রাজশাহীর বাঘায় বনভোজনের চাঁদা না পেয়ে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করেছেন এক শিক্ষক। শনিবার দুপুরে বাঘা উপজেলার চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা প্রধান শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়েছে। এর পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ থানা পুলিশ গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে রাজশাহীর বাঘা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান জানান, উপজেলার চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে ২৯ মার্চ বনভোজনের আয়োজন করা হয়। প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ১০০ টাকা চাঁদা নির্ধারণ করেন। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এ চাঁদা তোলার জন্য প্রধান শিক্ষক সহকারি শিক্ষক মোহাম্মদ আলীকে দায়িত্ব দেন।
এদিকে, বিদ্যালয় চত্বরে বনভোজন করতে দ্বিমত পোষণ করে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী চাঁদা দেবে না বলে জানালে শিক্ষক মোহাম্মদ আলী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষক মোহাম্মদ আলী ওই বিদ্যালয়ের প্রায় ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে পেটান।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে অবিভাবকসহ স্থানীয় লোকজন ওই শিক্ষককে ধাওয়া করলে তিনি অফিস কক্ষে খিল মেরে প্রাণে রক্ষা পান। পরে বিক্ষিপ্ত জনতা প্রধান শিক্ষককে মারপিট করে আহত করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে।
ঘটনার সময় বিক্ষুব্ধ জনতা শিক্ষক মোহাম্মদ আলীর মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ থানা পুলিশ গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল ফজল জানান, যেভাবে শিক্ষার্থীদের পেটানো হয়েছে সেটা খুব দুঃখজনক। তিনি নিজেই মারপিটের সঙ্গে জড়িত শিক্ষক মোহাম্মদ আলীকে চাকুরিচ্যুত করাসহ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দাবি জানিয়েছেন।
বাঘা থানার ওসি আমিনুর রহমান জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আলী চাকরি থেকে অব্যাহতিপত্র লিখে দেয়ার পর সেটি স্কুল মাঠে মাইকে জনতার উদ্দেশ্যে করে জানানো হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষককে আটকও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাদল চন্দ্র হালদার জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply