ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই এখন পর্যন্ত স্বকীয় অভিনয়শৈলীর মাধ্যমে নিজেকে বেশ দাপটের সঙ্গেই মিডিয়াতে টিকিয়ে রেখেছেন দীপা খন্দকার। একটি কাজ করেই কখনো ক্লান্তি আসে না দীপার। আর সেটা হলো অভিনয়। যতক্ষণ পরিচালকের ‘প্যাকআপ’ শব্দটি কানে না বাজবে ততক্ষণ যন্ত্রের মতো চালিয়ে যাবেন। কখনও বলবেন না ‘আর পারছি না’। একি যন্ত্রমানব নাকি অন্য কিছু? দীপা খন্দকার বলেন, পৃথিবীতে সব মানুষের কিছু না কিছুর প্রতি ভালবাসা থেকেই থাকে। আর সে ভালবাসার ক্ষেত্রে কখনও কোন ক্লান্তি অনুভবও আসে না। ঠিক অভিনয় আমার ভালবাসা। এটা আমাকে যতক্ষণ করতে বলা হবে ততক্ষণই করতে পারব। আর দশজন বাঙালি মেয়ের মতোই স্বামী সংসার ও সন্তান নিয়ে জীবনযাপন করেন দীপা। কিন্তু যখনই শুটিং স্পটের দিকে এগিয়ে যান তখনই তার চেহারা একটু একটু করে পরিবর্তিত হতে থাকে। শুটিং স্পটের দিকে রওনা হওয়া মাত্রই ব্যক্তি দীপা খন্দকারকে ভুলে যান তিনি। শুধু তাই নয়, সেখানে গিয়ে আরও একবার রূপ বদল করেন। যখন মেকাপ রুমে গিয়ে হাজির হন, হারিয়ে ফেলেন নিজেকে। এটা ইচ্ছা করে নয়। অবচেতন মনেই হয়ে যায়। এর অবশ্য কারণও রয়েছে। অভিনয়ের প্রতি যার ধ্যান-জ্ঞান তখন স্বাভাবিকভাবে বাস্তব জীবন থেকে যে কোন শিল্পীই নিজেকে সরিয়ে ফেলেন। ‘কাকতাড়ুয়া’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে অভিনয় শুরু দীপা খন্দকারের। তার অভিনীত বেশ কিছু দর্শকপ্রিয় নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘মেঘে ঢাকা মানুষ’, ‘এবং আমি’, ‘অন্ধকারের ফুল’, ‘ঘর-সংসার’, ‘মহুয়া’, ‘স্বপ্নভোগ, ‘সোসাইটি’, ‘সাক্ষী কুটুম’, ‘অপেক্ষার বৃষ্টি এবং একটি গোল্ডফিশের অপমৃত্যু’, ‘মন তার সঙ্গিনী’, ‘জীবনের এই স্বাদ’, ‘কাঁচের মেয়ে’, ‘পাথরগলা স্রোত’, ‘আলোকনগর’, ‘ধুপখালির ঘটকালি’, ‘ফুঁ’, ‘সুসংবাদ, ‘পলাতক সন্ত্রাসী’, ‘বলি বলি করি তবু বলা হলো না’, ‘নিমগ্নতায় স্রোত’, ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’, ‘সেই তুমি এই তুমি’ ইত্যাদি। আর বর্তমানেও দীপা রয়েছেন একগুচ্ছ ধারাবাহিকের ব্যস্ততা নিয়ে। এর মধ্যে ‘এলেবেলে’, ‘ঘোমটা’, ‘যৌবতী কন্যার মন’, ‘১০০ হাত দূরে থাকুন’, সোনালী মেঘের ভেলা উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও অতিসমপ্রতি রাশেদ রাহার পরিচালনায় ‘পাগলা বাড়ি’ নামে নতুন আরেকটি ধারাবাহিকের শুটিং শুরু করেছেন এ অভিনেত্রী।
খণ্ডের চেয়ে ধারাবাহিকেই ব্যস্ততা বেশি দীপার। বলতে গেলে আপাতত খণ্ড নাটকে তেমন উপস্থিতি নেই। এ প্রসঙ্গে দীপা বলেন, বেশ কিছু ধারাবাহিকের কাজ বর্তমানে আমাকে আটকে দিয়েছে। প্রচার চলতি ছাড়াও সামনে আরও কিছু ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করার কথা রয়েছে। তাই খণ্ড নাটকে কাজ করার সময়টা হয়ে উঠছে না। আমি কথা দিয়ে সেটা রাখার চেষ্টা করি। তাই কাউকে কথা দিলাম, কিন্তু কাজ করতে পারলাম না। সেটা আমার জন্য অনেক বড় লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। তাই একদিক নিয়ে নিয়মিত ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করি। তবে একেবারে যে করছি না তা কিন্তু নয়। কিছুদিন আগেই চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় ‘চোখের জল’ শিরোনামে একটি নাটকে অভিনয় করেছি। এছাড়াও বিভিন্ন বিশেষ দিনে খণ্ড নাটকে অভিনয় করি।
হালে নতুন কিছু অভিনয়শিল্পী এসে যোগ দিয়েছেন। এসব নতুনকে নিয়ে দীপার মূল্যায়ন কি? তিনি বলেন, এখন যারা অভিনয় জগতে এসেছেন তাদের অনেকেই ভাল কাজ করছেন। আবার অনেকে নাটকে কাজ করার পাশাপাশি ফিল্মে অভিনয় করার জন্য তড়িঘড়ি করছেন। কিংবা দ্রুত তারকা খ্যাতির নেশায়ও মেতে উঠেছেন। এটা মোটেও ঠিক নয়। আগে ছোটপর্দায় কাজ শেখা উচিত। রাতারাতি তারকা খ্যাতি পাওয়া যায়। কিন্তু সেটা খুব বেশি দিন স্থায়ী হয় না। একথাটি সবার মানতেই হবে।
Leave a Reply