আজিজুর রহমান খোকন : হযরত শাহজালাল (রহ)-এর ৬৯৭তম উরুস মোবারক শুরু হচ্ছে আগামীকাল ২৩ আগস্ট মঙ্গলবার। ওই দিন রাত ৩টা ১৫ মিনিটে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এ উরুস শেষ হবে। উরুস উপলক্ষে ইতোমধ্যে হাজার হাজার ভক্তের পদচারণে মুখর হয়ে উঠছে মাজার প্রাঙ্গণ। এ উপলক্ষে দরগা শরিফ সাজানো হয়েছে উৎষবের সাজে। ভক্তদের কাছে দরগা শরিফকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে মাজার কর্তৃপক্ষ।
হযরত শাহ্জালাল (রহঃ)এর সংক্ষিপ্ত জীবনী সংগ্রহে:ডেইলী চিরন্তন,হযরত মুহম্মদ (সা:) এর ওফাত প্রাপ্তির পরে নবুওয়াতের দরজা চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে পৃথিবীতে নবী-রাসুলদের জ্ঞানের তথা ইসলামের বাণী প্রচারের উত্তরাধিকারী হন অলি-আউলিয়াগণ। ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে খাজা মইনুদ্দীন চিশতী (রহঃ)এর পরে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন হযরত শাহ্জালাল মর্জরদ ইয়ামেনী (রহঃ)।
ভারতবর্ষে মুসলমান বণিকদের আধিপত্য বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে ইসলাম ধর্ম ও প্রসার লাভ করতে থাকে। ইতিহাসে জানা যায়, অস্টম শতক থেকে বাংলাদেশে মুসলমান বণিকদের আগমন শুরু হয়। এসময়ই বাংলার মাটিতে আগমন ঘটে আল্লাহ’র অলি হযরত শাহজালাল ইয়ামেনী (রহঃ) এর। এরপর থেকে বাংলা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে থাকে আল্লাহপাকের শান্তির বাণী ইসলাম। নবম/দশম শতকে বাংলায় মুসলমানদের উপস্থিতির কথা আরব পর্যটকগণও তাঁদের রচনায় লিপিবদ্ধ করেছেন।
হযরত শাহজালাল ইয়েমেনী (রহঃ) আরবের দক্ষিণে অবস্থিত ইয়ামেন রাজ্যে হাডরামন্টের কুনিয়া শহরে আনুমানিক ৫৯৭ হিজরি মোতাবেক ১১৯৭ খিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে, তিনি তুরস্কের কোনা শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তবে অধিকাংশের মতে, তিনি ইয়েমেনেই জন্মগ্রহণ করেন। হিজরী ষষ্ঠ শতকের শেষাংশে মক্কার কোরায়েশ বংশের একটি শাখা মক্কা শহর থেকে হেজাজ ভূমির দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে ইয়েমেন প্রদেশে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। এই শাখারই একজন বংশধর হলেন হযরত শাহ্জালাল ইয়ামেনী (রহঃ) এর পিতা শায়খ মুহম্মদ। তিনি প্রখ্যাত সূফী জালাল আদ্ দ্বীন মুহম্মদ রুমী (রহঃ)-এর সমসাময়িক ছিলেন। আর সৈয়দা ফাতিমা হাসিনা সাইদা হলেন হযরত শাহ্জালাল ইয়ামেনী (রহঃ) এর মাতা। তিন মাস বয়সে তিনি তাঁর স্নেহময়ী মাকে হারান। পাঁচ বছর বয়সে বাবাকেও হারান। পিতৃ-মাতৃহারা শাহজালালের দায়িত্ব নেন মামা হযরত সৈয়দ শায়েখ আহমদ কবির সুরাওয়ার্দী (রহঃ)। আধ্যাত্মিক এই সাধকের আস্তানা ছিল মক্কা শহরে। তাই তিনি শিশু শাহজালালকে সঙ্গে করে মক্কায় নিয়ে যান। সেখানে তাঁর অন্যান্য শিষ্যদের সঙ্গে শিশু শাহজালালকেও শিক্ষাদীক্ষা দান করতে থাকেন।
Leave a Reply