এখানে নয়, ওখানে নয়, অন্য কোনও খানে!
এই সৌরমণ্ডলের বাইরে এ বার ‘প্রাণ’ খোঁজার আরও বেশ কয়েকটি নতুন ‘জায়গা’ পেয়ে গেলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। আর তা একটা-দু’টো নয়। ১০৪টি। যারা সবাই ভিন গ্রহ। এই ব্রহ্মাণ্ডে ‘প্রাণের সম্ভাব্য জায়গা’ খুঁজতে মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছিল ‘কেপলার’ মহাকাশযান। প্রাথমিক ভাবে, তার ‘চোখে’ ধরা পড়েছিল ১৯৭টি মহাজাগতিক বস্তু। তার মধ্যে ১০৪টি যে সত্যি-সত্যিই ভিন গ্রহ, বহু পরীক্ষার পর নাসা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে। এই ১০৪টির মধ্যে এমন ৪টি ভিন গ্রহের সন্ধান মিলেছে, যেগুলো আমাদের পৃথিবীর মতোই পাথুরে গ্রহ বা ‘রকি প্ল্যানেট’। পৃথিবী থেকে ১৮১ আলোকবর্ষ দূরে, ‘অ্যাকোয়ারিয়াস’ নক্ষত্রপুঞ্জে। বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক অনুমান, ওই ৪টি ভিন গ্রহে ‘প্রাণ’ থাকলেও থাকতে পারে!
পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতির মতো আমাদের সৌরমণ্ডলের গ্রহগুলি ছাড়াও আরও অনেক অনেক গ্রহ রয়েছে অন্য অন্য সৌরমণ্ডলে। আমাদের ‘মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি’তে, অন্য অন্য গ্যালাক্সিতেও। অন্য সৌরমণ্ডলের এই গ্রহগুলিকেই আমরা বলি ‘ভিন গ্রহ’ (এক্সো-প্ল্যানেট্স)।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ব্যাসের নিরিখে সদ্য আবিষ্কৃত ৪টি ভিন গ্রহ পৃথিবীর ব্যাসের চেয়ে গড়ে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি। যার মানে, ওই ৪টি ভিন গ্রহই পৃথিবীর থেকে বহু বহু গুণ বড়। আর সেগুলো পাক মারছে একটি বামন নক্ষত্র ‘কে-টু-সেভেন্টি টু’-কে ঘিরে। যা ভরের নিরিখে আদতে একটি ‘এম’ শ্রেণির নক্ষত্র বা তারা। মানে, ওই ভিন গ্রহগুলো যে তারা বা নক্ষত্রটিকে ঘিরে চক্কর মারছে, সেই তারাটি আমাদের সূর্যের ভরের অর্দ্ধেকের কম তো বটেই, ঔজ্জ্বল্যের নিরিখেও সেই তারা বা নক্ষত্রটি আমাদের সূর্যের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে।
যেটা আরও সুখের খবর আমাদের কাছে, তা হল, সদ্য আবিষ্কৃত ভিন গ্রহগুলো খুব একটা দূরে নেই পৃথিবীর। আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহটির থেকে রয়েছে মাত্র ১৮১ আলোকবর্ষ দূরে। ফলে, সেই গ্রহগুলোতে ‘প্রাণ’ সন্ধানের কাজটা ততটা দুরূহ না-ও হতে পারে। তবে পৃথিবী যেমন তার নিজের কক্ষপথে লাট্টুর মতো ঘোরে ২৪ ঘণ্টায় এক বার করে, এই ভিন গ্রহগুলিও তেমন তাদের নিজেদের কক্ষপথে লাট্টুর মতো ঘোরে কখনও সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায় এক বার, কখনও-বা ২৪ দিনে।
Leave a Reply