টাঙ্গাইলের চমচম কিংবা নাটোরের কাঁচাগোল্লা। পাবনার ইলিশপেটি বা রাজশাহীর রসকদম। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী, বগুড়ার দই, মুক্তাগাছার মণ্ডা অথবা দেশের ঐতিহ্যবাহী অপূর্ব স্বাদের যে পদেরই মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করুক না কেন, সেটা এখন সিলেট নগরে বসেও পাওয়া সম্ভব। আর এর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে ‘মিঠাই বাড়ি’ নামের একটি মিষ্টি বিপণন প্রতিষ্ঠান।
নগরের পশ্চিম শাহী ঈদগাহ এলাকার নূর ম্যানসনে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা তিনজন নারী। তাঁরা হলেন রোজী ইসলাম, শাম্মী আহমদ ও আফসানা আইরিন। প্রত্যেকেই স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। চাকরির কোনো চেষ্টা না করে নিজেরাই ২০১৪ সালে গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। তাঁদের বাইরে এ প্রতিষ্ঠানে এখন আরও পাঁচজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
‘মিঠাই বাড়ি’তে সার্বক্ষণিক সময় দেন রোজী ইসলাম। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর শুধু ভিন্নতার কারণে নগরবাসীর কাছে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। নাটোর, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, পাবনা, বগুড়া, মুক্তাগাছাসহ দেশের নানা প্রান্তে তৈরি ঐতিহ্যবাহী সব মিষ্টি প্রায় প্রতিদিনই এখানে আনা হয় এবং নগরবাসীর কাছে তা বিক্রি করা হয়।
উদ্যোক্তারা জানান, বর্তমানে দোকানটিতে ২০ পদের মিষ্টি পাওয়া যায়। পাবনা ও টাঙ্গাইলের খাঁটি ঘিও রয়েছে। এর বাইরে নানা ধরনের সিলেটি ঐতিহ্যবাহী পিঠা, দুধ ও নারকেলের সন্দেশ, নকশি পিঠাও এখানে বানিয়ে বিক্রি করা হয়। এরই মধ্যে দুই শতাধিক স্থায়ী গ্রাহকও তৈরি হয়ে গেছে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুনাম ও প্রসার পাওয়ায় উদ্যোক্তারা এখন নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় আরেকটি শাখা করার পরিকল্পনা করছেন।
সম্প্রতি ‘মিঠাই বাড়ি’তে মিষ্টি কিনতে এসেছিলেন আলী আকবর নামের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক চাকরিজীবী। তিনি বলেন, ‘মিষ্টির গুণগতমান ভালো থাকায় গ্রাহকদের ভিড় সার্বক্ষণিক লেগে থাকে। অপরাপর মিষ্টির দোকানের চেয়ে এ প্রতিষ্ঠানটির ভিন্নতাই হচ্ছে এখানে দেশের নানা প্রান্তের ঐতিহ্যবাহী সব মিষ্টি পাওয়া যায়। ভিন্নতার কারণেই গায়েহলুদ, বিয়ে বাড়ি কিংবা কোনো সামাজিক উৎসবে এখান থেকেই মিষ্টি কিনি।’
‘মিঠাই বাড়ি’র অন্যতম উদ্যোক্তা রোজী ইসলাম বলেন, ‘মিষ্টির ব্যবসায় সচরাচর মেয়েরা আসেন না। এ ছাড়া এখন মিষ্টির ব্যবসায় একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এ অবস্থায় আমরা প্রতিষ্ঠানটিই খুলেছি কেবল সিলেটের মানুষকে দেশের নানা অঞ্চলের মিষ্টির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য।’ সুত্র: প্রথম আলো
Leave a Reply