সব সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় বিচার হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে দুস্থ সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় প্রথমবারের মতো এ অনুদান দেয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সব সাংবাদিক হত্যার বিচার করা হবে। কেউই পার পাবে না। অনেক সময় হত্যার স্বাক্ষী পাওয়া যায় না। যে কারণে বিচারকাজ বিলম্বিত হয়। আমার পিতা হত্যার বিচার পেতে আমাকে ৩৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।
বিএনপি শাসনামলের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ক্ষমতায় থাকাকালে জঙ্গিবাদের বিস্তৃতি হয়েছে। তারা জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করেছে, উসকে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের খুন করে আট টুকরা করেছে। দেশে বিভৎস, ভয়ংকর পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছিলো।
তিনি এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ওই সংবাদপত্রগুলো তাদের নির্যাতন, হত্যা, খুনের সংবাদ প্রকাশ করার সাহস পেত না। সাংবাদিকদের ওপর তারা অমানসিক নির্যাতন চালাত। তার চিহ্ন এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেক সাংবাদিক।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির বিশাল কমিটিতে বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী, লুটপাটে জড়িতরা স্থান পেয়েছে। তারা এখন হয়েছে অপরাধীর প্রশ্রয়দাতা। তাদের দিয়ে দেশের উন্নয়ন কিভাবে হবে? তারা তো দেশের মানুষের শান্তিতে বিশ্বাস করে না।
যুদ্ধাপরাধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলতে থাকবে। তবে এ বিচার করতে গেলে বাধা আসবে। অনেকে তাদের পক্ষে লবিং করবে। এ সবকিছুই আমাদের জানা। কিন্তু আমাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকবো। আমার ক্ষমতা হারানোর ভয় নেই। আমার জীবন হারানোর ভয় নেই।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আপনার স্বোচ্চার ছিলেন, আরও স্বোচ্চার হতে হবে। এই দেশে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান হবে না। তা যেনো কোনো জায়গা না পায়। ইসলামকেও তারা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন অনলাইন পত্রিকা ব্যাপকভাবে বের হচ্ছে। তবে এর কোনো নীতিমালা নেই। সবাইকে একটা নীতিমালায় আসতে হবে। অনলাইন পত্রিকার জন্যে নীতিমালা জরুরী। ইতোমধ্যে আমরা এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছি।
তিনি বিভিন্ন ঘটনার লাইভ প্রচারের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন দাবি বিবেচনার আশ্বাসও দেন জাতির জনকের কন্যা।
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কে এম রহমত উল্লাহ, তথ্য সচিব মরতুজা আহমদ, বিএফইউজে সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, মহাসচিব ওমর ফারুক, ডিইউজে সভাপতি শাবান মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
প্রথমবারের মতো সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় ১৯৬ জন দুস্থ, অসুস্থ, দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক ও নিহত সাংবাদিকদের পরিবারকে এক কোটি ৪০ লাখ অনুদানের টাকা দেওয়া হয়।
২০১১-১২ অর্থবছর থেকে সাংবাদিক সহায়তা অনুদান ও ভাতা নীতিমালার ভিত্তিতে দুস্থ সাংবাদিকদের অনুদান দেওয়া হয়।
Leave a Reply