জনপ্রিয় অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন। শুরুটা মঞ্চে আর্তনাদ থিয়েটার দিয়ে। এরপর পা রেখেছিলেন টিভি পর্দায়। সেখানে শুরু ‘রঙের মানুষ’ সিরিয়ালেরে অভিনেতা হয়ে। নাটকটিতে বেশ প্রশংসা পান মিলন। এরপর একে একে ‘দয়িতা’, ‘প্রজাপতিকাল’, ‘হাতকুরা’, ‘মধুময়রা’, ‘অতঃপর, ‘শুভাগমন’সহ অসংখ্য দর্শক নন্দিত নাটকে অভিনয় করে নির্মাতাদের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে ওঠেন। বর্তমানে তিনি ছোট পর্দার পাশাপাশি বড় পর্দাতেও খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন। বেশ কিছু ছবিতে সাফল্য পাওয়ায় তাকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন নির্মাতা ও প্রযোজকরা। এখন পর্যন্ত মিলন অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির সংখ্যা ১০টিরও বেশি। হাতে আছে আরো হাফ ডজন ছবির কাজ। আগামী ২৪শে জানুয়ারি থেকে ‘চল যাই’ শিরোনামে একটি নতুন ছবির শুটিং শুরু করবেন এ অভিনেতা। এছাড়া ‘স্বপ্নবাড়ি’র দুটি গান শেষ হলেই জানুয়ারিতে সেটির শুটিং সম্পন্ন করতে পারবেন বলে জানান মিলন। অন্যদিকে তার হাতে এ মুহূর্তে রয়েছে ‘ক্রাইম রোড’, ‘রাত্রীর যাত্রী’, ‘সাদাকালো প্রেম’ সহ আরো কয়েকটি ছবি। চলচ্চিত্রের ব্যস্ততা নিয়ে মিলন বলেন, এখন কয়েকটি ছবি মুক্তির অপেক্ষায় আছে। এছাড়া জানুয়ারিতে নতুন কয়েকটিতে সাইন করবো। আশা করছি ভালো কিছু কাজ নিয়ে দর্শকের কাছে আসবো। চলচ্চিত্রে এরই মধ্যে চার বছর অতিক্রম করেছেন মিলন। এ মাধ্যমটিতে কাজ করে বেশ সাড়াও পাচ্ছেন তিনি। চলচ্চিত্র নিয়ে তার সামনের পরিকল্পনা কি জানতে চাইলে বলেন, ইন্ডাস্ট্রিটা এখন উন্নতির দিকে যাচ্ছে। আমাদের চলচ্চিত্র এখন বিদেশেও মুক্তি পাচ্ছে। এটা দারুণ আনন্দের একটি বিষয়। আমি নিজেকে সে জায়গায় নিয়ে যেতে চাই যেখানে দেশীয় চলচ্চিত্র নিয়ে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি। নিজের সীমানা অতিক্রম করে বিদেশের মাটিতে সুনাম অর্জন করতে চাই। ঢাকাই ছবিতে মিলনের শুরুটা হয়েছিল এন্টি-হিরো হিসেবে। এরপর অবশ্য প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে মেলে ধরেন তিনি। নিজেকে কোন ধরনের চরিত্রের অভিনেতা হিসেবে দেখতে চান ? তিনি বলেন, আমাদের দেশের ফিল্মে তিনটি শব্দ বেশ প্রচলিত-‘নায়ক’, ‘নায়িকা’ ও ‘ভিলেন’। পৃথিবীর কোথাও এ শব্দগুলো প্রচলিত না। নায়ক যে চরিত্রটা করবে সেটা সেন্ট্রাল ক্যারেক্টার। কিন্তু আরো অনেক ধরনের ক্যারেক্টারকে যে সেন্ট্রাল ক্যারেক্টার করা যায় সেই ধারণা আমাদের এখানে নেই। এখানে মূল চরিত্র করা মানে নায়ক হয়ে যাওয়া। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এমন ঘটনা রেয়ার যে, কেউ এন্টিহিরো হিসেবে শুরু করে পরে আবার হিরোর ক্যারেক্টার করেছে এবং তার চাহিদা বেড়েছে। সেই পয়েন্ট অব ভিউ থেকে খেয়াল করি দর্শকরা আমাকে কৃতজ্ঞ করেছেন। তবে যেহেতু এখানে আমি প্রতিষ্ঠিত হতে চাইছি তাই ‘চিত্রনায়ক’ শব্দটা নামের সঙ্গে যোগ করতে চাই। কারণ বাংলাদেশে এই কথাটা প্রচলিত। চলচ্চিত্রের ব্যস্ততার পাশাপাশি টিভি নাটকেও নিয়মিত সময় দিচ্ছেন মিলন। এরই মধ্যে মিনহাজ ইসলামের পরিচালনায় ‘মাইনাসে মাইনাসে প্লাস’ নামের একটি ধারাবাহিকের শুটিং শুরু করেছেন। এছাড়া প্রচার চলতি ‘অলসপুর’ ধারাবাহিকের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে মারুফ মিঠুর ‘বউ বকা দেয়’ ধারাবাহিকটিতেও যোগ দেবেন মিলন। টিভি নাটকে দীর্ঘদিন অভিনয় করছেন। কেমন দেখছেন এ সময়ের কাজ ? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তো কাজ এখন ফিফটি ফিফটি করছি। চলচ্চিত্রে সময় যা দিই তার অর্ধেকটা নাটকে দিই। এর মধ্যেও আমার দৃষ্টিতে যা মনে হয়, চ্যানেল যখন কম ছিল তখন কাজের সংখ্যা কম ছিল। মানও ভাল ছিল। এখন চ্যানেল বেড়েছে। অনেক কাজ হচ্ছে। সে ভিড়ে ভালো নাটকের সংখ্যা এখন কমে গেছে বলেই মনে হয়। সবমিলিয়ে টিভি নাটকে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তবে এটা স্থায়ী হবে না এমনটাও বিশ্বাস করি। কিছুদিন আগেও চলচ্চিত্রের অবস্থা নাজুক ছিল। এখন আবার দর্শক ফিরছেন। তেমন চিত্রটা একদিন টিভি নাটকেও দেখা যাবে বলেই আমার মনে হয়। অভিনয় জীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিজীবনটা বেশ উপভোগ করছেন মিলন। স্ত্রী সন্তান সহ বেশ ভালোভাবেই দিন কাটছে তার ।
Leave a Reply