শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :::
ডেইলি চিরন্তন অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য সিলেটসহ দেশ বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা ইমেইলে যোগাযোগ করুন
শিরোনাম ::
শিশু মুনতাহাকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়,গ্রেপ্তার ৪ রেকর্ড গড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন জো রোগান আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ২ শিক্ষকসহ ৯ জন বহিষ্কার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার কোন শিক্ষায় বড় করছেন মেয়েকে, জানালেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের ৬ষ্ট প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদজাপন ‘মাজার ভাঙচুর করে সুন্নি জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না’ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তা পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের মেসির মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মায়ামি কোচ বন্যায় আরো মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় প্রাথমিকের ‘শপথ বাক্য’ থেকে বাদ গেল বঙ্গবন্ধুর অংশ অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন দপ্তর পেলেন নোবেল বিজয়ী থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য উপদেষ্টা যারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ আশঙ্কা ছিল এ ধরনের একটা আঘাত আসবে : প্রধানমন্ত্রী
‘এ বারের ফেলুদা করে সিনেমা ছেড়ে দিচ্ছি’

‘এ বারের ফেলুদা করে সিনেমা ছেড়ে দিচ্ছি’

175925feluda_kalerkantho_picডেইলি চিরন্তন: বাংলা গোয়েন্দা কাহিনীর সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্র প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় রচিত ফেলুদা। অনেকদিন আগে থেকেই মিডিয়ায় খবর সন্দ্বীপ রায় এবার ‘ডাবল ফেলুদা’ নিয়ে আসছেন। মানে ফেলুদার দুটি গল্প নিয়ে একটি মুভি হবে। এই মুভিতে ‘ফেলুদা’ চরিত্রটি কে করবে সেটা নিয়ে চলে রশি টানাটানি। ‘বাদশাহী আংটি’-তে ফেলুদা চরিত্র করে প্রশংসিত হয়েছিলেন আবীর চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু ব্যোমকেশ চরিত্রে অভিনয় করায় তাকে আর ফেলুদার রোল দেবেন না বলে জানিয়েছেন গৌতম ঘোষ।

আবার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পর ফেলুদার চরিত্রে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা পান সব্যসাচী চক্রবর্তী। কিন্তু এই বয়সে তাকে দিয়ে ফেলুদা করানো ঠিক জুতসই লাগছিল না। তাই পরিচিত-অপরিচিত অনেককেই প্রস্তাব দেওয়া হয়। এমনকী ক্রিকেট সুপারস্টার মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলীকেও দেওয়া হয়েছিল প্রস্তাব। কিন্তু কেউ এই চরিত্রের চ্যালেঞ্জ নিতে সাহস করেননি। তাই শেষ পর্যন্ত সব্যসাচী চক্রবর্তীকেই ফেলুদা হিসেবে নির্বাচিত করা হলো। চলছে ছবির শুটিং।

শুটিং সেটে কলকাতার জনপ্রিয় দৈনিক আনন্দবাজার-কে দেওয়া সাক্ষাতকারটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো :

ফেলুদা মানে তো নীললোহিতের মতো উদ্ধত যৌবন। সেই ফেলুদা করতে গিয়ে আপনি বলছেন সিনেমায় এটাই শেষ অভিনয়! কেন

আমি ফেলুদা হয়েই থেকে যেতে চাই। ফেলুদার পর আর ফিল্মে অভিনয় করতে চাই না। ফেলুদার মধ্যে যে বাঙালিয়ানা, যে অফুরন্ত জীবন সেটা নিয়েই সেলুলয়েড থেকে চলে যেতে চাই। ফেলুদা করব বলেই তো এত ওজন কমানো। না হলে আমার মতো ভাত-প্রিয় লোক ভাত ছেড়ে দিল?

কতটা ওজন কমল

(একটু ভেবে) আগে ৯২ ছিল। এখন ৮৫।

আপনি রোজ ওজন চেক করছেন

হ্যাঁ, নিজেকে একটু মাপজোকের মধ্যে তো রাখতেই হবে। একে ফেলুদা। তায় আবার ৫০ বছর।

কিন্তু ওজনটা কমল কী করে আর বেশ ফ্রেশ লাগছে আপনাকে…
গল্পটা একটু ইলাবরেটলি বলি? বোর হবেন না তো?

বলুন না…

ফেলুদার ৫০-এ বাবু (সন্দীপ রায়) যখন নতুন করে ফেলুদা খুঁজতে শুরু করল তখন ওকে আমি অনির্বাণ ভট্টাচার্যের কথা বলি। ওর কাজ ভাল লেগেছিল বাবুর। কিন্তু বলেছিল ফেলুদার জন্য আরেকটু ম্যাচিওরড কাউকে চাই। আবীর চট্টোপাধ্যায়ের কথাও আমি বলি। ফেলুদা আর ব্যোমকেশ একই অভিনেতা করবে, এটা একটু সমস্যার। এ রকম চলতে চলতে হঠাৎ বাবু একদিন বলল এটা ফেলুদার ট্রিবিউট। তোমাকেই করতে হবে। রাজি হয়ে যাই…
মনে হয়নি ৬০ বছরে ভুঁড়ি  নিয়ে…

(থামিয়ে দিয়ে) হ্যাঁ, এটাই বলছিলাম। বাড়িতে এসে বলাতে আমার স্ত্রী মিঠু কেমন একটা চোখমুখ করে বলল, ‘আবার!’ তবে জিম বা ডায়েট কিছুই কোনও দিন করতে পারিনি। আজও পারি না। মাঝে একটা অনুষ্ঠানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ও বলেছিল ভুঁড়িটা কমানোর জন্য কার্বোহাইড্রেট ছেড়ে দিতে। ওর কথাই মনে হল তখন। ওই রুটিনেই আজও চলেছি। কাজও হচ্ছে দেখছি। বেশ ঝরঝরে লাগে কিন্তু।

ফেলুদা কে হবে তাই নিয়ে এত লড়াই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তো বলেছেন আপনাকে ফেলুদা মানাচ্ছে না
হ্যাঁ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ঠিকই বলেছেন। উনি যেভাবে ফেলুদাকে রিড করেন সেই জায়গা থেকে কথাটা ঠিক। আমি তার বক্তব্যকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু দেখুন, ফেলুদার গল্প লেখা যখন শুরু হয়, তখন ফেলুদার বয়স ২৭। এ বছর ফেলুদা প্রকাশনার ৫০ বছর। তা হলে হিসেব অনুযায়ী ফেলুদার বয়স এখন ৭৭ বছর। আর আমার তো ৬০। (মুচকি হেসে) আই অ্যাম পারফেক্ট !

কিন্তু আপনার লুক দেখে আবীর চট্টোপাধ্যায়ও বলেছেন আপনাকে ফেলুদা মানাচ্ছে না

তাই বলেছে বুঝি? আমি জানতাম না। এখন শুনলাম (চারমিনার নয়, বিড়ি ধরালেন)। জানেন, ‘বাদশাহী আংটি’-র সময় অনেকে এসে আমায় বলেছিল আপনি যখন ফেলুদা করছেন না, তখন ‘বাদশাহী আংটি’ দেখব না। আবীরকে ঠিক ফেলুদা-ফেলুদা মনে হচ্ছে না। আমি মিডিয়ায় বলার জন্য বানিয়ে বলছি না কিন্তু। আমি প্রত্যেককে বলেছিলাম ‘বাদশাহী আংটি’-র সময় ফেলুদা ব্যাঙ্কে চাকরি করতে করতে গোয়েন্দাগিরি ধরেছে। সেখানে আবীরের লুকটা একদম ঠিক। আরে, সময় আর গল্পটাকেও তো দেখতে হবে। শুধু সমালোচনা করলে তো হবে না।

এ বার কিন্তু দু’টো গল্পেই ফেলুদা অনেক কম সিগারেট খেয়েছে। আসলে ফেলুদা তো বাচ্চারাও দেখে। তাদের যেন দেখে এটা মনে না হয় যে ধোঁয়ায় টান দিলে তবেই ফেলুদার বুদ্ধি বেরোয়। বুদ্ধির সঙ্গে সিগারেটের কিন্তু কোনও সম্পর্ক নেই। সচেতন ভাবে বাবু এই সিগারেটের অংশটা কম রেখেছে।

মোবাইল অনবরত বেজে যায় হোয়াটসঅ্যাপেও খুব একটা উত্তর মেলে না ছবিতে ফেলুদাও কি তাই

প্রথমে ফেলুদার কথা বলি। ফেলুদাকে মোবাইল-ইন্টারনেট এ সবের বাইরে রাখা হয়েছে। ‘ডবল ফেলুদা’য় অন্য কোনও চরিত্র হয়তো মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যবহার করছে, কিন্তু ফেলুদা নয়। ফেলুদার মগজই শেষ কথা। এ বার আমার কথা বলি। ছোটবেলা থেকে ভাবতাম ফেলুদা চরিত্রটা আমাকে করতেই হবে। অদ্ভুত একটা নেশায় পেয়ে বসেছিল। আমার কিন্তু ফেলুদার জন্যই সিগারেট খাওয়া শুরু। আর ফেসবুক করার সময় নেই আমার। দিনে ১৫০টা ফোনের মধ্যে ৯০টা ভুলভাল ফোন আসে। কেউ তোপসে চরিত্র করতে চায়। কেউ স্ত্রীর অসুখ বলে টাকা চায়। কী করব বলুন! তবে কেউ দরকারি মেসেজ করে রাখলে আমি উত্তর নিশ্চয়ই দিই।

আপনার মতে সেরা ফেলুদা কে

দেখুন, যত দূর আমি জানি সত্যজিৎ রায়ও তার মনের মতো ফেলুদা খুঁজে পাননি।

মানে

সত্যজিৎ রায় চেয়েছিলেন এমন এক ফেলুদা যার মধ্যে বরুণ চন্দের  হাইট, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠস্বর, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের লুক আর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় থাকবে — এও কি সম্ভব? যত জনকে ফেলুদা হিসেবে দেখেছি তার মধ্যে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ই সেরা ফেলুদা। তবে আমার সত্যিকারের ফেলুদা আর কেউ নন, সত্যজিৎ রায় স্বয়ং।

জয় বাবা ফেলুনাথ এর পর ছবির টাইটেল কার্ডে আবার ফেলুদা…
ছবির নাম ‘ডবল ফেলুদা’। এটা খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে আমার। ফেলুদার ৫০ বছর বলে দেখছি ইউনিটে সবাই টগবগ করে ফুটছে।

ফেলুদার ট্রিবিউটে সোনার কেল্লা জয় বাবা ফেলুনাথ এর ক্লিপিংস থাকছে আপনার ভয় করছে না
ভয় করবে কেন? আমার তো এনার্জি দু’ গুণ বেড়ে গেছে।

সোনার কেল্লায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে দেখার পর ডবল ফেলুদায় লোকে আপনাকে নেবে
(বারবার চিনি দুধ ছাড়া চা আসছে) আমার তো মনে হয় অবশ্যই নেবে। ‘ডবল ফেলুদা’ মেকিংয়ে অনেক নতুনত্বের কথা ভেবেছে বাবু। শুধু ‘সোনার কেল্লা’ বা ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’ নয়, ‘বাক্স রহস্য’ থেকে ‘বাদশাহী আংটি’ সব কিছুর রেফারেন্সই ধরা থাকবে। (প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে) আরও ইন্টারেস্টিং কী জানেন, আগে ফেলুদায় অভিনয় করেছেন এমন চরিত্রদেরও এ বার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।  সে কারণেই ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় থাকছে। রাজেশ শর্মাকেও দেখা যাবে। একটা মনতাজ মতো করা হবে। এটা আর শুধু ফেলুদার ছবি নয়, ফেলুদার পঞ্চাশ বছরের গল্প ধরা থাকছে সেলুলয়েডে।বাংলা গোয়েন্দা কাহিনীর সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্র প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় রচিত ফেলুদা। অনেকদিন আগে থেকেই মিডিয়ায় খবর সন্দ্বীপ রায় এবার ‘ডাবল ফেলুদা’ নিয়ে আসছেন। মানে ফেলুদার দুটি গল্প নিয়ে একটি মুভি হবে। এই মুভিতে ‘ফেলুদা’ চরিত্রটি কে করবে সেটা নিয়ে চলে রশি টানাটানি। ‘বাদশাহী আংটি’-তে ফেলুদা চরিত্র করে প্রশংসিত হয়েছিলেন আবীর চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু ব্যোমকেশ চরিত্রে অভিনয় করায় তাকে আর ফেলুদার রোল দেবেন না বলে জানিয়েছেন গৌতম ঘোষ।

আবার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পর ফেলুদার চরিত্রে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা পান সব্যসাচী চক্রবর্তী। কিন্তু এই বয়সে তাকে দিয়ে ফেলুদা করানো ঠিক জুতসই লাগছিল না। তাই পরিচিত-অপরিচিত অনেককেই প্রস্তাব দেওয়া হয়। এমনকী ক্রিকেট সুপারস্টার মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলীকেও দেওয়া হয়েছিল প্রস্তাব। কিন্তু কেউ এই চরিত্রের চ্যালেঞ্জ নিতে সাহস করেননি। তাই শেষ পর্যন্ত সব্যসাচী চক্রবর্তীকেই ফেলুদা হিসেবে নির্বাচিত করা হলো। চলছে ছবির শুটিং।

শুটিং সেটে কলকাতার জনপ্রিয় দৈনিক আনন্দবাজার-কে দেওয়া সাক্ষাতকারটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো :

**ফেলুদা মানে তো নীললোহিতের মতো উদ্ধত যৌবন। সেই ফেলুদা করতে গিয়ে আপনি বলছেন সিনেমায় এটাই শেষ অভিনয়! কেন?

আমি ফেলুদা হয়েই থেকে যেতে চাই। ফেলুদার পর আর ফিল্মে অভিনয় করতে চাই না। ফেলুদার মধ্যে যে বাঙালিয়ানা, যে অফুরন্ত জীবন সেটা নিয়েই সেলুলয়েড থেকে চলে যেতে চাই। ফেলুদা করব বলেই তো এত ওজন কমানো। না হলে আমার মতো ভাত-প্রিয় লোক ভাত ছেড়ে দিল?

**কতটা ওজন কমল?

(একটু ভেবে) আগে ৯২ ছিল। এখন ৮৫।

**ওহ, আপনি রোজ ওজন চেক করছেন?

হ্যাঁ, নিজেকে একটু মাপজোকের মধ্যে তো রাখতেই হবে। একে ফেলুদা। তায় আবার ৫০ বছর।

**কিন্তু ওজনটা কমল কী করে? আর বেশ ফ্রেশ লাগছে আপনাকে…

গল্পটা একটু ইলাবরেটলি বলি? বোর হবেন না তো?

