গাজীপুরের টঙ্গীর ব্যাংক মাঠ বস্তিতে চাঁদা না দেয়ায় এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পেটে লাথি মেরে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে টঙ্গী মডেল থানার এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে।
গত সোমবার রাত ৩টার দিকে টঙ্গীর ব্যাংকের মাঠ বস্তি এলাকায় এঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত টঙ্গী মডেল থানার এএসআই বিপ্লব হোসেনকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
আহত গৃহবধূ জহুরা বেগম (৩০) টঙ্গীর ব্যাংক মাঠ বস্তি এলাকার রানা মিয়ার স্ত্রী। তাকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে জহুরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে এমন গুজবের জের ধরে টঙ্গী ব্যাংকের মাঠ বস্তির কয়েকশ লোক বিক্ষোভ মিছিল বের করে থানার সামনে এসে জড়ো হয়। পরে পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
জহুরার স্বামী রানা মিয়া ও এলাকাবাসী জানান, সোমবার রাত ৩টার দিকে টঙ্গী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. বিপ্লব হোসেন মাদকের অভিযান চালাতে ব্যাংক মাঠ বস্তি এলাকার জহুরা বেগমের বাসায় হানা দেয়। এসময় তিনি জহুরাকে মাদক ও দেহ ব্যবসায়ী উল্লেখ করে তার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন।
জহুরা পুলিশের ভয়ে ৫ হাজার টাকা তার হাতে তুলে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিপ্লব অন্ত:সত্ত্বা জহুরার তলপেটে উপর্যুপরি লাথি মারেন। এতে জহুরা গুরতর আহত হন। এক পর্যায়ে তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে এলে জহুরার অবস্থার অবনতি হয়। পরে ১০টার দিকে তাকে টঙ্গী আবেদা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহবুব হোসেন জানান, জহুরাকে সোমবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, জহুরা ও তার স্বামী দুইজনই এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।
এ ব্যাপারে টঙ্গী থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জানান, গৃহবধূর পরিবারের দাবি জহুরাকে এএসআই বিপ্লব মারধর করেছে। আর এএসআই বিপ্লব জানান- গৃহবধূ অসুস্থ্য থাকায় তাকে আটক না করে বাসায় রেখে আসা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টঙ্গী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বিপ্লব হোসেন লাথি মারার কথা অস্বীকার করে বলেন, জহুরা একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার স্বামী রানা একজন চোর। তাকে আটকের জন্য গিয়ে জহুরাকে ইয়াবা সেবন করা অবস্থায় পাই। পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তাকে অসুস্থ্যতার কথা জানায়। পরে আমি তাকে চিকিৎসার জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে চলে আসি।
Leave a Reply