আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশের বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল তাইওয়ানের প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এইচটিসি। বাংলাদেশে এইচটিসির পরিবেশক হিসেবে কাজ করবে নেক্সট৯। এ প্রতিষ্ঠানটিও বাংলাদেশে প্রথম যাত্রা শুরু করল। আগামী সপ্তাহ থেকে দেশের বাজারে ডিলারের মাধ্যমে ফোন বিক্রি শুরু করবে এইচটিসি।
আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়ার আগে বাংলাদেশের বাজারে যত এইচটিসি ফোন বিক্রি হয়েছে তা বিভিন্ন লাগেজ পার্টির আনা অবৈধ ফোন বলে দাবি করেছে এইচটিসি কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশের উঠতি স্মার্টফোনের বাজার দেখে এখানে ১০ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা দামের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের স্মার্টফোন বিক্রি করার পরিকল্পনা করছে এইচটিসি। আজ একান্ত সাক্ষাৎকারে এইচটিসি দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিপণন বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক মানু শেঠ এ কথা বলেন।
বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এইচটিসি। এতে উপস্থিত ছিলেন এইচটিসির দক্ষিণ এশিয়ার বিপণন বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক মানু শেঠ, বিপনন পরিচালক রিঙ্গিত নায়ার, নেক্সট ৯ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রেম চাঁদ প্রমুখ।
এইচটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের সময় তাঁরা বাংলাদেশের বাজারে এইচটিসি ওয়ান এম ৮ আই, ডিজায়ার সিরিজের বিভিন্ন মডেলের ফোন বিক্রি করবে।
মানু শেঠ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসেছি। বাংলাদেশের বাজার দারুণ ও দ্রুত বর্ধনশীল। এখানে ব্র্যান্ড হিসেবে মানুষের কাছে পৌঁছানোর বড় ধরনের সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়েছে। এ দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে কাজ করবে এইচটিসি। বাংলাদেশের বাজার যেভাবে বাড়ছে এখনই এইচটিসির জন্য এখানে আসা উপযুক্ত সময় বলে মনে হয়েছে। যদি এখানে ব্যবসা ভালো হয় তবে এইচটিসির ব্র্যান্ড শপ, সার্ভিস সেন্টারসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে। তবে এখনই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। বাংলাদেশে আপাতত ডিলারশিপ বা বিভিন্ন অপারেটরের সঙ্গে বান্ডেল অফার দিয়ে এইচটিসির ফোন বিক্রি হবে।’
নেক্সট ৯ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রেম চাঁদ বলেন, বাংলাদেশের গ্রাহকদের কথা মাথার রেখে উন্নত সুবিধার বিভিন্ন মডেলের এইচটিসি ফোন বাজারে ছাড়া হবে। ফোন বেছে নেওয়ার জন্য গ্রাহকদের কাছে সুযোগ থাকবে। এ ছাড়াও ওয়ারেন্টিসহ সব দিক থেকেই উন্নত সেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজ করবে এইচটিসি।
প্রেম চাঁদ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বাজারে আমাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী আমরাই। আমরা যে উন্নত ফিচার যেমন—নকশা, ক্যামেরা, বুম সাউন্ড প্রভৃতি ফোনের সঙ্গে দিচ্ছি তা অনন্য। বাংলাদেশের ক্রেতারা সাধারণত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার, ভিডিও, মিউজিক, কনটেন্ট দেখা প্রভৃতি কাজে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। এ ছাড়াও স্কাইপের মতো সফটওয়্যার বা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেও ফোন ব্যবহার করেন। বাংলাদেশের ফিচার ফোন ব্যবহারকারীরা ধীরে ধীরে স্মার্টফোনে চলে আসবেন। তাদের জন্যই ফোন বাজারে ছাড়ছে এইচটিসি।’
রিঙ্গিত নায়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ডিজাইন, বিল্ট কোয়ালিটি। আমরা মানের সঙ্গে আপস করি না। বাংলাদেশের মানুষ এটা পছন্দ করবেন।’
বাংলাদেশের বাজারে অবৈধ ফোন বিক্রি প্রসঙ্গে এইচটিসির কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশের বাজারে অনেকদিন ধরেই গ্রে মার্কেট, লাগেজ পার্টি বা অবৈধ ফোনের বাজার রয়েছে। এ ধরনের অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করতে সরকারকে লবিং করেছি আমরা। ভবিষ্যতেও এ ধরনের লবিং অব্যাহত থাকবে।
প্রেম চাঁদ বলেন, ‘উঠতি বাজারে প্রযুক্তি ভোক্তারা সবসময় বিকল্প ব্র্যান্ডের সন্ধানে থাকেন। তাদের চাহিদা পণ্যের নিশ্চয়তা। নেক্সট ৯ এর প্রচেষ্টা থাকবে ক্রেতাদের বিকল্প সেবা খুঁজে দেওয়া। এ দেশে স্মার্টফোনের বাজার বাড়াতে আমরা কাজ করছি। বর্তমানে মোবাইল ফোন সাবস্ক্রিপশনের হিসেবে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে। এ দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহারও বাড়ছে। এ দেশে স্মার্টফোনের বিকাশ ঊর্ধ্বমুখী।। আমরা এইচটিসিএর সঙ্গে এ দেশের স্মার্টফোনের বাজার বাড়াতে কাজ করছি। ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে বিভিন্ন মডেলের উন্নত ফিচারের ফোন আনা হবে।’
Leave a Reply