লাইভ টেলিকাস্ট (১)
বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পাল
হায় ভগবান ওরা আমাদের সন্তান।
ওদের রক্তে আপনার আমার সকলের উত্তরাধিকার।
ওরা অফিসে অফিসে বসে আছে,
আমাদের সেবা করবে বলে।
কিন্তু হায়! দরখাস্ত ফাইল বন্দি করে রেখে দিয়ে,
অবশ্যই কাজটি করে দিব বলে
মাস যাবে বছর যাবে,
আপনার ন্যায্য পাওনা পেয়ে যাবেন এই আশায়-
দশ বার বারো বার ঘোরবেন লাড্ডুর মতো।
তবুও যদি আপনার হয়না হুঁশ
পিয়নকে দিয়ে বলাবে-
বুঝেননা যুগ? দিতে হবে ঘুষ।
ঘুষ শুধু অফিসে নয়,
কোর্ট-কাছারি, উকিল-ডাক্তারদেরও কাছে।
মামলা যদি ঠুকেছেন একটি
তবে ওরা বলবে-
মামলাটি আপনি পেয়ে যাবেন।
তবে আমাকে দিতে হবে কমপক্ষে বিশ হাজার টাকা ফি।
সাহসী হয়ে আপনি যদি বলেন, কতদিন লাগবে উকিল সাহেব?
ওখানে তো আমার প্রবাসে থাকা ছেলের-
তুলতে হবে একটি ঘর।
উত্তর আসবে মামলাটি পেতে হয়ত লাগবে ছ’মাস ন’মাস।
তারিখের পর তারিখ,
মামলাটি নিয়ে পাঁচ বছর হেঁটে হেঁটে-
টাকার হিসেব উঠবে কোথায়।
ক্ষুব্ধ হয়ে বলবে ওরা
সাহেব কোর্টে না উঠলে করার কি?
ওরাও সাহেব সাহেবও সাহেব আপনার আর করার কি?
ওরা ডাক্তার, আমরা রোগীর টাকায় তৈরী দালানে
লেখাপড়া করে ডাক্তার বেটা বলে কি জানেন?
বলে অ.ঈ, ই.ঈ, উ.ঈ, ঊ.ঈ.এ, ী-ৎধু, ু, ু আনলে
তবে ঔষধ লিখে দিচ্ছি।
আপনি বলবেন কি হয়েছে ডাক্তার সাহেব?
কঠিন রোগ কি পেলেন?
ওরা বলে কিছু পাওয়া যায়নি।
পেলে আপনার কি হত!! ধমক দিয়ে বলেন,
ঔষধ লিখে দিচ্ছি।
কমলে ভালো।
না কমলে আবার আসতে হবে পনের দিনের মধ্যে-
আগের টাকার অর্ধেক ফি আবার দিতে হবে।
ওরা আমাদের সন্তান হায় ভগবান!
ওরা বেঁচে থাকুক- ওরা যে আমাদের সন্তান।
ওরা যদি আজ গুলশানে না গিয়ে-
আসত যদি ক্লিনিকে-অফিসে-পুলিশে, স্কুল-কলেজে
তবুওতো বলতে পারতাম ভগবান-
ওরা আমাদের সন্তান।
সন্তান আমাদের হে ভগবান!
আজ ঈদের দিনেও ওরা শোলাকিয়ায়।
হায়! হায়! হায়! ভগবান! ভগবান!
কতটুকু দেশপ্রেমিক হলে এমন লেখা যায়, জানিনা। অনেক শক্তিশালী কবিতা।