পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে উদদ্ধারকারী দলের সতর্ক অবস্থানের পরও রশি ছিঁড়ে ছুটে গেছে বুনোহাতিটি।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রায় চার টন ওজনের হাতিটিকে অজ্ঞান করা হয়।
এরপর একটি আমগাছের সঙ্গে চার পায়ে রশি ও শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় ভারতের আসাম থেকে বানের পানিতে আসা বুনোহাতিটি।
কিন্তু সতর্ক অবস্থানের পরও শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আম গাছের সঙ্গে বাঁধা হাতিটি রশি ছিঁড়ে একটি জলাশয়ে চলে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা সমকালকে জানিয়েছেন।
তারা জানান, এই মুহূর্তেে হাতিটি জলাশয়ে অবস্থান করছে। জনতার ভিড়ে অন্যত্র যেতে পারছে না এটি।
ঢাকার বন অধিদফতরের সাবেক উপপ্রধান বন সংরক্ষক তপন কুমার দে বলেন, হাতিটিকে ডান্ডা বেড়ি পরানোর চেষ্টা চলছে। ডাঙায় তোলা গেলেই তাকে বেড়ি পরানো হবে।
এর আগে শুক্রবার আরও দুই-তিন দিন বেঁধে রাখার পর স্বাভাবিক আচরণ করলে বন্যহাতিটিকে গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান উদ্ধারকারীরা।
৪৫ দিন আগে হাতিটি বানের পানিতে আসাম থেকে ভেসে কুড়িগ্রাম হয়ে সরিষাবাড়ী আসে। গত ১৬ দিন ধরে এটি উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নে অবস্থান করছে।
কয়েক দফা উদ্ধার অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে এটিকে ক্যাপসুল পাউডার প্রজেক্টর গান দিয়ে মেটাল ডার্ট ছুড়ে অজ্ঞান করা সম্ভব হয়।
এর আগে বুধবার প্রথমে পল্গাস্টিক ডার্ট ছুড়লে তা হাতির গায়ে লেগে বেঁকে যায়।
বৃহস্পতিবার মেটাল ডার্টটি হাতির ডান পাঁজরে বিদ্ধ হলে এটি কয়ড়া গ্রামের সালামের বাড়ির পাশে ডোবায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় এটিকে পায়ে রশি বেঁধে টেনে শুকনো জায়গায় তোলা হয়।
তারপর হাতির দুটি করে পা একসঙ্গে রশি ও শিকল দিয়ে বেঁধে একটি আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। বিকেলেই হাতিটির জ্ঞান ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তারপরও জ্ঞান না ফেরায় কক্সবাজার সাফারি পার্কের সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন এটিকে নিউ হামবেল ইনজেকশন দেন। সেই সঙ্গে প্রচুর স্যালাইন ও গ্গ্নুকোজ খাওয়ানো হয়।
এতে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে এটির জ্ঞান ফিরে আসে। সামনের পায়ের শিকল খুলে দেওয়ায় হাতিটি উঠে দাঁড়ায়।
বুনোহাতিটি গত ২৮ জুন বানের পানিতে ভেসে কুড়িগ্রামের রৌমারী, গাইবান্ধা, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর হয়ে গত ২৭ জুলাই থেকে সরিষাবাড়ীর কামরাবাদ ইউনিয়নে অবস্থান করছে। প্রাথমিক উদ্ধার অভিযান সফল হওয়ার পর হাতিটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবাহাদুর’।
Leave a Reply