প্রথম এমআরআই রিপোর্টেই ইংল্যান্ড থেকে ভেসে আসে দুঃসংবাদ। তবু দ্বিতীয় রিপোর্টের দিকে খুব করে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু সেখানেও তো নেই কোনো সুসংবাদ। মুস্তাফিজুর রহমানের বাঁ কাঁধের ল্যাবরামে ধরা পড়েছে গ্রেড টু টিয়ার। অস্ত্রোপচার করানো ছাড়া তাই খুব একটা বিকল্প আর থাকছে না। সেটি ইংল্যান্ডেই করানো হবে নাকি অস্ট্রেলিয়ায়—সিদ্ধান্ত নেওয়ার বাকি এইটুকুনই।
সাসেক্সের হয়ে ইংল্যান্ড অভিযানের শুরুটা স্বপ্নের মতো হয়েছিল মুস্তাফিজের। চার উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা তিনি, জেতে দল। দ্বিতীয় খেলায় অবশ্য উইকেট পাননি। আর এর পরই তো কাঁধের ব্যথায় কাতর এই পেসার। প্রথম এমআরআই রিপোর্টে সেখানে ফ্লুইড জমে থাকতে দেখা গেছে, কিন্তু টিয়ারের মাত্রা তাতে বোঝা যায়নি। কাঁধের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টনি কোচার এরপর নির্দেশনা দেন মুস্তাফিজের দ্বিতীয় এমআরআই করানোর। টিয়ারের মাত্রা বোঝার জন্য প্রয়োজন ছিল এই দ্বিতীয় পরীক্ষাটির। কাল ওই পরীক্ষার ফলে সেই দুঃসংবাদ পাওয়ার কথা জানালেন বিসিবি পরিচালক জালাল ইউনুস, ‘দ্বিতীয় এমআরআইতে মুস্তাফিজের কাঁধে ধরা পড়েছে গ্রেড টু। এখন আমাদের চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে বোর্ড সিদ্ধান্ত দেবে ওর অস্ত্রোপাচার লাগবে কি না। কারণ আমরা আগে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে চাই, এই অবস্থায় অস্ত্রোপচারই সবচেয়ে ভালো সমাধান।’ গ্রেড ওয়ান টিয়ার হলে সেটি ইনজুরি ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে খেলা যায়। কিন্তু গ্রেড টু, গ্রেড থ্রি, গ্রেড ফোর এসব ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের বিকল্প নেই। জালাল নিশ্চিত করে কিছু না বললেও সে ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন, ‘বলা যেতে পারে, দ্বিতীয় পরীক্ষার রিপোর্টের পর মুস্তাফিজের অস্ত্রোপচার করানোর প্রয়োজন আগের চেয়ে বেড়েছে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকেই আলো ছড়াচ্ছেন মুস্তাফিজ। মাতিয়ে এসেছেন আইপিএলও। তাঁর কাটারে বিভ্রান্ত নামিদামি কত ব্যাটসম্যান! আর সেই একই অ্যাকশনে বিভিন্ন ধরনের ডেলিভারি করতে গিয়ে কাঁধের এই সমস্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাল দ্বিতীয় এমআরআই রিপোর্টের পর তাঁর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। তবে সেটি অস্ট্রেলিয়া নাকি ইংল্যান্ডে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানান জালাল, ‘যদি নিশ্চিত হই যে ওর অস্ত্রোপচার লাগবেই, এরপর দেখতে হবে কোথায় করাব। অস্ট্রেলিয়া নাকি ইংল্যান্ডে? অস্ট্রেলিয়ায় করাতে হবে মুস্তাফিজকে দেশে আসতে হবে, ভিসা প্রক্রিয়া শেষ করে সে দেশে যেতে অন্তত সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগবে। আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, অস্ত্রোপচার লাগলে সেটি ইংল্যান্ডে করিয়ে একেবারে দেশে ফেরাই ভালো। যত দ্রুত সম্ভব আমরা তা করাতে চাইছি।’ আর সার্জনের ছুরির নিচে যাওয়া মানেই তো অন্তত মাস ছয়েকের জন্য মুস্তাফিজের ক্রিকেট থেকে ছিটকে যাওয়া!
Leave a Reply