**বলুন না…

ফেলুদার ৫০-এ বাবু (সন্দীপ রায়) যখন নতুন করে ফেলুদা খুঁজতে শুরু করল তখন ওকে আমি অনির্বাণ ভট্টাচার্যের কথা বলি। ওর কাজ ভাল লেগেছিল বাবুর। কিন্তু বলেছিল ফেলুদার জন্য আরেকটু ম্যাচিওরড কাউকে চাই। আবীর চট্টোপাধ্যায়ের কথাও আমি বলি। ফেলুদা আর ব্যোমকেশ একই অভিনেতা করবে, এটা একটু সমস্যার। এ রকম চলতে চলতে হঠাৎ বাবু একদিন বলল এটা ফেলুদার ট্রিবিউট। তোমাকেই করতে হবে। রাজি হয়ে যাই…

**মনে হয়নি ৬০ বছরে ভুঁড়ি নিয়ে…

(থামিয়ে দিয়ে) হ্যাঁ, এটাই বলছিলাম। বাড়িতে এসে বলাতে আমার স্ত্রী মিঠু কেমন একটা চোখমুখ করে বলল, ‘আবার!’ তবে জিম বা ডায়েট কিছুই কোনও দিন করতে পারিনি। আজও পারি না। মাঝে একটা অনুষ্ঠানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ও বলেছিল ভুঁড়িটা কমানোর জন্য কার্বোহাইড্রেট ছেড়ে দিতে। ওর কথাই মনে হল তখন। ওই রুটিনেই আজও চলেছি। কাজও হচ্ছে দেখছি। বেশ ঝরঝরে লাগে কিন্তু।

**ফেলুদা কে হবে তাই নিয়ে এত লড়াই। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তো বলেছেন আপনাকে ফেলুদা মানাচ্ছে না।

হ্যাঁ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ঠিকই বলেছেন। উনি যেভাবে ফেলুদাকে রিড করেন সেই জায়গা থেকে কথাটা ঠিক। আমি তার বক্তব্যকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু দেখুন, ফেলুদার গল্প লেখা যখন শুরু হয়, তখন ফেলুদার বয়স ২৭। এ বছর ফেলুদা প্রকাশনার ৫০ বছর। তা হলে হিসেব অনুযায়ী ফেলুদার বয়স এখন ৭৭ বছর। আর আমার তো ৬০। (মুচকি হেসে) আই অ্যাম পারফেক্ট !

**কিন্তু আপনার লুক দেখে আবীর চট্টোপাধ্যায়ও বলেছেন আপনাকে ফেলুদা মানাচ্ছে না।

তাই বলেছে বুঝি? আমি জানতাম না। এখন শুনলাম (চারমিনার নয়, বিড়ি ধরালেন)। জানেন, ‘বাদশাহী আংটি’-র সময় অনেকে এসে আমায় বলেছিল আপনি যখন ফেলুদা করছেন না, তখন ‘বাদশাহী আংটি’ দেখব না। আবীরকে ঠিক ফেলুদা-ফেলুদা মনে হচ্ছে না। আমি মিডিয়ায় বলার জন্য বানিয়ে বলছি না কিন্তু। আমি প্রত্যেককে বলেছিলাম ‘বাদশাহী আংটি’-র সময় ফেলুদা ব্যাঙ্কে চাকরি করতে করতে গোয়েন্দাগিরি ধরেছে। সেখানে আবীরের লুকটা একদম ঠিক। আরে, সময় আর গল্পটাকেও তো দেখতে হবে। শুধু সমালোচনা করলে তো হবে না।

**আচ্ছা, এ বারে তো ‘সমাদ্দারের চাবি’, ‘গোলকধাম রহস্য’ দু’টো গল্প নিয়ে ‘ডবল ফেলুদা’। এখানেও কি ফেলুদার হাতে সিগারেট?

এ বার কিন্তু দু’টো গল্পেই ফেলুদা অনেক কম সিগারেট খেয়েছে। আসলে ফেলুদা তো বাচ্চারাও দেখে। তাদের যেন দেখে এটা মনে না হয় যে ধোঁয়ায় টান দিলে তবেই ফেলুদার বুদ্ধি বেরোয়। বুদ্ধির সঙ্গে সিগারেটের কিন্তু কোনও সম্পর্ক নেই। সচেতন ভাবে বাবু এই সিগারেটের অংশটা কম রেখেছে।

