বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবার্ষিকীর দিনটিকে নিজের সবচেয়ে কষ্টের দিন বলে জানিয়েছেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের চেয়ারম্যান ও সাবেক সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু দিবস আমার জন্য সবচেয়ে কষ্টকর একটি দিন। এই দিনে আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না। সেদিন আমার হাত বাঁধা ছিল, আমি বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে পারিনি।’
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সফিউল্লাহ এসব কথা বলেন। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ‘৭১ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
পঁচাত্তরের ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করতে গিয়ে তৎকালীন এই সেনাপ্রধান জানান, তিনিসহ ওই সময়কার বিমানবাহিনী প্রধান ও নৌবাহিনী প্রধানকে ‘বাধ্য হয়ে’ মোশতাক সরকারের প্রতি সমর্থন দিতে হয়েছিলেন।
তার বক্তব্যের একপর্যায়ে দর্শক সারি থেকে দাঁড়িয়ে কৃষক লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুল হাই কানু তাকে প্রশ্ন করেন, ‘স্যার, যখন আপনার কাছ থেকে সিগনেচার নিচ্ছিল, তখন আপনি মৃত্যুবরণ করেননি কেন?’
এতে সফিউল্লাহ উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমাদেরকে আনুগত্যে বাধ্য করা হয়েছে। আপনি (কানু) সে সময় কী করেছেন?’
জবাবে আবদুল হাই কানু বলেন, ‘আমি কর্মী ছিলাম। প্রতিবাদ করেছি, জেল খেটেছি।’
এই পর্যায়ে অনুষ্ঠানস্থলে হৈ চৈ শুরু হয়। পরে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় সেনাপ্রধানের দায়িত্বে ছিলেন কে এম সফিউল্লাহ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গঠিত মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্যও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। অবশ্য কয়েকদিন পরেই চাকরি হারান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। উপস্থিত ছিলেন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান আবু ওসমান চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল হান্নান খান, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষী ও ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব মেজর (অব.) জিয়া উদ্দিন আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালি উর রহমান, ফোরামের সহসভাপতি ও তৎকালীন টুঙ্গিপাড়ার পুলিশ কর্মকর্তা এডিআইজি নুরুল আলম, ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব।
Leave a Reply