আবু বক্কর বাদী হয়ে আমলি আদালত নং-৩, রাজশাহীতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ফাতেমার স্বামী বজের মেম্বার, চার সৎ ছেলেসহ মোট সাত জনকে আসামি করা হয়। বাদীর অভিযোগ, সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে স্বামী ও সৎ-ছেলেরা হত্যা করেছে ফাতিমাকে। মামলার আর্জি অনুসারে, ফাতিমা তার বোনের বাড়িতে দাওয়াতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার পর তাকে মেরে বাঁশের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় আবু বক্কার তানোর থানায় মামলা করতে গেলে তার মামলা নেয়া হয়নি বলেও তিনি অভিযোগ করেন। পুলিশ মামলা না নেয়ায় তিনি পরে আদালতে মামলা করেন। এ জন্য মামলা করতে অনেক দেরি হয় বলেও তিনি আরজিতে উল্লেখ করেন। আদালতে মামলার শুনানিতে বলা হয়, লাশ উদ্ধারের দিন অনেকেই গ্রামে ছিলেন না। ফলে তারা পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত লাশ উত্তোলনের জন্য ইউএনওকে নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে দাফনের প্রায় তিন মাস পর ১৫ই মে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রশিদের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তা ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোও হয়। কিন্তু, তারপর সেই তদন্ত আর শেষ হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লাশ পুনঃময়নাতদন্তের জন্য রামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে পূর্বের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. এনামুল হককে দায়িত্ব দেয়া হয়। একই লোককে দিয়ে পুনরায় ময়নাতদন্তের কমিটি করার বিরুদ্ধে আপত্তি জানানো হয় বাদীর পক্ষ থেকে। পরে ডা. শামীমা ইসলাম নামের ফরেনসিক বিভাগের একজন নারী চিকিৎসককে বোর্ডে রাখা হয়। কিন্তু তিনি অসম্মতি জানান। পরে রামেক কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশনা চেয়ে রাজশাহী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করেন। তার জবাব দেয় আদালত। তারই ভিত্তিতে ৮ই জুন ফরেনসিক বিভাগের সাবেক দুই অধ্যাপক ও রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপকের সমন্বয়ে তিন সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করা হয়। ওই বোর্ডে ছিলেন অধ্যাপক মো. মুনসুর রহমান, অধ্যাপক মো. এমদাদুর রহমান ও মো. শরীফ চৌধুরী। গত ১৫ই জুন ওই বোর্ডের রিপোর্ট দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু, এখন আবার নতুন জটিলতার কারণে পিছিয়ে গেল তা। অধ্যাপক মো. মুনসুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, আদালত পুনঃময়নাতদন্ত ও ডিএনএ টেস্ট করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু যেহেতু এটি হত্যার অভিযোগ। এখানে ধর্ষণের মতো কিছু ঘটেনি। তাই ডিএনএ টেস্ট দরকার ছিল না। এ মর্মে তিনি লিখিত মতামত দিয়ে আদালতে নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেছিলেন। গত ১৯শে জুন পর্যন্ত ওই নির্দেশনা আসে। তার প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত ময়নাতদন্ত হয় ডিএনএ টেস্ট ছাড়াই। গত সোমবার ছয় মাস পর ফাতেমার লাশ ফের দাফন করা হয় তানোরে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাসুম হাবিব জানান, ডা. এনামুল হক আগে যেহেতু ওই লাশের ময়নাতদন্ত করেছেন তাই তাকে নেয়ার প্রশ্নই আসে না। একজন নারী চিকিৎসককে নেয়া হয়েছিলো কিন্তু তার কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় বাদ দেয়া হয়েছে। পরে ফরেনসিক বিভাগে বর্তমানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় আদালতের পরামর্শক্রমে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপকের সমন্বয়ে বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এ জন্য কিছুটা সময় গেছে। এদিকে ওই মামলার বাদীকে নানাভাবে হুমকি দেয়ার অভিযোগ এসেছে। তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও রয়েছে অর্থ দাবি করাসহ নানা অভিযোগ। মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী জানান, কবর থেকে লাশ উত্তোলনের জন্যও বাদীপক্ষের কাছে অর্থ দাবি করেছিল তদন্ত কর্মকর্তা। এ জন্য আদালতের কাছে তিনি পিটিশনও করেছিলেন। পরে বিচারক ওই তদন্ত কর্মকর্তাকে শাসিয়েছেন। মামলার আইনজীবী এড. শফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকার মানুষ বলছে যে, ফাতেমাকে হত্যা করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মামলার আসামিদের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আসামিরা নানা ভাবে এলাকায় হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

November 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  



© All rights reserved © dailychironton.com
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo