ডেইলি চিরন্তন: প্রশ্নটা শুনেই বিরক্ত হবেন ক্রীড়া রোমান্টিকরা। এটা একটা প্রশ্ন হলো? অলিম্পিকের সোনার পদকের ‘মূল্য’ বাজারদরে পরিমাপ করা যায় কখনো? বছরের পর বছর ধরে খেলোয়াড়েরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন ওই পদকটি গলায় ঝোলানোর জন্য। অখণ্ড মনঃসংযোগ আর অনন্য অধ্যবসায় দিয়ে খেলোয়াড়েরা অর্জন করেন ওই পদক। পদকমঞ্চে দাঁড়িয়ে গলায় পদক নিয়ে নিজ দেশের জাতীয় সংগীতের সুর মূর্ছনার ওই মুহূর্তের সঙ্গে কোনো কিছুরই কি তুলনা চলে? পদকের বাজারমূল্য নিতান্তই গৌণ এক বিষয়।
খেলোয়াড় কিংবা ক্রীড়া রোমান্টিকদের কথা বাদ দিন। কাটখোট্টা বৈষয়িক দিক দিয়ে ভাবলে একটু হতাশই হবেন। খেলোয়াড়দের কাছে এর রোমান্টিক-মূল্য যতখানি, একজন বৈষয়িক মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে অলিম্পিক সোনার পদকের মূল্য ততটাই ‘হতাশা-জাগানিয়া।’
প্রথমত, অলিম্পিকের সোনার পদকে ‘সোনা’ থাকে নামমাত্রই। এবারের রিও অলিম্পিকে ব্রাজিলের জাতীয় টাঁকশাল ৫০০ গ্রাম ওজনের যে সোনার পদকগুলো তৈরি করেছে, তাতে সোনার পরিমাণ আসলে মাত্র ৬ গ্রাম। বাকি ৪৯৪ গ্রাম ওজন ভর্তি করা হয়েছে রুপা দিয়ে। পুরো পদকটির দাম বর্তমান বাজারদরে ৬০০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৪৭ হাজার ১৫১ টাকা। আর রুপা অংশটি বাদ দিয়ে পদটিতে যে পরিমাণ সোনা আছে, সেটির দাম ২৬৮ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ২১ হাজার ৬১ টাকা। যদি পুরো পদকটিই সোনায় তৈরি হতো, তাহলে এর বাজারমূল্য দাঁড়াত ২৩ হাজার মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় ১৮ লাখ ৭ হাজার ৪৮১ টাকা।
একটা সময় কিন্তু নিখাদ সোনার পদকই দেওয়া হতো অলিম্পিকে। ১৯০৪ সালের সেন্ট লুইস অলিম্পিকে কেবল পদকের জায়গায় সমপরিমাণ সোনায় নির্মিত ট্রফি দেওয়া হয়েছিল। ১৯১২ সালের স্টকহোম অলিম্পিকে শেষবারের মতো আক্ষরিক অর্থেই সোনার মেডেল পেয়েছেন বিজয়ীরা। সোনার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খরচের মাত্রা আকাশ ছুঁলে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি নামমাত্র সোনায় তৈরি পদক দেওয়া শুরু করে।
অলিম্পিকের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ‘দামি’ সোনার পদক দেওয়া হয়েছিল আজ থেকে চার বছর আগে, ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকে। সেবার প্রতিটি সোনার পদকের দাম ছিল ৭০৮ ডলার বা ৫৫ হাজার ৬৩৮ টাকা। সূত্র : বাসেল ডটকম।
Leave a Reply