মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা রক্তিম গ্রহ মঙ্গলে ড্রোন হেলিকপ্টার পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠদেশের চারপাশ ঘুরে তথ্য সংগ্রহের কাজ করবে এই ড্রোন কপ্টার। মঙ্গলের বায়ুম-লের জন্য বিশেষ ড্রোন তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত খেলনা ড্রোনের সঙ্গে নাসা এটিকে তুলনা করছে। মঙ্গলের পৃষ্ঠদেশে অনুসন্ধান চালিয়ে ড্রোন কপ্টারগুলো যে তথ্য পাঠাবে, বিজ্ঞানীরা সেগুলো যাচাই করবেন এবং গ্রহটিতে ড্রোনগুলোর গন্তব্য নির্ধারণ করবেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিপেনডেন্ট। নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরিতে ড্রোন হেলিকপ্টারগুলো তৈরি হচ্ছে। তবে এখনও তা প্রাথমিক পর্যায়ে। ড্রোন কপ্টার তৈরির পরিকল্পনায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, এমন একটি হেলিকপ্টার তৈরি করা যা উড্ডয়নক্ষম এবং মঙ্গলের মাটিতে নিরাপদে অবতরণ করতেও সক্ষম। পৃথিবী ও মঙ্গলের বায়ুম-লে ব্যাপক বৈসাদৃশ্য থাকার কারণেই চ্যালেঞ্জটা সাধারণ নয়। বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী, পৃথিবীর ৮ ভাগের ৩ ভাগ মাধ্যাকর্ষণ বল রয়েছে মঙ্গলে। মঙ্গলে তাই হেলিকপ্টার ওড়ানোটা আরও সহজ হবে মনে করলে ভুল হবে। কারণ, পৃথিবীর বায়ুম-লের চেয়ে মঙ্গলের বায়ুম-লের ঘনত্ব ১০০ গুণ কম। হেলিকপ্টারের পাখা ঘোরার ক্ষেত্রে বায়ুম-লের ঘনত্বকে ব্যবহার করে। তাই মঙ্গলে পাঠানো কপ্টারের পাখা অনেক বেশি দ্রুত ঘুরতে হবে কিংবা বড় আকারের রৌটার ব্লেড বা পাখা ব্যবহার করতে হবে। নাসা এরই মধ্যে এ ধরনের হেলিকপ্টারের আদলে তৈরি কিছু প্রোটোটাইপ বা নমুনা-হেলিকপ্টার বিশাল বায়ুশূন্য প্রকোষ্ঠে ওড়ানোর পরীক্ষা করছে। এ ধরনের বায়ুশূন্য প্রকোষ্ঠে বিজ্ঞানীরা বায়ুম-লের ঘনত্ব পরিবর্তন অর্থাৎ কমাতে বা বাড়াতে পারেন। সেখানে বায়ুম-লের ঘনত্ব ১০০ গুণ কমিয়ে মঙ্গল গ্রহের বায়ুম-লও তৈরি করা সম্ভব। পরীক্ষামূলকভাবে, মিনিটে প্রায় ২,৪০০ বার ঘূর্ণন ক্ষমতাসম্পন্ন হেলিকপ্টারের মডেল ডিভাইস তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা, যা হেলিকপ্টারটিকে মঙ্গলের বায়ুম-লে ভাসিয়ে রাখতে সক্ষম। প্রতিদিন ২ থেকে ৩ মিনিট ওড়ার পর অনবোর্ড সোলার প্যানেলে হেলিকপ্টারটি চার্জ হবে। সোলার প্যানেলটি ড্রোন হেলিকপ্টারটিকে উষ্ণ রাখবে এবং ওড়ার জন্য শক্তির যোগান দেবে।
Leave a Reply