বরিশাল নগরীর সদর রোডের প্যারারা রোডে হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে মো. জালাল (৪৫) নামে এক দিনমজুরের পেটে অস্ত্রোপাঁচার করে আস্ত একটি কাঁচের বোতল বের করেছেন চিকিৎসকরা।
গত ১৭ আগস্ট এই অপারেশন করেন বরিশালের বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম সেলিম।
কাঁচের বোতলটি পায়ু পথ দিয়ে জোর করে ভোলার লালমোহনের ফরাশগঞ্জ গ্রামের আব্দুল মোনাসের ছেলে জালালের পেটে প্রবেশ করানো হয়েছে বলে দাবি চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলমের। প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করে বোতলটি পায়ু পথ দিয়ে ভেতরে ঢোকানো হলেও রোগীর স্বজনরা কাল্পনিক গল্প বলে প্রকৃত ঘটনা এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য চিকিৎসকের। অস্ত্রোপাঁচারের পর তিনি হেলথ কেয়ার ক্লিনিকের ১০৪ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জালালের স্ত্রী শাহনুর বেগম জনান, তার স্বামী দিন মজুরের কাজ করেন। গত ১৭ আগস্ট দুপুরে বাঁশের সাকো পাড় হওয়ার সময় নিচে পড়ে গিয়ে পায়ু পথ দিয়ে কাঁচের বোতলটি ঢুকে যায়।
তবে ক্লিনিকের মালিক ও চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম সেলিম জানান, গত ১৭ আগস্ট সন্ধ্যায় মো. জালাল পেটে প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে তার ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ওই সময় রোগীর স্বজনরা জালালের পেটে প্লাস্টিকের বোতল ঢুকেছে বলে তাকে জানায়। কিভাবে ওই বোতল ঢুকেছে জানতে চাইলে রোগীর স্বজনরা কখনো জালালের জীনের আছর রয়েছে বলে এমনটা হয়েছে, আবার কখেনো বাঁশের সাকো পার হতে গিয়ে নিচে পড়ে গিয়ে এমনটা হয়েছে বলে জানায়। এরপর রোগীর পেট এক্স-রে করে তিনি জালালের পেটে আস্ত একটি বোতল সাদৃশ্য বস্ত দেখতে পান।
পরে তিনি পায়ুপথ দিয়ে বোতলটি বের করার জন্য অস্ত্রোপচার শুরু করেন। এ সময় তিনি রোগীর পেটে কাঁচের বোতলের উপস্থিতি টের পান। বোতলটি পায়ুপথ দিয়ে বের করা অসম্ভব হওয়ায় জালালকে শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তির জন্য তার স্বজনদের পরামর্শ দেন। কিন্তু রোগীর স্বজনদের অনুরোধে ওই রাতেই জালালের পেটে অস্ত্রপাঁচার করে প্রায় ২ ঘন্টার চেষ্টায় কাঁচের বোতলটি বের করা হয়। যা দেখে তিনি সহ ক্লিনিকের সবাই হতবাক হয়ে যান।
ডা. সেলিম জানান, তার চিকিৎসা জীবনে কারো পেটে অস্ত্রপাঁচার করে এতো বড় বোতল তিনি বের করেননি। প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করে বোতলটি পায়ুপথ দিয়ে রোগীর পেটে ঢোকানো হয়েছে বলে চিকিৎসক জোর দিয়ে বলেন। অস্ত্রোপাঁচারের পর রোগী ধিরে ধিরে সুস্থ হয়ে উঠছে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply