কলকাতা হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে মুর্শিদাবাদের নবাবের স্বীকৃতি পেলেন নবাব মীর জাফরের বংশধর সৈয়দ মহম্মদ আব্বাস আলী মির্জা। যদিও ততদিনে পেরিয়ে গেছে পৌনে তিনশ’ বছর।
দুই দশক ধরে চলা এ সংক্রান্ত একটি মামলা মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়ে আব্বাস আলীর পক্ষে রায় দেন আদালত।
এতে পদবির পাশাপাশি তিনি নবাব পরিবারের বিপুল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিরও উত্তরাধিকারী হলেন। অবশ্য নবাবি সম্পত্তির অধিকাংশই হয় সরকারিভাবে অধিগৃহীত, নয়তো বেদখল হয়ে আছে।
এর আগে একটি মামলায় ভারতের সর্বোচ্চ আদালত আব্বাস আলীকে নবাব বলে রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টে এ মামলাটি থাকায় তার আইনি স্বীকৃতি এতদিন আটকে ছিল।
১৯৬৯ সালে কলকাতায় মুর্শিদাবাদের শেষ নবাব ওয়াসিফ আলী শাহ মির্জার মৃত্যুর পর তার দুই ভাই ফতেয়াব আলী মির্জা এবং কাজিম আলী মির্জার মধ্যে উত্তরাধিকার নিয়ে মামলা হয়। এক ইহুদি নারীকে বিয়ে করে নবাবি হারান ওয়াসিফের পুত্র। ১৯৯৬ সালে ফতেয়াবের মৃত্যুর পর সাজিদ আলী মির্জা নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ওয়াসিফ আলীর পুত্র দাবি করেন। এ নিয়ে মামলা শুরু হয় ওয়াসিফ আলীর নাতি আব্বাস আলী মির্জা এবং সাজিদ আলীর মধ্যে। আব্বাসের বাবা সৈয়দ সাদেক আলী মির্জা ওয়াসিফের পুত্র। মামলাটি কলকাতা হাইকোর্ট থেকে চলে যায় সুপ্রিম কোর্টে। ২০০৫ সালে সাজিদ আলীর মৃত্যুর পর মামলা চালান তার স্ত্রী আফসানা মির্জা।
২০১৪ সালে আব্বাস আলীর পক্ষে রায় দিয়ে মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে পাঠান সুপ্রিম কোর্ট। সাজিদ আলীর জন্মের যে প্রমাণ দাখিল করা হয়েছিল, তাতে তার বাবার নাম ডা. কে বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মায়ের নাম সোগলা বিবি। এ সময় আব্বাস আলীর আইনজীবী দীপক সিং আদালতে আবেদন করেন, এক ব্যক্তির বাবার সঠিক নাম কী সেটা তার মায়ের পক্ষেই জানা সম্ভব, স্ত্রীর পক্ষে নয়। এ পর্যায়ে আদালতের পরামর্শ অনুযায়ী আফসানা মির্জা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানান। মামলা খারিজ করে দিয়ে আব্বাস আলী মির্জাকে মুর্শিদাবাদের নবাব ঘোষণা করেন আদালত।
Leave a Reply