রাজধানীর বাসাবোয় নিজ ঘরে খুন হওয়া দুই শিশুর মা তানজিন রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার ভোর ৪টার দিকে উত্তর বাসাবোর অন্য একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে শুক্রবার রাতে নিহত দুই শিশু বাবা মাহবুবুর রহমান সবুজবাগ থানায় দুই শিশুর মাকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সবুজবাগ থানার ওসি মো. আব্দুল কুদ্দুস ফকির জানান, মামলার পর উত্তর বাসাবোর একটি বাড়ি থেকে শিশুদের মা তানজিন রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তানজিন রহমান দুই সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে উত্তর বাসাবোর (হোল্ডিং নম্বর ১৫৭/২, ‘ষড়ঋতু’) বাড়ির সপ্তম তলা থেকে দুই শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হল- হুমায়রা বিনতে মাহবুব (৬) ও মাশরাফি ইবনে মাহবুব (৭)। তারা আপন ভাই-বোন।
নিহতদের বাবা মাহবুবুর রহমান ওয়াসার কম্পিউটার অপারেটর। বর্তমানে তিনি এলজিইডিতে ডেপুটেশনে আছেন।
দু’জনের লাশ দুই ঘরে পড়েছিল। তারা মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতো। এ ঘটনার পর থেকে তাদের মা তানজিন রহমান নিখোঁজ ছিলেন।
খবর পেয়ে সিআইডি রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি ধারালো চাপাতি উদ্ধার ও আলামত সংগ্রহ করে।
জানা গেছে, ‘ষড়ঋতু’ নামের এই বাড়ির সপ্তম তলায় দুই সন্তান নিয়ে প্রায় আট মাস ভাড়া থাকেন মাহবুবুর রহমান দম্পতি। তাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর মাহবুবুর রহমান বাসার বাইরে যান। এ সময় দুই সন্তানকে নিয়ে স্ত্রী তানজিন বাসায় ছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাহবুবুর রহমান বাসায় গিয়ে দরজা খোলা দেখতে পান।
ঘরে ঢুকে একটি কক্ষে ছেলের গলাকাটা লাশ দেখেন তিনি। ছেলের লাশ দেখে মেয়েকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পাশের রুমের মেঝেতেও একইভাবে মেয়ের গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।
দুই সন্তানের লাশ দেখে মাহবুবুর রহমান নিথর হয়ে যান। এ সময় সন্তানদের মাকে তিনি ঘরে পাননি।
নিহতদের ফুফু লায়লা নূর জানান, রাতে মাহবুব তাকে ফোন করে সন্তানদের হত্যাকাণ্ডের খবর জানান। এরপর নারায়ণগঞ্জের বাসা থেকে উত্তর বাসাবোয় ছুটে আসেন তিনি।
এ সময় লায়লা নূর বলেন, তার ভাবী তানজিন মাঝেমধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। সে সময় ঠিকমতো রান্না করেন না। কারও সঙ্গে কথাও বলেন না। আচরণ পাল্টে যায়। কয়েকদিন এ অবস্থা থাকে পরবর্তীতে আবার ভালো হয়ে যান।
Leave a Reply