জাগৃতি প্রকাশনির মালিক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যায় অংশ নেয়া এবিটি সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল সেনাবাহিনীর চাকরীচ্যুত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক, যিনি মেজর জিয়া নামেই পরিচিতি।
বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
এই জিয়াই গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলাসহ সম্প্রতি বিভিন্ন হামলার মাস্টারমাইন্ড বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে টঙ্গি থেকে দীপন হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান আসামি মইনুল হাসান শামীমকে (সাংগঠনিক নাম সিফাত, সামির, ইমরান) গ্রেফতার করার পর এসব তথ্য পায় পুলিশ।
মনিরুল ইসলাম বলেন, দীপন হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল সিফাত। সে হত্যাকাণ্ডের আগে ঘটনাস্থলে গিয়ে রেকি (পর্যবেক্ষণ) করেছে। হত্যাকাণ্ডের ১ মাস আগে থেকে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিফাত তাদের প্রশিক্ষক হিসেবে মেজর জিয়ার নাম বলেছে।
‘দীপন হামলার পরিকল্পনাকারী সেলিমসহ আরও কয়েকজনের নাম বলেছে সিফাত। তাকে রিমান্ডে এনে ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে,’ বলেন মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রকাশক দীপন ছাড়াও সিফাত গত বছরের ৪ জানুয়ারি সাভারে সান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিয়াজ মোর্শেদ বাবু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়।
অভিজিৎ ও দীপন হত্যাকারীরা একই গ্রুপের তবে তাদের মধ্যে কেউ কমন থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।
মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাকরীচ্যুত কর্মকর্তা। ২০১১ সালে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হয় তাকে। এরপর থেকেই তিনি আত্মগোপনে আছেন।
২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো এবিটির সঙ্গে জিয়াউল হকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায় পুলিশ। জিয়া জঙ্গিদের যুদ্ধ ও বোমা তৈরি ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালে এবিটি প্রধান মুফতি জসিমউদ্দিন রাহমানী গ্রেফতার হওয়ার পর এই নিষিদ্ধ সংগঠনের অন্যতম ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে জিয়ার নাম বেরিয়ে আসে। তখন জেএমবির একাংশের সঙ্গে এই বহিষ্কৃত সেনা কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকার তথ্যপ্রমাণ পায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেই থেকেই পলাতক জীবনযাপন করছেন জিয়া। তার সঙ্গে পাকিস্তানে নিহত আরেক জঙ্গি নেতা এজাজের সঙ্গেও যোগাযোগের তথ্য মেলে।
Leave a Reply