ভারতের আসাম রাজ্য থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ হয়ে বাংলাদেশে আসা বুনোহাতিটি উদ্ধারে ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
অবস্থান পরিবর্তন না করলে জামালপুরের সরিষাবাড়ী থেকে বৃহস্পতিবার হাতিটি উদ্ধারে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসিম মল্লিক।
এরই মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় আসাম থেকে বন কর্মকর্তা, হাতি বিশেষজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত মাহুতসহ একটি দল হাতি উদ্ধারে বাংলাদেশে পৌঁছেছে।
জুন মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশে ঢোকার পর বিভিন্ন অঞ্চল হয়ে হাতিটি এখন জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বানের পানিতে ঘুরছে। সেখান থেকেই ভারত ও বাংলাদেশর তিনটি ইউনিটের ২০ সদস্যের একটি দলের যৌথ উদ্যোগে হাতিটি উদ্ধার করা হবে।
হাতিটিকে নজরে রাখছে উপজেলা প্রশাসন, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান সাফারী পার্কের ইউনিট, ময়মনসিংহ বন বিভাগ ও ঢাকা প্রাণী সম্পদ অধিদফতরের একটি প্রতিনিধি দল।
ঢাকার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসিম মল্লিক সমকালকে জানান, হাতিটি দীর্ঘদিন বন্যার পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে। তাকে নজরে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে যেখানে রয়েছে সে অবস্থান পরিবর্তন না করলে বৃহস্পতিবার হাতিটি উদ্ধারে দুই দেশীয় তিনটি ইউনিটের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল কাজ শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী ও বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট সূত্র জানিয়েছে, বন্য হাতিটি দীর্ঘদিন ধরে পানির মধ্যে থাকায় ও খাবার না পাওয়ায় ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে।
প্রতিদিন হাতিটিকে উৎসুক মানুষ ডাঙ্গায় উঠতে না দেওয়ায় সারাদিন বানের পানিতেই অবস্থান করছে। ডাঙ্গায় ওঠার জন্য হাতিটি প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মাইল বানের পানিতে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যায় বুনোহাতিটি সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের দাসের বাড়ী গ্রাম এলাকায় বানের পানিতে আখের খেতে অবস্থান করছিল।
বাংলাদেশে ঢোকার পর গত ২৭ জুন থেকে হাতিটি ৯ জুলাই পর্যন্ত কুড়িগ্রামের রৌমারিতে ছিল। এরপর গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ হয়ে বুনোহাতিটি জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জামালপুরে অবস্থান করছে।
হাতিটি সর্বশেষ সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার মনসুর নগর ইউনিয়নের দুর্গম ছিন্নার চর থেকে সরিষাবাড়ীতে আসে।
এর আগে শনিবার হাতিটিকে উদ্ধারের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান সাফারি পার্কে দায়িত্বরত মাহুত কোকিল চন্দ সরিষাবাড়ীতে পৌঁছান। ওইদিন বিকেলে সাফারি পার্কের সাত সদ্যসের আরো একটি দলও সেখানে পৌছায়।
এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোবিন্দ রায়ের নেতৃত্বে প্রাণী সম্পদ অধিদফতরের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল হাতিটি উদ্ধারের জন্য সরিষাবাড়ীতে অবস্থান করছে।
Leave a Reply