ভারতের আসাম থেকে আসা বুনোহাতিটিকে অবশেষে অচেতন করা সম্ভব হয়েছে।
টানা ছয়দিন চেষ্টার পর বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের কয়রা গ্রামে ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে হাতিটিকে অচেতেন করা হয়। স্থানীয় রহিম মণ্ডলের বাড়ির পেছনে হাতিটি এখন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে উদ্ধারকারী দল।
হাতি উদ্ধাকারী দলের অন্যতম সদস্য ঢাকার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সাবেক ভেটেরিনারি সার্জন তপন কুমার দে সমকালকে বলেন, ‘দুপুরে হাতিটিকে ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে অচেতন করা হয়।’
তিনি জানান, ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে অচেতন করার ওষুধ প্রয়োগের পর হাতিটি বেশ কিছু দূর দৌঁড়ে গিয়ে একটি খালে পড়ে যায়। এরপর শেকল ও রশি দিয়ে টেনে সেটিকে ডাঙায় তোলা হয়।
হাতিটিকে আপাতত সেখানে একটি আম গাছে বেঁধে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এরপর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সার্জন তপন কুমার দে হাতিটির শরীরে চেতনা ফেরার ওষুধ প্রয়োগ করেন। উদ্ধারকারী দলের কর্মকর্তারা এখন হাতিটি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
এর আগে সকালে বুনোহাতিটিকে আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই আটকে ফেলার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল উদ্ধারকারী দল।
গত জুনের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশে আসার পর নানা জায়গা ঘুরে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের সৈয়দপুরে অবস্থান করছিল হাতিটি।
সর্বশেষ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বুনোহাতিটির দেহে ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে অচেতন করার ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু এ ঘটনায় তাকে অচেন করা সম্ভব হয়নি, বরং ক্ষিপ্ত হয়ে যায় হাতিটি।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সাবেক ভেটেরিনারি সার্জন তপন কুমার দে সমকালকে বলেন, ‘হাতিটি যে স্থানে আছে সেখানে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি থামলেই ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে ড্রাগ প্রয়োগ করে হাতিটি অচেতন করা হবে।’
চীন থেকে আনা ওষুধ দিয়ে এই উদ্ধার কার্য শুরু হবে জানিয়ে তখন তিনি তখন বলেন, ‘অচেতন করার পর বুনোহাতিটিকে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তবে এর আগে বুধবারও অচেতন করতে হাতিটির শরীরে ট্রাঙ্কুলাইজার দিয়ে ওষুধ প্রয়োগের চেষ্টা হয়। এরপর হাতিটি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উদ্মাদের মত ছোটাছুটি শুরু করে।
এদিন হাতিটি উদ্ধার না হওয়ার জন্য উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা পুরোনো যন্ত্রপাতি ও মান্ধাতার আমলের প্রযুক্তিকে দায়ী করেন।
গত ২৮ জুন ভারতের আসাম রাজ্য থেকে বানের পানিতে ভেসে আসা বুনো হাতিটি কুড়িগ্রামের রৌমারী, গাইবান্ধা, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের মুনসুর নগর ইউনিয়নের ছিন্নার চর হয়ে ২৭ জুলাই জামালপুরের সরিষাবাড়ীর কামরাবাদ ইউনিয়নে আসে।
হাতিটি উদ্ধারে বেশ কয়েকদিন ধরেই সরিষাবাড়ীতে অবস্থান করছে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ দল। এর মধ্যে গত সপ্তাহে ভারত থেকে তিনি সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ এসে হাতিটি উদ্ধারের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। ফলে গত মঙ্গলবার তাদের হাতি ছাড়াই দেশে ফিরতে হয়।
Leave a Reply