**আপনি তো ফেসবুকও করেন না। মোবাইল অনবরত বেজে যায়। হোয়াটসঅ্যাপেও খুব একটা উত্তর মেলে না। ছবিতে ফেলুদাও কি তাই?

প্রথমে ফেলুদার কথা বলি। ফেলুদাকে মোবাইল-ইন্টারনেট এ সবের বাইরে রাখা হয়েছে। ‘ডবল ফেলুদা’য় অন্য কোনও চরিত্র হয়তো মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যবহার করছে, কিন্তু ফেলুদা নয়। ফেলুদার মগজই শেষ কথা। এ বার আমার কথা বলি। ছোটবেলা থেকে ভাবতাম ফেলুদা চরিত্রটা আমাকে করতেই হবে। অদ্ভুত একটা নেশায় পেয়ে বসেছিল। আমার কিন্তু ফেলুদার জন্যই সিগারেট খাওয়া শুরু। আর ফেসবুক করার সময় নেই আমার। দিনে ১৫০টা ফোনের মধ্যে ৯০টা ভুলভাল ফোন আসে। কেউ তোপসে চরিত্র করতে চায়। কেউ স্ত্রীর অসুখ বলে টাকা চায়। কী করব বলুন! তবে কেউ দরকারি মেসেজ করে রাখলে আমি উত্তর নিশ্চয়ই দিই।

**আবার ফেলুদাতেই ফিরি। আপনার মতে সেরা ফেলুদা কে?

দেখুন, যত দূর আমি জানি সত্যজিৎ রায়ও তার মনের মতো ফেলুদা খুঁজে পাননি।

**মানে?

সত্যজিৎ রায় চেয়েছিলেন এমন এক ফেলুদা যার মধ্যে বরুণ চন্দের হাইট, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠস্বর, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের লুক আর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় থাকবে — এও কি সম্ভব? যত জনকে ফেলুদা হিসেবে দেখেছি তার মধ্যে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ই সেরা ফেলুদা। তবে আমার সত্যিকারের ফেলুদা আর কেউ নন, সত্যজিৎ রায় স্বয়ং।

**‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর পর ছবির টাইটেল কার্ডে আবার ফেলুদা…

ছবির নাম ‘ডবল ফেলুদা’। এটা খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে আমার। ফেলুদার ৫০ বছর বলে দেখছি ইউনিটে সবাই টগবগ করে ফুটছে।

ফেলুদার ট্রিবিউটে ‘সোনার কেল্লা’, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’–এর ক্লিপিংস থাকছে। আপনার ভয় করছে না?

ভয় করবে কেন? আমার তো এনার্জি দু’ গুণ বেড়ে গেছে।

**‘সোনার কেল্লা’য় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে দেখার পর ‘ডবল ফেলুদা’-য় লোকে আপনাকে নেবে?

(বারবার চিনি দুধ ছাড়া চা আসছে) আমার তো মনে হয় অবশ্যই নেবে। ‘ডবল ফেলুদা’ মেকিংয়ে অনেক নতুনত্বের কথা ভেবেছে বাবু। শুধু ‘সোনার কেল্লা’ বা ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’ নয়, ‘বাক্স রহস্য’ থেকে ‘বাদশাহী আংটি’ সব কিছুর রেফারেন্সই ধরা থাকবে। (প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে) আরও ইন্টারেস্টিং কী জানেন, আগে ফেলুদায় অভিনয় করেছেন এমন চরিত্রদেরও এ বার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সে কারণেই ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় থাকছে। রাজেশ শর্মাকেও দেখা যাবে। একটা মনতাজ মতো করা হবে। এটা আর শুধু ফেলুদার ছবি নয়, ফেলুদার পঞ্চাশ বছরের গল্প ধরা থাকছে সেলুলয়েডে।

