এ কি দুঃসহ বিয়োগ ব্যথায় ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বেঁচে আছি – আমরা।
সবাই তোমায় ধরে রাখতে চেয়ে ছিল দুহাত জড়িয়ে –
মা , স্ত্রী ,পুত্র, কন্যা ,ভাই, বোন ,বন্ধুবান্ধব ,আত্মীয়স¦জন ।
তুমি বিদায় চেয়েছিলে,
আমরা বলেছিলাম না তোমায় ছাড়বো না, এখনতো তোমার যাবার সময় নয়।
তোমার পানে চেয়ে আছে হাজার লক্ষ মুখ।
তুমি তাদের আশা আকাঙ্খার স্থল।
স্কয়ার হস্পিটালের ১২০১ নং কেবিনে – মা বলেছিলেন – কি বিছানায় পড়ে আছিস্, ওঠ !”
তারিখ টা ১৪ ই ডিসেম্বর ২০১৬ ইংরেজী। শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস।
তুমি হেসেছিলে স্মিতভাবে মায়ের কথায় ।
৭১ এর ১৪ ই ডিসেম্বর হানাদারেরা তাদের সহযোগীদের জাতীর শ্রেষ্ট সন্তানদের প্রাণ কেড়ে
নিয়েছিলো বুলেটে বুলেটে।
মায়ের মনে প্রশ্ন-
“ আজতো স্বাধীন বাংলায় এ কোন হানাদার কেড়ে নিচ্ছে আমার সন্তানকে আমার কোল থেকে ’।
মা স্বপ্ন দেখেন- তার সন্তান ন্যায়ের দন্ড নিয়ে হাজার লক্ষ জনতার ন্যায় বিচার করবে সুপ্রীম কোর্টের
এজলাসে বসে। রায় দিয়ে হাসি ফুটাবে বঞ্চিত নিস্পেষিত বিচার প্রার্থীর মুখে।
শুধু মা-ই নন !এই আশা ছিল সকলের অন্তরে!
হায় বিধাতা ! এ তোমার কেমন বিচার!
তুমি যার হাতে তুলে দিলে বিচারের গুরুভার কঠিন দায় ।
আর সেতো তোমার সেই কঠিন শর্ত
অক্ষরে অক্ষরে পালন করে গেছে।
আশা জাগিয়েছে মানুষের মনে যেন শুষ্ক মরুভূমিতে জলের ফল্গু ধারা ।
কি নিদারুন তুমি!
দায়িত্ব দিয়ে তাকে মহৎ কাজ সম্পূর্ণ করতে দিলে না!
কেড়ে নিলে প্রাণ এক ঝটকায় ।
১৫ ই ডিসেম্বর সব শেষ করে দিলে।
আমরাতো কেউ প্রস্তুত ছিলাম না এমন নিদারুন আঘাতের।
মা ভাই বোন স্ত্রী পুত্র কন্যা আত্মীয়স্বজন বন্ধু বান্ধব আর হাজার লক্ষ বিচার প্রার্থী দেশ জনতা ।
শোকে বিহ্বল হয়ে আছে সবাই ।
এর সাথে প্রকৃতি, পাকপাখালী, এমন কি হিংস্র পশু ও !
যাওয়া আসার খেলা তো চলছে নিরন্তর অনাদি কাল হতে তোমার অমোঘ বিধানে।
কিন্তু সব যাওয়াতো যাওয়া নয় ।
এ বিদায় আমরা সইবো কেমনে ।
ভগবান – তাই প্রতিবাদ জানালাম তোমারই নিষ্ঠুর রায়ের বিরুদ্ধে তোমারই কাছে।
Leave a Reply