ডেইলি চিরন্তন রিপোর্ট
ছাতক উপজেলার চাঞ্চল্যকর শিশু ইমন হত্যা ও আওয়ামীলীগ নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার বিস্ফোরক আইনের মামলা সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান মামলা দুটি সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রেরণের আদেশ প্রদান করেন।
আদালতে সূত্রে জানা যায়, বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন ও দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের বাতিরকান্দি গ্রামের সৌদি প্রবাসী জহুর আলীর ছেলে ও লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কারখানার কমিউনিটি বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেনীর ছাত্র ছিল ইমন। ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ তাকে অপহরন করা হয়। পরে মুক্তিপনের দু’লক্ষ টাকা না পেয়ে অপহরনকারীরা শিশু ইমনকে হত্যা করে। ৮ এপ্রিল মোবাইল ট্যাকিংয়ের মাধ্যমে কদমতলী বাসষ্ট্যান্ড থেকে শিশু ইমনের হত্যাকারী ঘাতক ইমাম সুয়েবুর রহমান সুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি, বিষের বোতল ও রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করে। এমনকি বাতিরকান্দি হাওর থেকে ইমনের মাথার খুলি ও হাতের হাড় উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত ইমনের বাবা জহুর আলী বাদী হয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ছাতক থানায় মামলা (নং-৩২) করেন। চলতি বছরের ২১ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি দ্রুতবিচারট্রাইবুনালে প্রেরনের জন্য গেজেট প্রকাশ করে। ফলে সিলেট বিভাগীয বিচার দ্রুত বিচার ট্র্ইাব্যুনালে মামলাটি প্রেরণ করা হয় । ট্রইব্যুনালে আসার পর আদালতের বিচারক মকবুল আহসান কারাগারে থাকা ৪ আসামীর মধ্যে বাচ্চু নামের এক আসামীর জামিন মঞ্জুর করেন। এছাড়া জামিনে থাকা অপর দুই আসামী কাহার ও নুরুল আমিনের জামিন বহাল রাখেন। পলাতক আসামী সালেহ আহমদ ছাড়া ৬ আসামী জামায়াত নেতা সুয়েবুর রহমান সুজন, বাচ্চু, জায়েদ, রফিক, কাহার ও নুরুল আমিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে , সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যাকা-ের ঘটনায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক মামলাটি সিলেট দ্রুত বিচারট্রাইব্যুনাল স্থানান্তর করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ পাওয়ার পুলিশি প্রহরায় মামলার নথি ও যাবতীয় কাগজপত্র সিলেটে পাঠানো হয়। এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের মেয়র আলহাজ জিকে গউছ, হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ১৪ আসামি কারাগারে রয়েছেন। জামিনে রয়েছেন ৮ জন। এছাড়া বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীসহ ১০ জন পলাতক রয়েছেন। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ বিশেষট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারক জেলা জজ আতাবুল্লাহ বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীসহ পলাতক ১০ আসামির মালামাল ক্রোকের আদেশ দেন। ইতোমধ্যে সকল আসামির ক্রোকাদেশ তামিল হওয়ার পর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা শেষে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া, তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ ৫ জন। এ ঘটনায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়। হত্যা মামলাটি সিলেট দ্রুত বিচার আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি এডভোকেট কিশোর কুমার কর জানান, সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার চাঞ্চল্যকর শিশু ইমন হত্যা মামলা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের নি¤œ আদালত পত্রিকা বিজ্ঞপ্তি না দেয়ায় ও এ দুই মামলায় নি¤œ আদালতের কিছু কার্যক্রম বাকি থাকায় তা সম্পন্ন করণের জন্য নি¤œ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে ।
Leave a Reply