**আচ্ছা, কখনও মনে হয়নি ফেলুদার কেন সত্যবতী নেই?

না, একেবারেই না। ফেলুদা আসলে একা। মগজাস্ত্রই তার একমাত্র সঙ্গী। ফেলুদার সিম্পল লিভিংটাই তো আজকের দিনে একটা এগজাম্পল হতে পারে বলে মনে হয়।

**ফেলুদার কপিরাইট নিয়েও কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে অসন্তোষ আছে।

(থামিয়ে দিয়ে) জানি, জানি। দেখুন বাবুর সঙ্গে ফেলুদা নিয়ে কাজ করতে করতে প্রায় ২১ বছর পার করে দিলাম। অসম্ভব ভাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং আমাদের। সেটে কোনও কারণে রেগে গেছি, হঠাৎ মুড অফ হয়েছে। বাবু কিন্তু সেটা চমৎকার ভাবে হ্যান্ডেল করেছে। ওর চাহিদাটাও আমি বুঝতে পারি। তবে একজন অভিনেতা হিসেবে আমার মনে হয় বাংলায় ফেলুদার কপিরাইটটা এ বার ছেড়ে দেওয়া উচিত।

**সৃজিত মুখোপাধ্যায় তো ফেলুদা করতে চান…

কেন করবে না বলুন তো? ফেলুদা হিসেবে সৃজিতের তো অনির্বাণকে খুব পছন্দ। আমি তো শুনেছি অঞ্জন দত্ত ফেলুদা করতে আগ্রহী। আরে দেখাই যাক না অন্য পরিচালকরা ফেলুদাকে কী ভাবে ইন্টারপ্রেট করেন। আজ অবধি যা হয়েছে তার চেয়ে ভাল হতেও পারে, আবার মুখ থুবড়েও পড়তে পারে। কিন্তু ফেলুদার ক্ষেত্র এ বার বাড়ানো উচিত। ফেলুদাকে বেঁধে রাখলে চলবে না।

না, একেবারেই না। ফেলুদা আসলে একা। মগজাস্ত্রই তার একমাত্র সঙ্গী। ফেলুদার সিম্পল লিভিংটাই তো আজকের দিনে একটা এগজাম্পল হতে পারে বলে মনে হয়।

ফেলুদার কপিরাইট নিয়েও কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে অসন্তোষ আছে

(থামিয়ে দিয়ে) জানি, জানি। দেখুন বাবুর সঙ্গে ফেলুদা নিয়ে কাজ করতে করতে প্রায় ২১ বছর পার করে দিলাম। অসম্ভব ভাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং আমাদের। সেটে কোনও কারণে রেগে গেছি, হঠাৎ মুড অফ হয়েছে। বাবু কিন্তু সেটা চমৎকার ভাবে হ্যান্ডেল করেছে। ওর চাহিদাটাও আমি বুঝতে পারি। তবে একজন অভিনেতা হিসেবে আমার মনে হয় বাংলায় ফেলুদার কপিরাইটটা এ বার ছেড়ে দেওয়া উচিত।

সৃজিত মুখোপাধ্যায় তো ফেলুদা করতে চান…

কেন করবে না বলুন তো? ফেলুদা হিসেবে সৃজিতের তো অনির্বাণকে খুব পছন্দ। আমি তো শুনেছি অঞ্জন দত্ত ফেলুদা করতে আগ্রহী। আরে দেখাই যাক না অন্য পরিচালকরা ফেলুদাকে কী ভাবে ইন্টারপ্রেট করেন। আজ অবধি যা হয়েছে তার চেয়ে ভাল হতেও পারে, আবার মুখ থুবড়েও পড়তে পারে। কিন্তু ফেলুদার ক্ষেত্র এ বার বাড়ানো উচিত। ফেলুদাকে বেঁধে রাখলে চলবে না।

সংবাদটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

November 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  



© All rights reserved © dailychironton.com
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo