সাদা পোশাকে বেশি কার্যকর, রঙিন পোশাকে এখনও পুরোপুরি জমাতে পারেননি! ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত দুই পরিসর মাতাতে যখন প্রাণপণ চেষ্টা করছিলেন, তখনই পাগলা হাওয়ার ঝাপটা লেগে টালমাটাল হয়েছেন। এর পর কোমর সোজা করে দাঁড়ালেও শক্ত ভিত গড়ার সময় না হলেও জিম্বাবুয়ে সিরিজে ভালো খেলে বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেন মুমিনুল হক। শিষ্যের কাছে হেরে গেছেন প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চাকরিতে আনুষ্ঠানিক যোগ দেয়ার পর হাথুরুসিংহে বিশ্বকাপে মুমিনুলকে না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। জাতীয় দল নির্বাচকরা তাজ্জব বনে গিয়েছিলেন কোচের কথা শুনে। নির্বাচকরা তখন কোচের প্রবল বিরোধিতা না করে সময়ের হাতে ছেড়ে দিয়েছিলেন। যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ করে দিতে মুমিনুলকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে পাঠান তারা। কিন্তু কোচের সুনজরে না থাকায় ওয়ানডে সিরিজে খেলানো হয়নি তাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজে ভালো পারফরম্যান্স করে জাতীয় দলে নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণে সক্ষম হন বাঁ-হাতি এ ব্যাটসম্যান। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কোচেরও ভুল ভাঙে, উচ্চতার সীমাবদ্ধতাকে দুর্বলতা ভেবে যার বিরোধিতা করেছিলেন তাকেই এখন আদর করে মিনি ডাকেন হাথুরুসিংহে। মুমিনুল নিজের অপূর্ণতাকে বিশ্বকাপে পূর্ণতা দিতে চান, ‘যেটা আমি পারিনি এত দিনে, সেটা করার চেষ্টা করব। নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করব সে জায়গাটায়।’
টেস্টে হাজার রান আর চার সেঞ্চুরি থাকলও, ওয়ানডেতে বড় ইনিংস নেই মুমিনুলের। ২৪ ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি মাত্র তিনটি। অপূর্ণতা বলতে ৫০ ওভারের ম্যাচে কোনো সেঞ্চুরি না পাওয়া। বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে এবার অধারাকে ধরতে চান বাঁ-হাতি এ ব্যাটসম্যান। মুমিনুল জানান, উপরে ব্যাট করার সুযোগ দিলে রান ইনিংস উপহার দেবেন, ‘যদি ৩ নম্বরে খেলি ইনশাআল্লাহ বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা করব। আর শেষের দিকে খেললে দলের রানটা বড় করার চেষ্টা করব।’
অস্ট্রেলিয়ার বাউন্সি কন্ডিশনে মুমিনুলের জন্য ব্যাটিং কঠিন হবে ভেবেছিলেন হাথুরুসিংহে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে শট বল মোকাবিলা করে কোচের ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছেন বিকেএসপির সাবেক এ ছাত্র। অস্ট্রেলিয়ায়ও যে তিনি মাতাবেন বলার অপেক্ষা রাখে না। কন্ডিশন মাথায় রেখে নিজেকে তৈরি করছেন ২৩ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান। বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে একটু বাউন্স থাকে। চেষ্টা করছি, বাউন্সি উইকেটে নিজেকে মানিয়ে নিতে। মেশিনের বলে এবং অন্যভাবে নিজেকে প্রস্তুত করছি।’ ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বিশ্বকাপ ভেন্যুর খেলাগুলোও দেখছেন মুমিনুল, ‘ওখানে যে খেলাগুলো হচ্ছে সেগুলো দেখছি। কোন বোলার কীভাবে বোলিং করছেন, কোন ব্যাটসম্যান কীভাবে ব্যাটিং করছেন, সেসব আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।’
বাউন্সি কন্ডিশনে রান পেতে ব্যাকফুটে খেলা জরুরি বলেন জাতীয় দলের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান মুমিনুল, ‘নির্দিষ্ট করে বললে ব্যাকফুটে নির্দিষ্ট কিছু শটস আছে কাট-পুল এসব নিয়ে কাজ করছি। কারণ ওই কন্ডিশনে রান করতে হলে পেছনে হেলে ভালো খেলতে হবে। যেটা আগে বলেছি কাট-পুল এগুলো।’ ফিসফাস রয়েছে, শট বলে দুর্বল মুমিনুল। কিন্তু তিনি কী বলেন, ‘আমি ভালো খেললে সবাই বলবেন পুল ভালো খেলি কিনা। আমার অবশ্যই এটা প্রমাণ করতে হবে আমি পুল ভালো খেলি।’
Leave a Reply