রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় এবং দেশ থেকে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় বাঙালী জাতিকে আবারও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস গ্রহণের উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, একাত্তরের শহীদদের কাছে আমাদের অপরিশোধ্য ঋণ রয়েছে। তাই আসুন ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরাম্বিত করার মাধ্যমে আসুন আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া নতুন বছরের প্রথম অধিবেশনে সাংবিধানিক রেওয়াজ অনুযায়ী প্রদত্ত ভাষণে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে থেকে জাতির অগ্রযাত্রার আকাক্সক্ষাকে বাস্তবরূপ দিতে বর্তমান সরকারের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হাঁটছি, সে পথ ধরেই বাংলাদেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে এবং বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশ হিসেবে আপন মহিমায় অধিষ্ঠিত হবে। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে এবং শোষণমুক্ত সমাজ-প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে বাঙালী জাতিকে আবারও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস গ্রহণ করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি প্রায় এক ঘণ্টা ৫ মিনিটের দীর্ঘ ভাষণে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন-সাফল্য ও দেশের অগ্রগতির বিষদ বিবরণ জাতির সামনে তুলে ধরেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের সময় মুহুর্মুহু টেবিল চাপড়িয়ে রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন জানান সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। রাষ্ট্রপতি তাঁর মূল ভাষণের সংক্ষিপ্ত সার তুলে ধরেন এবং বাকি ভাষণ পঠিত বলে গণ্য করার অনুরোধ জানালে স্পীকার তাঁর পুরো ভাষণটি পঠিত বলে গণ্য করা হবে বলে উল্লেখ করেন।
এরআগে সন্ধ্যা ৬টা ৭ মিনিটে রাষ্ট্রপতি সংসদ অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদসহ সব সংসদ সদস্যরা দাঁড়িয়ে তাঁকে সম্মান জানান। এ সময় অর্কেস্ট্রায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। রাষ্ট্রপতি স্পীকারের ডান পার্শে থাকা ডায়াসে দাঁড়িয়েই দীর্ঘ ভাষণ উপস্থাপন করেন। বক্তৃতা শেষে অধিবেশন ত্যাগের সময়ও জাতীয় সঙ্গীতের সুরে রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানানো হয়। রাষ্ট্রপতি প্রস্থানের পর স্পীকার সংসদ অধিবেশন আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, চার জাতীয় নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধে অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘রূপকল্প-২০২১’ এবং দিনবদলের সনদের ভিত্তিতে প্রণীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন এবং এ কার্যক্রমে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ফলে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হবে, এটাই জাতির প্রত্যাশা।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘রূপকল্প-২০২১’, দিনবদলের সনদ ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং বিভিন্ন পরিকল্পনায় গৃহীত কর্মসূচীর যথাযথ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির এ প্রত্যাশা অবশ্যই পূরণ হবে। আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী যে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে সুশাসন সুসংহতকরণ, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ এবং জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা এসব লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হব।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় সংসদ দেশের আপামর জনসাধারণের আশা-আকাক্সক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুদৃঢ়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও আলোকিত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে সরকারী দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিষ্ঠান এই মহান জাতীয় সংসদে সরকারী দল ও বিরোধী দলসহ সকলকে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।
সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আরও বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে আসছে। এ কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি বলেন, বিগত মেয়াদে গৃহীত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার এ লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ফলে দেশে নাশকতামূলক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং জনজীবনে স্বস্তি বিরাজ করছে। সরকারের দক্ষ পরিচালনায় অর্থনীতির সকল সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সামাজিক সূচকসমূহের অগ্রগতিতে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশসমূহের তুলনায় অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান সমুন্নত এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখে ২০১৪ সালে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দশম জাতীয় সংসদ গঠিত হয় এবং বর্তমান সরকারের ওপর দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়। তিনি বলেন, গত মহাজোট সরকারের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার রূপকল্প-২০২১, দিনবদলের সনদ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্য-আয়ের, জ্ঞানভিত্তিক, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে নি¤œমধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এখন জাতির দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে ২০৪১ সালের দিকে বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়ার মানসে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সরকার উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে জাতির আকাক্সক্ষা পূরণে সক্ষম হবে।
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, বর্তমান সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতামুক্তর অভিশাপমুক্ত একটি সুখী, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক, ন্যায়ভিত্তিক, জ্ঞান-নির্ভর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার দারিদ্র্যনিরসন এবং আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণে উন্নয়ন পরিকল্পনার অন্যতম কৌশল হিসেবে গ্রহণ করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে সরকার নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে সম্পূর্ণরূখে সক্ষম হবে।
সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূলে বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশে আইনের শাসন সুসংহত ও সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ ও সুদৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী পলাতক খুনীদের আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার কার্যক্রমের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে আছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করছে এবং বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে। তিনি বলেন, আসেম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বে মানবসভ্যতার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনেও সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে প্রধানমন্ত্রীর সাহসী নেতৃত্ব বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির কথা তুলে ধরে রাষ্ট্র প্রধান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিগত বছরসমূহে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা বজায় রেখেছে, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। সরকারের সুষ্ঠু অর্থনৈতিক-ব্যবস্থাপনা, প্রাজ্ঞ রাজস্বনীতি ও সহায়ক মুদ্রানীতির প্রভাবে মন্দাত্তোর বিশ্ব-অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে চলমান সঙ্কট সত্ত্বেও গত পাঁচ বছরে দেশে গড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। সার্বিকভাবে অনুকূল সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং আর্থ-সামাজিক খাতে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি বাংলাদেশকে মধ্য-আয়ের দেশে উত্তরণে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশের অব্যাহত সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর করেছে। এর ধারাবাহিকতা সামনের দিনগুলোতে দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করবে। তিনি বলেন, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অর্থায়ন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি ‘কমপ্লায়েন্ট কান্ট্রি’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশকে এশীয় অঞ্চলের অন্যতম শক্তিশালী দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
দেশের পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং পুঁজিবাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। পুঁজিবাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যেগুলো বাস্তবায়িত হলে বাজার উন্নয়নে মৌলিক পরিবর্তন সাধিত হবে। তিনি বলেন, গত ছয় মাস যাবত ডিএসই সূচক ৪৫০০ থেকে ৫০০০-এর মধ্যে অবস্থান করছে, যা বাজার স্থিতিশীলতার সাক্ষ্য বহন করে। ২০০১ সালে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজগুলোর ইস্যুকৃত মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ২২৩ কোটি টাকা, যা ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে যথাক্রমে ২৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক সাফল্যের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য ও সুদক্ষ নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ আজ সম্মানজনক ও উচ্চ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্যে এখন সর্বজনবিদিত। স্বাধীন ও আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন কূটনীতি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধসমৃদ্ধ বলিষ্ঠ পররাষ্ট্রনীতির অনুসরণে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জতিক পর্যায়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিবিড়করণসহ দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখছে। দারিদ্র্যদূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ নির্মূলে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ফলে বিশ্বাঙ্গনে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
পদ্মা সেতুর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার দেশের সকল অঞ্চলে সুষ্ঠু এবং সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সড়ক অবকাঠামো পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন কাজ এগিয়ে চলেছে এবং ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ এ সেতু যানবাহন পারাপারের জন্য খুলে দেয়া সম্ভব হবে। এ সেতু এশিয়ান হাইওয়েতে অবস্থিত হওয়ায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সড়ক নেটওয়ার্কসহ দক্ষিণ-এশীয় অঞ্চলে অবস্থিত দেশগুলোর মধ্যে যাতায়াত ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। জাতীয় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি এবং প্রতিবছর দশমিক ৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্যনিরসনের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
Leave a Reply