ডেইলি চিরন্তন : স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠির জবাবেই ‘ঘুষ চাওয়ার’ অভিযোগের ‘প্রমাণ’ দেবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। এ নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছে, তারা অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন কি না- সে প্রশ্নও তিনি তুলেছেন।
শুক্রবার বন্দরনগরীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা অভিযোগের প্রমাণ আছে কি না জানতে চাইলে নাছির বলেন, “সবই তো আছে। আমি কি রাস্তার লোক? আমি তো দায়িত্ব নিয়েই কথা বলেছি। দায়িত্ব নিয়ে কথা বলব।”
ঘুষ না দেওয়ায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কম বরাদ্দ পাচ্ছে- মেয়রের এমন অভিযোগে নানা আলোচনা চলছে গত দুইদিন ধরে।
বুধবার এক সভায় তিনি বলেন, ‘দাবি মত’ কর্মকর্তাদের ঘুষ দিলে যেখানে ৩০০ থেকে ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া যেত, সেখানে তা না দেওয়ায় এসেছে মাত্র ৮০ কোটি টাকা।
এরপর বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার বিভাগ চিঠি দিয়ে মেয়রের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দাবি করে। প্রমাণ হাজির করতে তাকে বেঁধে দেওয়া হয় সাত দিন সময়।
শুক্রবার মুসলিম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ এক্স ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শেষে এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন মেয়র নাছির।
কোন মন্ত্রণালয়ের কোন কর্মকর্তা কোন প্রকল্পের জন্য ঘুষ চেয়েছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা চিঠিতে থাকবে।
এর আগে অনুষ্ঠান থেকে বের হওয়ার সময় মন্ত্রণালয়ের দেওয়া চিঠির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে নাছির বলেন, “চিঠিতে ব্যাখ্যা চেয়েছে আর কি। একটা অফিসিয়াল নর্ম আছে না; ওটা তো (ব্যাখ্যা) অবশ্যই দেব। সাত দিনের মধ্যেই দেব।
“আমি আজকে ঢাকা থেকে সকালে ফিরেছি। আজ ও আগামীকাল তো অফিস বন্ধ। অফিসিয়ালি যা করার তা করব।”
অভিযোগের প্রমাণ আছে কি না- জানতে চাইলে মেয়র বলেন, “প্রমাণ কি- যে বলছে সে, যে চাইছে সে, আর কি। প্রমাণ বলতে আবার কি? … তুমি আর আমি যে এখন কথা বলছি- সেটার কি কোনো …. এগুলো চাওয়া মানে তো হলো যে একটা ইয়ে…
“আমি দায়িত্বশীল লোক। দায়িত্বশীল পদে আছি। চিটাগাংয়ের জনগণের দায়-দায়িত্ব আমার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে আস্থায় নিয়েই তো … । চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্বভার তো উনার (প্রধানমন্ত্রীর) নিজের। জাস্ট উনার পক্ষ হয়ে এই কাজগুলো করা।”
উন্নয়ন নিশ্চিত করাকে ‘নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য’ হিসেবে বর্ণনা করে আ জ ম নাছির বলেন, “আমি জীবন দিয়ে হলেও সেটা করব। এই পর্যন্ত এক বছর সময় অতিবাহিত করেছি। শতভাগ, শতভাগ … চুল পরিমাণ কেউ প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারেনি। ”
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে নগরবাসীর ‘একটা আস্থা’ অর্জন করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির বলেন, “আমার উপর নগরবাসীর প্রত্যাশা অনেক। সে প্রত্যাশা পূরণ করা আমার নৈতিক দায়িত্ব।”
‘ঘুষ চাওয়ার’ অভিযোগ তোলার মত বিষয়ে ‘নৈতিক দায়িত্ব’ পালনে পিছপা হবেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নানামুখী আলোচনার প্রতিক্রিয়ায় মেয়র নাছির বলেন, “এ নিয়ে ‘অন্য কিছুর’ প্রশ্ন কেউ যদি অবতারণা করে; আমি মনে করি, সেটা অপরাধ যারা করেন তাদের রক্ষা করা বা আড়াল করার একটা বিষয়।
“অপরাধ যে করে সেটা আমি করলেও আমি অপরাধী। আমি আইনের ঊর্ধ্বে না। যেই করুক … আইনের উর্ধ্বে না।”
Leave a Reply