প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। ঘাবড়ে গেলেন এয়ারহোস্টেস এবং এয়ারলাইন্সের কর্মীরা। সৌভাগ্যক্রমে সহযাত্রীদের মধ্যে দু’জন নার্স ছিলেন। তারা এগিয়ে এসে ওই নারীকে নিয়ে যান প্লেনের সামনের দিকের অপেক্ষাকৃত ফাঁকা অংশে। তাকে ঘিরে ফেলা হয় চাদর দিয়ে।
রাস্তাঘাটে, ট্রেনে কিংবা বাসে সন্তান প্রসব হওয়ার ঘটনা মাঝে মাঝেই শোনা যায়। কিন্তু মাঝ-আকাশে সন্তান প্রসব! এমনটা শুনলে চমকাতেই হয়। মিসি বারবারেব উমান্ডাল নামের ফিলিপাইনের এক তরুণী নিজের এক বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে, যেখানে প্লেনে তার এক সহযাত্রীর সন্তান প্রসবের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
দুবাই থেকে ফিলিপাইন যাবেন বলে প্লেনে চড়েছিলেন মিসি। তার সঙ্গেই প্লেনে উঠেছিলেন এক গর্ভবতী নারী। প্লেন যখন মাঝ-আকাশে তখনই প্রসববেদনা শুরু হয় তার। কথায় কথায় তিনি জানান, আরও মাস তিনেক পরে তার প্রসবের সম্ভাব্য দিন নির্ধারণ করেছিলেন ডাক্তার। কিন্তু কোনো কারণে অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে প্রসববেদনা।
মিসি লিখেছেন, ‘‘যন্ত্রণায় কাতর ওই নারীকে দেখে তখন ঘাবড়ে গিয়েছেন এয়ারহোস্টেস এবং এয়ারলাইন্সের অন্যান্য কর্মীরা। সৌভাগ্যক্রমে সহযাত্রীদের মধ্যে দু’জন ছিলেন নার্স। কিছুক্ষণ পরে ওই নারী তার বাচ্চা নিয়ে নিজের সিটে এসে বসেন। দেখা যায়, মা এবং বাচ্চা— সুস্থ রয়েছেন দু’জনেই।’’
প্লেনে উপস্থিত সবাই আনন্দে আত্মহারা এই ঘটনায়। প্লেনটি তড়িঘড়ি নামানো হয় ভারতের মাটিতে। এইসব কাণ্ডকারখানার জেরে গন্তব্যে পৌঁছতে প্লেনটির দেরি হয়ে যায় প্রায় ৯ ঘণ্টা। কিন্তু তা নিয়ে বিন্দুমাত্র অভিযোগ নেই যাত্রীদের। মা এবং সন্তানের সুস্থতা কামনা করছেন সবাই। এমনকি যে এয়ারলাইন্স কোম্পানির প্লেনে ঘটেছে এই কাণ্ড, তারা ঘোষণা করেছে, তাদের প্লেনে জীবনভর বিনা পয়সায় যাতায়াত করতে পারবেন ওই নারী। তাদের তরফে এটাই ওই নারীকে তার মা হওয়ার উপহার।
কিন্তু প্রশ্ন হল, বাচ্চাটি যখন মাঝ-আকাশে জন্মেছে, তখন সে কোন দেশের নাগরিকত্ব পাবে? সাধারণভাবে নিয়ম হল, প্লেনে কোনো নারী সন্তান প্রসব করলে, তারপর যে দেশের মাটি প্লেনটি প্রথম স্পর্শ করে, সেই দেশের নাগরিকত্বই পায় সেই শিশু। সেই হিসেবে এই শিশুটি ভারতীয় বলে গৃহীত হওয়ার কথা। কিন্তু ঘটনা হল, ফিলিপাইনে এই নিয়ম চালু নেই। শিশুটির মা ফিলিপাইনের বলে তার বাচ্চাও ফিলিপাইনের নাগরিকত্বই লাভ করবে। সূত্র: এবেলা।
Leave a Reply