ডেইলি চিরন্তন:“স্মোকিং ইজ ইনজুরিয়াস টু হেল্থ”। তো! একথা নতুন কী যে ধূমপান না ছাড়লে মরতে হবে। ঠিক বলেছেন, এর মধ্যে কোনও নতুন কথা নেই। কিন্তু মৃত্যুটা যে কতটা ভয়ানক হতে পারে তা একটি পরীক্ষায় জানা গেছে। এতদিন সবাই জানতেন যে ধূমপান করলে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। কিন্তু সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ধূমপানের অভ্যাস থাকলে হতে পারে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, আর তা থেকে আশঙ্কা বাড়ে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের।
গবেষণা কী বলছে:
দীর্ঘ কয়েক বছরে ধরে সংগ্রহ করা ডেটা বিশ্লেষণ করার সময় চিকৎসকেরা লক্ষ করেছিলেন রোজ একটা করেও সিগারেট খেলেও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আর একথা তো কারও অজানা নেই যে রক্তচাপ বাড়লে হার্টের উপর মারাত্মক চাপ পরে। ফলে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, এমন পরিস্থিতিতে মস্তিষ্কেও রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক ছন্দে হতে পারে না। ফলে স্ট্রোকের সম্ভাবনা থেকে যায়। প্রসঙ্গত, ২৫-৫০ বছর বয়সি, প্রায় ১০০০ জন পুরুষের উপর এই সমীক্ষাটি চলাকালীন দেখা গেছে যারা দিনে ১-১০ টা সিগারেট খেয়ে থাকেন, তাদের শরীরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ধমনীর উপর রক্তের চাপ বাড়তে থাকে। ফলে এক সময় গিয়ে ধমনীর দেওয়ালে রক্তচাপ এতটাই বেড়ে যায় যে চিকিৎসা শুরু না করলে তৎক্ষণাৎ কিছু অঘটন ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
রক্তচাপের সঙ্গে বাড়তে থাকে স্ট্রেসও:
সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে সাধারণ মানুষদের তুলনায় ধূমপায়ীদের মানসিক চাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রায় ১৭৮ শতাংশ বেশি থাকে। সেই সঙ্গে ঘুম ঠিক মতো না হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, ওজন বৃদ্ধি এবং মানসিক শান্তি বিগ্নিত হওয়ার মতে সমস্যাও হয়ে থাকে। ধূমপায়ীরা যে শুধুমাত্র ক্যান্সার আক্রান্ত হন তা নয়, সিগারেটের সঙ্গ না ছাড়লে আরও নানাভাবে মৃত্যুকাল ঘনিয়ে আসতে পারে।
ছাড়তে তোমাকে হবেই!
মৃত্যুমুখ থেকে বেরিয়ে আসতে ধূমপান ছাড়তেই হবে। এছাড়া আর কোনও উপায় নেই। কিন্তু সমীক্ষা বলছে এমনটা আদৌ করা কারও পক্ষে সম্ভব কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কারণ একাধিক কেসস্টাডি অনুসারে ধূমপায়ীদের মধ্যে প্রায় ৭৪ শতাংশই সিগারেট খাওয়া ছাড়তে পারেন না। শুধু তাই নয়, ধূমপানের কারণে অসুস্থ হয়ে পরার পরেও প্রায় ৮৫ শতাংশের পক্ষে স্মোকিং থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয় না। ফলে যা হওয়ার তাই হয়! জীবনের পরিধি কমতে থাকে, বাড়তে থাকে মৃত্যুর সম্ভাবনা।
এখানেই শেষ নয়:
সবথেকে ভয়ের বিষয় কী জানেন? ধূমপান ক্ষতিকারক এমনটা জানার পরেও আমাদের দেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বে ধূমপানের গড় বয়স কমতে কমতে ২১ এসে দাঁড়িয়েছে। এত কম বয়সে স্মোকিং শুরু করার কারণে ৫০ ছুঁতে না ছুঁতেই জীবন মৃত্যুর দোরগোড়ায় এসে দাঁড়াচ্ছে। ফলে সামাজিক ভাঙন তো দেখা দিচ্ছেই, সেই সঙ্গে দেশের অর্থনীতির উপরও মারাত্মক চাপ পরছে।
Leave a Reply