ডেইলি চিরন্তন:দেহের অন্যান্য অঙ্গের মতো চুলের বৃদ্ধি ও সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার। সঠিক পুষ্টি চুলের গোড়াকে শক্ত করে এবং সুন্দর চুল পেতে সাহায্য করে। আসুন দেখে নিই কোন কোন খাবার থেকে আমরা চুলের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানসমূহ পর্যাপ্ত পরিমানে পেতে পারি।
সামুদ্রিক মাছ ও অধিক তেলযুক্ত মিঠাপানির মাছ: সামুদ্রিক মাছ কিংবা অধিক তেল যুক্ত মিঠাপানির মাছে আমিষ ও ভিটামিন-ডি ছাড়াও প্রচুর পরিমানে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড নামক একটি উপাদান রয়েছে, এই উপাদানটি মানবদেহ নিজে তৈরি করতে পারে না কিন্তু এটি চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের চুলের ৩ শতাংশ এই উপাদানটি দিয়ে তৈরি, এছাড়া এটি আমাদের মাথার চামড়াকে আর্দ্র রাখতেও সাহায্য করে।
বাদাম ও সয়াবিন বীজ: বিভিন্ন ধরনের বাদাম এবং সয়াবিন বীজে প্রচুর পরিমানে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে। এছাড়া এগুলো ভিটামিন-ই এবং বায়োটিন এরও ভালো উৎস। এসব উপাদান আমাদের চুলকে রোদ ও সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।
কলিজা ও মাংস: এসব খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমানে জিংক যা চুলপড়া রোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়া এসব খাবার প্রোটিনের একটি বড় উৎস যা নতুন চুল গজাতে ও চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
মিষ্টি আলু: মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে বেটা-ক্যারোটিন যা মানবদেহে ভিটামিন এ -এর যোগান দেয়। আমাদের দেহের প্রতিটি কোষের সঠিক কার্যকারিতার জন্য ভিটামিন এ প্রয়োজন। এছাড়া এটি মাথার ত্বকে খুশকি ও চুলকানি প্রতিরোধ করে।
ডিম: এটি প্রোটিনের একটি বড় উৎস; এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে জিংক, সেলেনিয়াম, সালফার ও আয়রন। আয়রন চুলের গোড়ায় রক্ত ও অক্সিজেনের সরবরাহ নিশ্চিত করে। এছাড়া আয়রনের অভাবে উদ্ভুত রোগ যেমন এনেমিয়া নারীদের চুল পরে যাবার একটি বড় কারণ।
পালং শাক: এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন, বেটা-ক্যারোটিন, ফলেট এবং ভিটামিন-সি। এসব উপাদান মাথার ত্বকের সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডাল: এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন, প্রোটিন, জিংক এবং বায়োটিন। এসব উপাদান আপনার মাথার ত্বক ও চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পনির, দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার: এসব খাবারে আছে প্রোটিন, ভিটামিন বি-৫ এবং ভিটামিন-ডি। আধুনিক গবেষণা প্রমাণ করে যে, ভিটামিন-ডি চুলের গোড়ার সঠিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
পেয়ারা, পেঁপে ও কমলা: এসব ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি। এছাড়াও লেবু, টমেটো এবং বিভিন্ন টক জাতিও ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-সি। ভিটামিন-সি চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন করার কাজে কৈশিক-জালিকা বা সরু রক্তনালীকে সহায়তা করে। যা চুলের ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
হাঁস-মুরগীর মাংস: এসব মাংস প্রোটিনের উত্তম উৎস। এছাড়াও এতে রয়েছে চুলের স্বাস্থ্য উপযোগী উপাদান যেমন জিংক, আয়রন এবং ভিটামিন-বি।
আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এসব খাবার নিয়মিত ভাবে রাখার চেষ্টা করুণ, এতে করে আপনার নিজের এবং চুলের স্বাস্থ্য দু’ই ভালো থাকবে। তবে মনে রাখবেন, একদিন-এক সপ্তাহ বা এক মাস সময় আপনার চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি প্রকাশের জন্য যথেষ্ট সময় নয়। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেলে আপনার মাথার ত্বক সুস্থ থাকবে, চুলপড়া কমবে এবং স্বাস্থ্যবান নতুন চুল গজাবে।
Leave a Reply